নারায়ণগঞ্জরাজনীতি

গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ বিকেল ৪টায় গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে ‘একুশের উচ্চারণ, দূর হ দুঃশাসন’ স্লোগানের পক্ষে এবং নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের ২১শে ফেব্রুয়ারির সাংস্কৃতিক আয়োজনে বাঁধা দেয়ার প্রতিবাদে সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজনের সভাপতিত্বে এবং মহানগর নির্বাহী সমন্বয়ক পপি রাণি সরকারের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা নির্বাহী সমন্বয়ক জননেতা অঞ্জন দাস, ফতুল্লা থানা আহবায়ক জাহিদ সুজন, যুগ্ন সম্পাদক আমিনুর ইসলাম, ১২নং ওয়ার্ড কমিটি সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম বাবু, ১৮ নং ওয়ার্ড সদস্য সচিব তাকবির হোসেন।

সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল, সমগীত সংস্কৃতি প্রাঙ্গণের সাবেক সভাপ্রধান অমল আকাশ, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি নারায়ণগঞ্জ জেলা আহবায়ক কাউসার হামিদ, সদস্য সচিব আবদুল আল মামুন, নারি সংহতি জেলা আহবায়ক নারীনেত্রী নাজমা বেগম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ছাত্রনেতা ফারহানা মুনা।

সংহতি সমাবেশের সভাপতি তরিকুল সুজন বলেন, লড়াইয়ে যারা বুক পেতে দেয়, তাদের দমানো যায় না। শাসকদের বন্দুকের মুখে ৫২, ৬৯, ৭১ এমনকি ৯০ সালের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনও দমাতে পারে নি। কারণ, তারা ব্যাক্তিগত জানের মায়া ত্যাগ করেছে। তারা মানুষের মুক্তির সংগ্রামের মধ্য দিয়ে নতুন স্বপ্ন, নতুন মানুষ, নতুন দেশের লক্ষ্যে নিজেদের উৎসর্গ করেছে। শাসকের ভয়-ভীতি-আতঙ্কের সংস্কৃতি অতিক্রম করে, তারা নিজেরাই এখন শাসকের জন্য আতঙ্ক। আপনার দুঃশাসন আপনার কবর রচিত করবে।

এসময় বক্তারা বলেন, ‘ এই দেশে দুঃশাসন চলছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও সত্যিকার স্বাধীনতা এদেশের মানুষ পায়নি। প্রতিনিয়ত প্রতিবাদী কণ্ঠ দমনে নিপীড়ন চলছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার কথা শুনতেও ভয় পায়। কিন্তু আমরা কথা বলতে ভয় পাই না। এই দেশ কোন পুলিশি রাষ্ট্র নয়, জনগণের রাষ্ট্র। জনগণের রাষ্ট্রে দুঃশাসন থাকতে পারে না। তাই সমস্বরে আমরা বলি, একুশের উচ্চারণ দূর হ দুঃশাসন। এটাই আমাদের প্রতিবাদী ভাষা।’ এই সময় বক্তারা আরো বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের অনুষ্ঠানে ব্যানার খুলে নিতে নির্দেশ দেয় পুলিশ। ওই ব্যানারে উল্লেখ ছিল ‘একুশের উচ্চারণ, দূর হ দুঃশাসন’। দুঃশাসন শব্দ নিয়ে পুলিশের আপত্তি। এই দেশে যে দুঃশাসন চলছে তারই প্রমাণ সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামে পুলিশের বাধা দেওয়া। এই বাধাই প্রমাণ করে আমরা দুঃশাসনে আছি। কিন্তু মনে রাখতে হবে ক্ষমতা কখনই চিরস্থায়ী হয় না। আগেও কোন স্বৈরাচার সরকার তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে পারেনি, আগামীতেও পারবে না। এই দেশের মানুষ তৈরি হচ্ছে।

এই দেশে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী, সাগর-রুনিসহ অনেক হত্যাকান্ডের বিচার বন্ধ রাখা হয়েছে। তাহলে এইদেশে সুশাসন চলছে কীভাবে আমরা বলবো? পুলিশকে নিজের লাঠিয়াল বাহিনীতে তৈরি করেছে সরকার। মানুষের জানমাল রক্ষার দায়িত্বে থাকার কথা যে পুলিশের সেই পুলিশকে এই জায়গায় কারা নিয়ে এসেছে তা সারাদেশের মানুষ জানে।

গত মঙ্গলবার রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে থাকাকে কেন্দ্র করে গণসংহতি আন্দোলনের তরিকুল সুজনের সাথে পুলিশের ‘অসদাচরণ’ ও দেড় ঘন্টা থানায় রেখে মুচলেকায় ছাড়ারও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে সমাবেশ থেকে। বক্তারা বলেন, ‘দুপুরে সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামে বাধা দিল পুলিশ। রাতে সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম শেষে তরিকুল সুজনকে পুলিশের আটক করে। কী কারণে তরিকুলকে নেওয়া হয়েছিল সেই হিসাব আমরা বুঝি। পুলিশ জনগণের নিরাপত্তা না দিয়ে এখন সরকারি দলের পাহারাদারে রূপান্তরিত হয়েছে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close