নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি সংঘবদ্ধ চক্র ফ্যাট ভাড়া নিয়ে একটি গড়ে তুলেছে ‘টর্চার সেল’। দীর্ঘদিন থেকে ওই চক্রটি মানুষকে ডেকে নিয়ে ওই টর্চার সেলে আটকে রেখে নির্যাতন করে হাতিয়ে নিতো মোটা অংকের অর্থ। এ চক্রটির সাথে এক জামায়াত নেতার ছেলে জড়িত থাকারও চাউর রয়েছে।
এদিকে এ চক্রের সদস্যরা মো. মাহাজাব উদ্দিন নামের এক প্রিন্টিং ব্যবসায়ীকে তাদের টর্চার সেলে নির্যাতন করে হাত-পা বেঁধে ২ লাখ টাকার চাঁদার দাবি করে। এবং নগদ একাউন্টে দুই দফায় এক লাখ ২৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। এক পর্যায়ে ওই চক্রের সদস্যরা ভুক্তভোগীর স্ত্রীর কাছ থেকে বাকি টাকা আনতে বলে।
ভুক্তভোগীর স্ত্রী এ ঘটনা সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে জানালে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় মাহাজাবকে উদ্ধারসহ ঘটনায় জড়িত একজনকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে আটককৃতের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপর আরেক সদস্যকেও আটক করে পুলিশ। তারা হলো- সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি হাজেরা মার্কেট এলাকার হাসি বেগমের ভাড়াটিয়া শফিকুল ইসলাম সোহাগ (৩০) এবং মধ্য পাইনাদি এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে চান্দু মনির (৪০)। এ সময় একটি কালো রঙের হায়েস গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-চ ১৯-৫০০১) জব্দ করে পুলিশ।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্ত্রী ঝরনা আক্তার নদী বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা (মামলা নং-০৯) দায়ের করলে পুলিশ ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার আদালতে প্রেরণ করেন।
এদিকে, এলাকাবাসী বলছে মিজমিজি পূর্ব পাড়া পাগলাবাড়ি এলাকার জামায়াত নেতা আব্দুস সামাদ মুন্সীর ছেলে আবু সুফিয়ানকে সিদ্ধিরগঞ্জ পুলের টিসি রোডের চাঁন টাওয়ারের সামনে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ আটকালে সুফিয়ান নিজেকে বাচাঁতে তখন তার মাইক্রোবাস থেকে ময়লার ড্রেনে লাফ দিয়ে পালিয়ে যায়। মাইক্রোবাস থেকে সুফিয়ান পালিয়ে যাওয়ার পর সেই গাড়ি পরবর্তীতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।
মামলার বাদী ঝরনা আক্তার নদী বলেন, আমার স্বামীকে কাজের কথা বলে ডেকে নিয়ে মারধর করে চাঁদা নিয়েছে চক্রটি। আমি মামলা করেছি এজন্য আমাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মশিউর রহমান বলেন, এ ঘটনায় দুজন গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
তিনি আরো জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারের সময় একটি মাইক্রোবাসের কাগজপত্র দেখাতে না পারায় সেটি জব্দ করে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
