ঢাকা

আইবিসিসিআই ও বিএএনের মধ্যে বাণিজ্যিক বৈঠক অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (IBCCI) এবং বিজনেস এসোসিয়েশন অফ নাগাস (BAN) এর ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য বৈঠক অনুষ্ঠিত।

গতকাল সোমবার (৮ মে) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। গেস্ট অফ অনার ছিলেন ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা।

আইবিসিসি এর প্রেসিডেন্ট আব্দুল মাতলুব আহমাদের আমন্ত্রণে সফররত বিজনেস এসোসিয়েশন অফ নাগাস (BAN) এর প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট মংকুম জামির।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ বলেন, আমাদের পরীক্ষিত প্রতিবেশী ভারত, অনেক বড় উন্নয়ন সহযোগী। পারস্পরিক বাণিজ্যিক সম্পর্কে এগিয়ে নিতে আমরা রেলপথ, আকাশপথ, নদীপথ এবং স্থলপথের মাধ্যমে সবধরনের সহযোগিতাকে উন্মুক্ত করেছি। যেকোনো ধরনের বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা দূর করার ক্ষেত্রে শিল্প মন্ত্রনালয় খুবই আন্তরিক।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আমরা সবধরনের সহযোগিতা করছি। বিশেষ করে আমাদের প্রতিবেশী দেশের জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের সুযোগ প্রদান করছি। নাগাল্যান্ডের প্রতিনিধি দলকে বলবো আমাদের এখানে বিনিয়োগের প্রচুর খাত রয়েছে। আমাদের এখানের অনেকগুলো ইকোনমিক জোন রয়েছে, আপনারা সেখানে ইনভেস্ট করতে পারেন।

এ সময় ইন্ডিয়ান হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা বলেন, ভারতের নর্থ ইস্ট অঞ্চলের সাথে বাংলাদেশের বানিজ্যকে আমরা সবসময়ই অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন অংশীদার। বৈশ্বিক উন্নয়ন সহযোগিতার প্রায় এক চতুর্থাংশই বাংলাদেশের সাথে হয়ে থাকে। ভারত এবং বাংলাদেশের পারস্পরিক সম্পর্কের যে সাম্প্রতিক যে উন্নয়ন তা দেশের অর্থনীতিকেই শক্তিশালী করছে। দুদেশের বাণিজ্যিকে জোড়দার করার জন্য ইতোমধ্যে আমরা ৩৬ টি স্থলবন্দর চালু করেছি। যার মধ্যে পাঁচটি ছোট সমন্বিত ডিপো রয়েছে,এর মধ্যে সর্বশেষটি হচ্ছে মেঘালয়ের ডাউকি বন্দর। এটি নাগাল্যান্ড সহজেই ব্যবহার করতে পারছে৷ তাই আমরা বলতে পারি নর্থ ইস্ট অঞ্চলের সাথে কানেক্টিভিটি আগের চেয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ও ভারতের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে৷ পারস্পরিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আমাদের নর্থ ইস্ট রিজিওনের জন্য একটি বড় অংশীদার হতে পারে। পাশাপাশি দুদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে দুদেশই পরস্পরের জন্য গেটওয়ে হিসেবে কাজ করতে পারে। গত দশ বছরে বাংলাদেশ ও ভারতের যে চমৎকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে তা কানেক্টিভটির বিষয়টিকে আরও জোরালো করে।

বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি”র প্রেসিডেন্ট আব্দুল মাতলুব আহমাদ বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য দুই দেশের সরকারই সবসময় সচেষ্ট। এখনকার সময়ে দুটি দেশের সম্পর্ক বলতে শুধু মিটিং করাকে বোঝায় না,সেখানে পারস্পরিক ইনভেস্টমেন্ট থাকতে হয়। আবার শুধু বিনিয়োগ না, সাংস্কৃতিক বিনিময়ও থাকতে হয় এবং পারস্পরিক সহযোগিতার আদান প্রদান থাকতে হয়। আমাদের সাম্প্রতিক নাগাল্যান্ড সফরে আমরা দুই অঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিপুল সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছি। বিশেষ করে নতুন যে আইডিয়া আমরা পেয়েছি, যেখানে জাপান ভারতকে প্রস্তাব দিয়েছে মাতারবাড়ি পোর্ট ব্যবহার করে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর জন্য পণ্য সরবরাহ করা সেটা খুবই চমৎকার। এছাড়া দক্ষিণ ত্রিপুরা থেকে চট্টগ্রামবন্দর পর্যন্ত রেলওয়ে ব্যবস্থার সম্প্রসারণ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সফররত প্রতিনিধি দলের সাথে আমরা এটা নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা করেছি যে কিভাবে নাগাল্যান্ড বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারে এবং এইসাথে বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য নাগাল্যান্ডে কি কি সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এরই মধ্যে নাগাল্যান্ডের বাংলাদেশের ৩৪ টি এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। যদি এগুলো ১০% বাস্তবায়িত হয়, তাহলেও আমরা বলতে পারি যে, দুটি অঞ্চলের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে।

বিজনেস এসোসিয়েশন অফ নাগাস (BAN) এর প্রেসিডেন্ট মংকুম জামির বলেন, বাংলাদেশের সাথে নর্থ ইস্ট প্রায় ৮০০ কিমি বর্ডার শেয়ার করছে। সামগ্রিক ভারত বাংলাদেশে বেশি রপ্তানি করলেও, ভারতের নর্থ ইস্ট অঞ্চলে বাংলাদেশ রপ্তানি করে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকার পণ্য। যেখানে নর্থ ইস্ট জোন বাংলাদেশে রপ্তানি করে ২০০ কোটি টাকা। তাই বাংলাদেশের জন্য নাগাল্যান্ডে বাণিজ্যের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।

নাগাল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের আইটি এবং আইটি সম্পর্কিত সেবা, ব্যাম্বো পাল্প ম্যানুফেকচারিং, স্কিল ডেভেলপমেন্ট, সিভিল অ্যাভিয়েশন, রেলওয়ে, স্টোন, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, ট্যুরিজম, কফি, টেক্সটাইল গার্মেন্টস ম্যানুফেকচারিং, ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট, গার্মেন্টস, সিমেন্ট প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

ডিআই/এসকে

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close