নারায়ণগঞ্জরাজনীতি
রাজপথে উজ্জীবিত নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতা-কর্মীরা

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি এক বছর। নারায়ণগঞ্জ বিএনপি দাপুটের সাথে রাজপথে একের পর এক কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন।
সরকারের পদত্যাগসহ ১০দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজপথে থাকবে তারা। বিভেদ ভুলে আত্মত্যাগের মানসিকতা তৈরি হয়েছে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মাঝে। বর্তমানে রাজপথে বিএনপির নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত।
এটিই হতে পারে আগামীতে সরকারবিরোধী আন্দোলনের রসদ। চলমান কর্মসূচিতে নারায়ণগঞ্জ নেতা-কর্মীদের মধ্যে নতুন করে প্রাণসঞ্চার শুরু হয়েছে। উজ্জীবিত নেতাকর্মী সমর্থকরাও।
এদিকে গত পুরো বছর জুড়েই সরকার বিরোধী আন্দোলনে রাজপথে চাঙা ছিলো নারায়ণগঞ্জ নেতা-কর্মীরা। হামলা-নির্যাতন, মামলা-গ্রেপ্তার আতংক সব কিছু উপেক্ষা করে রাজপথে উপস্থিতি ছিরো চোথে পড়ার মতো। বিএনপি’র প্রতিটি কর্মসূচিতে রূপ নিচ্ছে জনস্রোতে।
এতে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের মধ্যে বাড়ছে আস্থা ও আত্মবিশ্বাস। ফলে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রাজনীতিতে প্রাণের সঞ্চার ফিরেছে এবং উজ্জীবিত নেতা-কর্মীরা। তবে শেষ পর্যন্ত এদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ধরে রাখাই এখন মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সূত্রে জানায়, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এখনো এক বছর বাকি আছে। এরই মধ্যে একের পর এক বড় বড় দলীয় কর্মসূচি পালন করে নারায়ণগঞ্জের রাজপথে শক্তির মহড়া দেখাচ্ছেন নেতাকর্মীরা। তবে এসকল কর্মসূচি গুলো পালন করতে গিয়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সরকারদলীয়দের হামলা মামলা ও গ্রেফতারের স্বীকার হচ্ছে।
আর সামনে আসছে সরকার বিরোধী দলীয় আরও বড় বড় কর্মসূচি। আর এ ধরনের কর্মসূচি দিলে সরকারের দমন-নিপীড়নও বাড়বে। তাই নিরপেক্ষ সরকারের দাবি, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবিতে অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি।
বিএনপির দলীয় সূত্রে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির নতুন কমিটি গঠনের পর থেকেই নারায়ণগঞ্জের রাজপথে দাপুটের সাথে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালন করছে। সেজন্য সরকারবিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে নিয়েই কার্যকর কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।
বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত জনবান্ধব সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ প্রতিটি কর্মসূচিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করছে।
মহানগর বিএনপির এড. সাখাওয়াত হোসেনকে আহ্বায়ক ও এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে সদস্য সচিব করে আহবায়ক কমিটি ঘোষনা পর থেকে পূর্বের চেয়ে বর্তমানে রাজপথে অনেক শক্তিশালী মহানগর বিএনপি।
জেলা বিএনপির আহবায়ক সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রবীন এবং অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের হাতে জেলার নেতৃত্ব আসায় বিএনপিতে আগের চাইতে অনেক শক্তিশালী হবে বলে মনে করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির নতুন কমিটি গঠনের পর থেকে উজ্জীবিত দলীয় নেতাকর্মীরা। আইনজীবী নেতা সাখাওয়াত ও টিপু এবং অভিজ্ঞ গিয়াসরে হাতে মহানগর ও জেলার দায়িত্ব আসার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রাজনীতিতে প্রাণের সঞ্চার ফিরেছে এবং উজ্জীবিত নেতা-কর্মীরা।
এছাড়াও দীর্ঘ বছর আবারও রাজপথে কর্মসূর্চি পালন করছে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির। জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির বর্তমান আহবায়ক কমিটির ১ম যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক্ষ মামুন মাহমুদকে সাথে নিয়ে পৃথকভাবে জেলা বিএনপির ব্যানারে কর্মসূচি পালন করছে।
শুধু তাই নয় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নতুন আহবায়ক কমিটি গঠনের পর থেকেই বিএনপির নিষ্ক্রিয় নেতা বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল আবারও মহানগর বিএনপির ব্যানারে এসে কর্মসূর্চি পালন করছে।
মূলত মুকুল মহানগর বিএনপির সেক্রেটারী চেয়েিেছলেন কিন্তু তাকে যুগ্ম আবাহবায়ক দেয়া হয়। তারপর থেকে পদত্যাগ করবে বলে নাটক সাজিয়ে শের্ষ পর্যন্ত মহনগর বিএনপির নতুন আহবায়ক কমটির এক অংশের নেতাদের নিয়ে আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করছে।
বিএনপির সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্র ঘোষিত তৃণমূলের কর্মসূচিতে সিনিয়র নেতাদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়। কেন্দ্রীয় নেতাদের জেলায় জেলায় দায়িত্ব নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। শুধু কর্মসূচি পালন নয়, তৃণমূলের কোথাও কোনো কোন্দল রয়েছে কি না-তা নিরসনেরও দায়িত্ব দেওয়া হয় তাদের। প্রতিটি কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতি তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সাহস জোগাচ্ছে।
যারা দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় ছিল তারাও কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, তৃণমূলের ইউনিয়ন পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সিনিয়র নেতারা। এতেও তাদের মধ্যে একটা উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। অতীতে সরকারবিরোধী আন্দোলনে আহত ও নিহত নেতা-কর্মীদের পরিবারের পাশে সেভাবে দাঁড়ায়নি কেন্দ্র।
কিন্তু এবারের চিত্র উলটো। বিগত সময় যারা নিহত ও আহত হয়েছে তাদের প্রত্যেক পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে হাইকমান্ড। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ফলে অনেকে ঝুঁকি নিয়েই নামছেন রাজপথে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, রাজপথে নারায়ণগঞ্জ ফিরেছে বিএনপি। এতে দলের নেতা-কর্মীরা চাঙ্গা, উজ্জীবিত। এটিকে আগামীতে সরকারবিরোধী আন্দোলনের রসদ মনে করছে দলের হাইকমান্ড। তারা এখন নেতা-কর্মীদের এই উচ্ছ্বাস ধরে রাখতে শান্তিপূর্ণ ভাবেই ধারাবাহিক সভা-সমাবেশ কর্মসূচি করছে।
কারণ নেতা-কর্মীদের মধ্যে নতুন করে প্রাণসঞ্চার করেছে। আর দলীয় লাগাতার কর্মসূচিতে হাজার হাজার লোকসমাগম হওয়ায় নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে ফুরফুরে ভাব দেখা যাচ্ছে।
এবার চলমান আন্দোলনের সফলতা আসবে। এ বিষয়ে নেতা-কর্মীরা আত্মপ্রত্যয়ী। আন্দোলন-সংগ্রাম সঠিক পথেই আছে।