জাতীয়রাজনীতি

১০ ডিসেম্বর বিএনপির মহাসমাবেশের আগে ৩ দিন গাড়ি বন্ধের আশঙ্কা

আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে ঢাকাসহ সারাদেশে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের দুশ্চিন্তা কাজ করছে যে, আসলে সেদিন কি ঘটতে যাচ্ছে। সবার একটাই জিজ্ঞাসা বিএনপির সারাদেশের সমাবেশগুলোতে যেভাবে পরিবহন ধর্মঘট ঘোষণা করেছিল মালিক সমিতি সেই একইভাবে ঢাকার সমাবেশের আগে ও পরে পরিবহন ধর্মঘট আসবে কি না? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে প্রতিবেদক পরিবহন মালিক সমিতির নেতা, সাধারণ মানুষ, পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলেছে।

তিনি বলেন, ‘মালঞ্চ পরিবহনের অন্তত ৫০টি গাড়ি মোহাম্মদপুর থেকে ধানমন্ডি-এলিফান্ট রোড হয়ে পল্টন-গুলিস্তান দিয়ে পুরান ঢাকার ধুপখোলা রুটে চলাচল করে। গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে আগামী ৯ ডিসেম্বর সকাল থেকে ১০ ডিসেম্বর রাত পর্যন্ত। ৮ ডিসেম্বর গাড়ি চললেও সংখ্যায় অনেক কম থাকবে।’

পিরোজপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা-গোপালগঞ্জ রুটে চলাচলকারী ইমাদ পরিবহনের একজন সহকারী ম্যানেজার বলেন, ‘আগামী ৮, ৯ ও ১০ ডিসেম্বর গাড়ি বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তবে ঢাকা থেকে গাড়ি ছাড়তে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।’

৬ ডিসেম্বর পল্টন মোড়ে কথা হয় সাভার পরিবহনের চালক আজাহার আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাইরে থেকে কোনো গাড়ি ঢাকার ভেতরে প্রবেশ করবে না তিন দিন। ঢাকায় যেসব সিটি বাস চলাচল করে সেগুলোও খুব বেশি চলাচল করবে না বলেও তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে।’

এর আগে, বিএনপির বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশের সময় পরিবহন মালিক সমিতি ধর্মঘট ডেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। সমাবেশ শেষে তারা পরিবহন ধর্মঘট তুলে নেয়। এ নিয়ে নানাভাবে সমালোচনা হলে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ উপলক্ষ্যে যেন কোনোরকম বাঁধা দেওয়া না হয় এবং এদিনকে কেন্দ্র করে ধর্মঘট যাতে দেওয়া না হয়’— সেজন্য পরিবহন কোম্পানিগুলোকে অনুরোধ করেন তিনি। এরপরেও পরিবহন কোম্পানিগুলো ধর্মঘট ডেকেছে। তবে এবারের পরিবহন ধর্মঘট থাকবে অঘোষিত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘বিএনপি যদি ২০১৪ সালের মতো ভাঙ্চুর জ্বালাও পোড়াও না করে তাহলে কখনো পরিবহন বন্ধ হবে না। সরকার সোহরাওয়ার্দী ময়দানে সমাবেশের জায়গা দিয়েছে কিন্তু বিএনপি সেখানে না করে পল্টনে করতে চায়। এতে বোঝা যায় তাদের অসৎ কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। ২০১৪ সালে পাঁচ হাজার গাড়ি পুড়িয়েছে, ৯৯ জন শ্রমিককে হত্যা করেছে। পরিবহন ধর্মঘটের কোনো খবর আমার কাছে নেই।’
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঘিরে গাড়ি বন্ধের কোনো নির্দেশনা আছে কি না— জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান অতিরিক্ত সচিব তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিআরটিসি একটি সরকারি সংস্থা। যেসব সম্পদ রয়েছে তার সবই জনগণের। ২০১৪-১৫ সালে অনেক গাড়ি পুড়িয়েছে নাশকতাকারীরা। পরিস্থিতি খুব খারাপ হলে আমরাও সম্পদ রক্ষায় পদক্ষেপ নেব। তবে এই মুহূর্তে আমাদের গাড়ি বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

 

এদিকে ডিএমপির গণমাধ্যম শাখার উপ কমিশনার (ডিসি মিডিয়া) মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ভেন্যু হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। তবে তাদের পক্ষ থেকে আরামবাগের মাঠে সমাবেশ করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। রাস্তায় কোনোভাবেই তাদের অনুমতি দেবে না ডিএমপি। পহেলা ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাদক ব্যবসায়ী বা যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close