অপরাধজাতীয়

কপিরাইট অফিস দূর্নীতির আখড়া দুই কর্মকর্তার সম্পদের পাহাড়

ডেস্ক রিপোর্টঃ কপিরাইট অফিসের বেশির ভাগ কর্মকতারা দূর্নীতির সাথে জড়িত। এমন কিছু দূর্নীতিগ্রস্হ কর্মকর্তার কারনে প্রকৃত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। সাথে সাথে দুর্নামের ভাগিদার হচ্ছে সরকার। দূর্নীতি করে কেউ কেউ আবার আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। নামে বেনামে মালিক হয়েছেন অঢেল সম্পত্তির।

কপিরাইট অফিসের দূর্নীতিতে বারবার যেই কর্মকর্তাদের নাম সবার দৃষ্টিগোচর হয়েছে তারা হলেন কপিরাইট অফিসের প্রধান সহকারী শাহজাহান ভূইয়া এবং সহকারী প্রোগামার আব্দুল গাফফার। মোঃ শাহজাহান ভূইয়া মাত্র ৩০ হাজার টাকা বেতনের চাকরি করেও কয়েক বছরের ব্যবধানে মালিক হয়েছেন অঢেল সম্পত্তির। রাজধানীর খিলগাঁও কিনেছেন কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট। রয়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের সঞ্চয়পত্র। একই ভাবে অঢেল সম্পত্তির মালিক আরেক দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আব্দুল গাফফার। রাজধানীতে রয়েছে তিনতলা বাড়িসহ বিপুল সম্পত্তি। অভিযোগ রয়েছে তাদের দুইজনের মদদেই চলে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস। সম্প্রতি তাদের দুইজনের বিরুদ্ধে সচিব বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন দু’ব্যক্তি, অভিযোগে কপিরাইট অফিসের প্রধান সহকারী শাহজাহান ভূইয়া ও সহকারী প্রোগামার আব্দুল গাফফারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্তের আবেদন করেন তারা।

আবেদনের কপি এই প্রতিবেদকের হাতে আসলে শুরু হয় ছায়া অনুসন্ধান এবং বেরিয়ে আসে তাদের দূর্নীতির চাঞ্চল্যকর তথ্য। অনুসন্ধানে জানা যায়, দৈনিক মাত্র ১২০ টাকা বেতনে পিয়নের পদে যোগ দেন আব্দুল গাফফার। ২০১১ সালে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি স্হায়ী হলে কপাল খুলে যায় আব্দুল গাফফারের। নিয়োগ ও টেন্ডার বানিজ্য এবং অফিসে আসা সেবা গ্রহিতার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে সাভারে বাড়ি সহ অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। অদক্ষ একজন কর্মচারী হয়েও আইটি বিষয় এ কোন দক্ষতা না থাকা সত্ত্বেও তিনি সহকারী প্রোগ্রামার পদে পদোন্নতি পাওয়ায় কপিরাইট অফিস আরো নিম্নমুখী হচ্ছে। কারণ কপিরাইট অফিস আইটি নির্ভর অফিস অথচ তিনি ইসলামের ইতিহাস এর ছাত্র। তিনি৷ বর্তমানে অবৈধভাবে সফটওয়্যার ও ওয়েবসাইট পরীক্ষা নিরীক্ষার দায়িত্ব পালন করেন। এতে করে প্রকৃত সেবাগ্রহীতা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তার পদোন্নতির পর তার অযোগ্যতার কারণে বিগতবছরের তুলনায় কপিরাইট অফিসের আবেদনের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ হলো টাকার বিনিময়ে তিনি কয়েকটি লেভেল কোম্পানির এজেন্ট হয়ে সেবগ্রহীতাদের ধরাশয়ী করে এই কোম্পানি গুলো কে সনদ দিয়ে থাকেন।

ভুক্তভোগীরা বলছেন এই কারনে মারাত্মক ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রযোজকরা। আরেক অভিযুক্ত শাহজাহান ভূইয়ার বিরুদ্ধে শুধু সনদ বানিজ্য নয়, বরং অভিযোগ উঠেছে তিনি কপিরাইট অফিসের যন্ত্রাংশ ক্রয় করার লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে ঢাকায় ফ্ল্যাট ও অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। এ বিষয়ে কপি রাইট অফিসের হিসাবরক্ষক মো: নূরুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালে ১০ টি মাউসের দাম ৬০ হাজার টাকা দেখানোর পর বিষয়টি নজরে আসে কপিরাইট অফিসের। সেই সময়ের রেজিষ্টার জাফর রাজা চৌধুরী তাকে শোকজ করে এবং বাড়তি টাকা ফেরত দিতে অদ্যবতি শাজাহান টাকা ফেরত দেয় নি। এইভাবেই বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস তাদের নিয়ন্ত্রণে চলছে দীর্ঘ বছর। কোন এক অদৃশ্য কারণে বারবার খবরের শিরোনাম হলেও তারা তাদের অপকর্ম করে যাচ্ছেন দিনের পর দিন।

এই ব্যাপারে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করলেও উনার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আর অভিযুক্ত শাহজাহান ভূইয়া ও আবদুল গাফফারের মোবাইন ফোনে একাধিক বার কল দিলেও তারা ফোন রিসিভ করেন নি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close