
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি, চলিত দায়িত্ব) এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ থাকার পরেও দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ফলে নানা প্রকল্পের অগ্রগতি হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে অধিদপ্তর।
তিনি সক্ষমতা প্রকল্পের পিডি থাকাকালীন ২০ কোটি টাকার ক্রয় কাজে ৫ কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন বলে দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত একটি অভিযোগ থেকে জানা য়ায়। পরবর্তীতে তিনি বিষয়টি জানতে পেরে বিপুল পরিমান অর্থ খরচ করে দালিলিক প্রমাণগুলো সরিয়ে ফেলেন বলে অফিস সূত্রে জানা যায়।
সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সম-বিধি-১/ এস-১১/৯২-৩০(১৫০) স্মারক মতে, সরকারি সার্কুলার অনুযায়ী তিনি ২ মাসের অধিক চলতি দায়িত্বে থাকতে পারেন না। অথচ তিনি প্রায় ১০ মাস যাবত চলতি দায়িত্বে বহাল রয়েছেন।
দুদকের দাখিলকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অধিদপ্তরের সক্ষমতা জোরদারকরণ প্রকল্পের সাবেক পিডি ও ডিজি (চলতি দায়িত্ব) ডা. এমদাদুল হক তালুকদার একজন অযোগ্য, অদক্ষ ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত। সক্ষমতা প্রকল্পে ২ বছরের অধিক সময় পিডির দায়িত্ব পালন করলেও অযোগ্যতা ও অদক্ষতার কারণে প্রকল্পের তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। এটি একটি পকেট প্রকল্প হিসেবে পরিচিত লাভ করে। কালো তালিকাভুক্ত ঠিকাদারের নিকট থেকে নি¤œমানের আসবাবপত্র সরবরাহ ও ডিপিপি বর্হিভ‚ত মালামাল নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও প্রয়োজন ছাড়াই ৫টি ক্যাটাগরিতে ২০ কোটি ৭৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার দরপত্রের কার্যাদেশ দিয়ে এবং অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের অবকাঠামো উন্নয়নের প্রকল্প হলেও কোনো প্রকার অবকাঠামো উন্নয়ন ছাড়াই মালামাল ক্রয় করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করেন । এছাড়াও প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের চলমান বিভিন্ন প্রকল্প থেকে তিনি অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এমদাদুল হকের স্ত্রী মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে কর্মরত থাকাকালীন খোদ কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও টিএ বিল আত্মসাত করে বিতর্কিত হয়েছেন। মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণী সম্পদ-১ অধিশাখার যুগ্ম সচিব শাহীনা ফেরদৌসীর স্বাক্ষরিত দূর্নীতি সংক্রান্ত তথ্য প্রদানের পত্র মতে, প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের ০৩/০৯/২০২৩ ইং তারিখের ৩,০১,০০০০,১০১,১২,৮৭৮,১৯-২০৩৬ নং স্মারকের পরিপ্রেক্ষিতে মহাপরিচালক গ্রেড-১ পদে পদন্নোতি প্রস্তাব বিবেচনার নিমিত্তে বিসিএস ক্যাডারের সংযুক্ত তালিকায় বর্ণিত ৫ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দূর্নীতি সংক্রান্ত মামলা চলমান ও তদান্তাধীন আছে কিনা তার তথ্য প্রদানের জন্য অনুরোধের পত্র নিয়েও অধিদপ্তরের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের অককাঠামো উন্নয়ন বিষয়ক প্র্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক থাকাকালীন সময়ে সিংহভাগ অর্থ লুটপাট করে পকেট প্রকল্প বানিয়ে কোটি টাকার বিনিময়ে ডিজির পদ বাগিয়ে নিয়ে বিতর্কিত হয়েছেন। তার নানা অনিয়মের কারণে আইন পরিপন্থিভাবে তাকে চলিত দায়িত্বেই রাখা হয়েছে নিয়মিত করা হচ্ছে না বলে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ।
ডিজির বিরুদ্ধে দুদকে আনিত অভিযোগ এবং সরকারি নিয়ম বহির্ভূত ১০ মাস ডিজি পদে চলতি দায়িত্বে বহাল থাকার বিষয়টি তদন্ত করে আগে ব্যবস্থা নিতে হবে। তারপর পদোন্নতির মিশন। এব্যাপারে অধিদপ্তরের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দাবি দুদক কর্তৃক অভিযোগ তদন্ত দ্রæত প্রয়োজন।
এ বিষয়ে মহাপরিচালকের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।