একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু হবে আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে। আর ক্লাস শুরু হবে পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে। এবার ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হচ্ছে সর্বোচ্চ সাড়ে ৮ হাজার টাকা। কেউ অতিরিক্ত ফি নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে শিক্ষা বোর্ড। সেই সঙ্গে ভর্তিতে কোনো আসন সংকট হবে না বলেও জানিয়েছে বোর্ড।
সোমবার প্রকাশিত হয়েছে এসএসসি পরীক্ষার ফল। এবার পাস করেছে ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ৬১৯ শিক্ষার্থী।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক আবু তালেব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেছেন, একাদশ শ্রেণিতে আসন আছে ২৫ লাখের মতো। যা পাস করা শিক্ষার্থীর চেয়ে সাড়ে ৭ লাখ বেশি। তাই ভর্তিতে কোনো আসন সংকট হবে না।
খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী, আগামী ৮ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন চলবে। আর ফল প্রকাশ হবে ৩১ ডিসেম্বর। ১ম পর্যায়ে যারা চান্স পাবে না তারা দ্বিতীয় বারের মত আবেদন করতে পারবে ৯ এবং ১০ জানুয়ারি। ফল প্রকাশ হবে ১২ জানুয়ারি। আর তৃতীয় পর্যায়ে আবেদন নেওয়া হবে ১৬ জানুয়ারি। ফল প্রকাশ হবে ১৮ জানুয়ারি।
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতেও একই তারিখ থেকে আবেদন নেওয়ার চিন্তা চলছে। আর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ক্লাস শুরু করা হবে ৭ ফেব্রুয়ারি। কলেজে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করতে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে আলাদা দু’টি ভর্তি নীতিমালায় এসব প্রস্তাব করা হয়েছে, যা অনুমোদনে পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। এই দুই নীতিমালা চূড়ান্ত করতে বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে।
জানা যায়, সারাদেশে ৯ হাজার ১৮১টি কলেজ ও মাদরাসায় একদশ শ্রেণিতে পড়ালেখা চলে। সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট আছে ৫৬৫টি। এছাড়া ডিপ্লোমা ইন কমার্স প্রতিষ্ঠান সাতটি এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (ভোকেশনাল, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তি) পর্যায়ে প্রতিষ্ঠান আছে প্রায় ১৮শ। কলেজ ও মাদরাসায় আসন আছে ২৪ লাখ ৪০ হাজার ২৪৯টি, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিকে আছে প্রায় ২ লাখ ৪৩ হাজার।
এছাড়া কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পর্যায়ে প্রায় ৯ লাখ আসন রয়েছে। এর মধ্যে এইচএসসি ভোকেশনালে পৌনে তিন লাখ, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তিতে (বিএমটি) চার লাখ আসন। সব মিলে আসন সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩৩ লাখ। এবার এসএসসি, দাখিল এবং এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালে মোট পাস করেছে ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ৬১৯ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ শিক্ষার্থী। এতে এসএসসি, দাখিল আর কারিগরি- এই তিন স্তরে শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে শুধু এসএসসিতে পাস করেছে ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৫৭১ জন, মাদরাসায় ২ লাখ ১৩ হাজার ৮৮৩ জন, আর কারিগরিতে ১ লাখ ৩০ হাজার ১৬৫ জন। সব শিক্ষার্থী ভর্তির পরও আসন শূন্য থাকছে প্রায় ১৬ লাখ।
বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড থেকে জানা যায়, দেশে সাড়ে ১১ হাজার প্রতিষ্ঠানে একদশ শ্রেণিতে পড়ালেখা হলেও আড়াইশো কলেজে ভর্তির আগ্রহ থাকে শিক্ষার্থীদের। এর মধ্যে প্রায় ২শ কলেজ ও মাদরাসা এবং ৪৭টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, একটি গ্রাফিক্স আর্ট ইনস্টিটিউট ও একটি গ্লাস অ্যান্ড সিরামিকস ইনস্টিটিউট রয়েছে। এছাড়া ৫১৫টি বেসরকারি পলিটেকনিক থাকলেও হাতে গোনা ডজনখানেক প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী আকৃষ্ট করার ক্ষমতা রাখে। ডিপ্লোমা ইন কমার্সের ৭ প্রতিষ্ঠান ও বিএমটি এবং ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠানেও কিছু শিক্ষার্থী ভর্তি হয়।
কলেজগুলো ভর্তি প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি শেষ করেছে। অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম হওয়ায় শিক্ষকদের ওপর চাপও অনেক কমেছে।
আবেদন শেষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি চলবে ২২ থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। আর ক্লাস শুরু হবে পয়লা ফেব্রুয়ারি।