জাতীয়ঢাকারাজনীতি

১৪ অক্টোবর মহাসমাবেশের ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে ---আবদুল বাছিত আজাদ

এমদাদুল্লাহ্, স্টাফ রিপোর্টার: এই সরকার সর্বক্ষেত্রে ব্যার্থ। স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থাপনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষ হাসপাতালে জায়গা পাচ্ছে না। শিক্ষকগণ অনেকদিন রাজপথে, তাদের ফেরানোর কোনো উদ্যোগ নাই। আলেম-উলামাসহ অসংখ্য রাজনৈতিক নেতাকর্মী কারাবন্দি, তাদের মুক্তি দিচ্ছে না। যারা মুক্তি পেয়েছেন প্রতি মাসে কোর্টে হাজিরা দিতে গিয়ে তাদের বিড়ম্বনা ও হয়রানীর শেষ নেই। এভাবে মানুষের অধিকার খর্ব করে সরকার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করছে। জাতি এ থেকে মুক্তি চায়। খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত আমীর মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ রাজধানীতে দলের ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

দল নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনসহ চলমান আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে খেলাফত মজলিস ঘোষিত ৮ দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে শনিবার (২৯ জুলাই) সকাল ১০টায় রাজধানীর পল্টন কালভার্ট রোডে অনুষ্ঠিত দলের ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ বলেন, এই সরকার ভোট চুরি করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে আছে। তার ক্ষমতা থাকার যেমন আর বৈধতা নেই, তেমনি ক্ষমতায় থেকে আগামী জাতীয় নির্বাচন করারও অধিকার নেই। অবিলম্বে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দিতে হবে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে।

সমাবেশ থেকে দাবী আদায়ের লক্ষ্যে আগামী ১৪ আক্টোবর রাজধানীতে খেলাফত মজলিসের মহাসমাবেশের তারিখ ঘোষণা করা হয়।

সমাবেশের প্রধান বক্তা সংগঠনের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, সরকার বিরোধী দলগুলোর কর্মসূচিতে একই স্থানে পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছেন। এতে সংঘাত বাড়াবে। সংঘাত করে আপনাদেরও লাভ নেই, আমাদেরও নেই। জাতি ও দেশেরও কোন লাভ নেই। এতে করে দেশ ধ্বংস হবে, অকার্যকর হবে। আপনারা ৯৬ সালে এই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার জন্য আন্দোলন করেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতার জোরে আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করে আপনারাই সংকট সৃষ্টি করেছেন। অথচ রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল আরো কয়েকটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার অধীনে করা দরকার। কিন্তু আপনারা চান নাই। শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ আপনাদের দল রূদ্ধ করে দিয়েছে। সেখান থেকেই সংকট শুরু হয়েছে। তাই এর সমাধান আপনাদেরকেই করতে হবে তত্ত্বাবধায়ক অথবা দল নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে এনে। এর কোনো বিকল্প নেই। খেলাফত মজলিসের দাবি হচ্ছে নির্বাচনের ৩মাস আগে সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। সেই নির্বাচনে আপনারা জিতলে আমাদের কোনো আপত্তি নাই। ড. কাদের আরো বলেন, জনগণের প্রতি শ্রদ্ধা থাকলে জনগণের দাবি মেনে নিন। কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার প্রয়োজন নাই। যদি বাঁচতে চান, শান্তি চান, নিরাপত্তা চান, দেশের মানুষকে বাঁচাতে চান তাহলে একটিমাত্র পথ হচ্ছে দল নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার কায়েম করুন। এতে আপাতত সংকট সমাধান হবে, দেশবাসী আতঙ্কমুক্ত হবে। আপনারাও বেঁচে যাবেন। আর যদি না মানেন, তার পরিণতি হবে ভয়াবহ। এই অবস্থায় আপনারাও শান্তিতে থাকতে পারবেন না। দেশবাসীও শান্তি পাবে না। আমরা কেউ চাই না যে জাতি স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছে সে জাতি আপনাদের কারণে আবার দুর্ভোগের শিকার হোক। দেশে যদি আবার গোলযোগ তৈরি হয় তাহলে এই দুঃখ রাখার জায়গা থাকে না।

সমাবেশে ৮দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে আগামী ৩ মাসের কর্মসূচি ঘোষণা করেন মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের। কর্মসূচিগুলো হলো- আগস্ট মাসে দেশব্যাপী গণসংযোগ, সেপ্টেম্বর মাসে উপজেলা/থানায় বিক্ষোভ সমাবেশ এবং ১৪ অক্টোবর রাজধানীতে মহাসমাবেশ।

খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব ও সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত বিভাগীয় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংগঠনের নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, এবিএম সিরাজুল মামুন, অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল জলিল ও কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য মাওলানা ফেরদাউস বিন ইসহাক। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আজিজুল হক ও মহানগরী উত্তর সভাপতি মাওলানা সাইফুদ্দিন আহমদ খন্দকারের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে বক্তব্য পেশ করেন কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, কেন্দ্রীয় প্রচার ও তথ্য সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু, কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক সম্পাদক ও ইসলামী যুব মজলিস সদস্য সচিব তাওহীদুল ইসলাম তুহিন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস কেন্দ্রীয় সভাপতি বিলাল আহমদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক সাহাব উদ্দিন আহমদ খন্দকার, মুফতি আবদুল হক আমিনী, কেন্দ্রীয় সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শায়খুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মাওলানা কাজী ফিরোজ আহমদ, ঢাকা মহানগরী উত্তর সাধারণ সম্পাদক প্রিন্সিপাল আজিজুল হক, শ্রমিক মজলিস কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রভাষক মুহাম্মদ আবদুল করিম, নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি মাওলানা আহমদ আলী, ঢাকা জেলা সভাপতি মুফতি আশরাফ আলী, গাজীপুর মহানগরী সভাপতি মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক, মুন্সীগঞ্জ জেলা সভাপতি হাফেজ মাওলানা জাকির হোসেন, শরীয়তপুর জেলা সভাপতি মাওলানা বিএম সিরাজ, নারায়ণগঞ্জ মহানগরী সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস আহমদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মিজানুর রহমান, ঢাকা জেলা সাধারণ সম্পাদক মুফতী আলী আকরাম, নরসিংদী জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শামসুদ্দিন, মানিকগঞ্জ জেলা প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা আমিরুল ইসলাম প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close