নারায়ণগঞ্জ

স্ত্রী সন্তানের ওপর হামলার অভিযোগ

গ্রীস থেকে দেশে এনে সম্পত্তি দখলের চেষ্টা!
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় গ্রীস প্রবাসী নুরুজ্জামান বাচ্চুকে (৫০) দেশে ফিরিয়ে এনে আটকে রেখে সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তারই ভাইদের বিরুদ্ধে। আটক থাকার খবরে প্রবাসীর স্ত্রী ও সন্তান দেখা করতে চাইলে তাদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে সৎ ভাই ও তার সহযোগীদের উপর।

গত ৪ ডিসেম্বর ফতুল্লা থানাধীন কুতুবপুর লাকি বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পরে ৯ ডিসেম্বর আহত প্রবাসীর স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের বড় ভাই বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামীরা হলেন, মনির হোসেন (৪০), সুরমী আক্তার (৩৫), তোতা মিয়া (৪২), হারুন মিয়া (৪৬), হালিমা খাতুন (৬০)।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গ্রীস প্রবাসী নুরুজ্জামান বাচ্চু ২০২০ সালে ব্রেন স্টোক করেন। এরপর থেকেই সে মানসিকভাবে অসুস্থ ও স্মৃতি শক্তি হারিয়ে ফেলেন। গত অক্টোবরে নুরুজ্জামানকে কূটকৌশলের মাধ্যমে তাকে গ্রীস থেকে দেশে ফিরিয়ে আনে। দেশে ফিরিয়ে এনেই তার অসুস্থতার সুযোগে সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টার জন্য স্ত্রী সন্তানের সাথে যোগাযোগ বিছিন্ন করে দেয়া হয়। পরে ৩০ নভেম্বর বাচ্চুর স্ত্রী মনোয়ারা ও এক সন্তান আল আমিন বাচ্চু দেশে ফিরে জানতে পারে কুতুবপুরের বাসায় তাকে আটকে রাখা হয়েছে। ৪ ডিসেম্বর ছেলেকে নিয়ে সেই বাড়িতে প্রবেশ করতে চাইলে উভয়ের উপর হামলা চালায় বাচ্চুর ভাই ও সৎ ভাইয়েরা। হামলায় বাচ্চুর স্ত্রী ও সন্তান গুরুতর আহত হলে তাদের খানপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ভুক্তভোগী মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী বিদেশে থাকার সুবাধে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে জায়গা, জমি ও বাড়ি করেছে। সেই সম্পত্তি ভোগদখল করছে তার ভাই ও সৎ ভাইয়েরা। ২০২০ সালে সে স্ট্রোক করার পর বর্তমানে সে ঠিকভাবে কথা বলতে পারে না এবং তার স্মৃতি শক্তি লোপ পেয়েছে। এই সুযোগে তাকে দেশে এনে আটকে রাখা হয়েছে এবং আমাদেরকে তার সাথে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না।’

অভিযোগের বিষয়ে মামলার প্রথম আসামী মনির হোসেন বলেন, ‘আমার ভাই অসুস্থ হবার পর ভাবী দেশে ফিরতে দিচ্ছিলো না। পরে আমাদের সহায়তায় তাকে দেশে ফিরিয়ে আনি আমরা। দেশে ফেরার পরেই বাচ্চু ভাই তার স্ত্রীকে ডিভোর্স দেয়। বর্তমানে বাচ্চু ভাই তার নিজ বাড়িতেই আছে এবং নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছে। একটা মামলা সাজিয়ে আমাদের গ্রেপ্তার করাতে চাচ্ছে সে। আমার ভাইয়ের সাথে যে কেউ যোগাযোগ করতে পারবে।’

এই বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বলেন, মামলার পাঁচ আসামীর মধ্যে একজন ব্যতিত বাকিরা জামিনে আছে। আরেকজনকে ধরতে আমাদের অভিযান চলছে। বিষয়টি পারিবারিক কলহ থেকেই তৈরী হয়েছে। সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close