জাতীয়নারায়ণগঞ্জমতামতরাজনীতিসারাদেশ

নাসিম ওসমানের নামে শীতলক্ষ্যা সেতু নামকরণের কারন জানালেন প্রধানমন্ত্রী

নড়াইলে দেশের প্রথম ছয় লেনের মধুমতী সেতু এবং নারায়ণগঞ্জে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ সোমবার (১০ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চামেলী হল প্রান্ত থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই সেতুর উদ্বোধন ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নির্মিত বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম নাসিম ওসমান তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুরও উদ্বোধন করেন তিনি।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেতুগুলো ভ্রমণের সময় কমিয়ে সড়ক যোগাযোগকে আরো সহজ, দ্রুত এবং সহজলভ্য করার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সহায়তা করবে।

ওসমান পরিবারের স্মৃতি চারণ করে তিনি বলেন, ৭১ সালে যখন আমরা ধানমন্ডি বাসায় আমার মায়ের সাথে ছিলাম। ১৬ ডিসেম্বার তখন পাকিস্তান আর্মি আত্মসমার্পন করছেন। তখনও আমরা মুক্তি পাইনি। কিন্তু নাসিম ওসমানের বাবা সামসুজ্জোহা সাহেব ভেবে ছিল, আমরা মুক্তি পেয়েছি। তিনি রাজপথ দিয়ে ডুকলে পাকিস্তান আর্মি গুলি ছুড়ে, গুলি লেগেছিল কিন্তু তিনি বেঁচে গিয়ে ছিলেন। কাজেই তার কথা আমি স্মরণ করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তখন আমি রিফুজি হিসেবে দিল্লিতে। তখন তিনি গ্রেপ্তার হয়ে ছিলেন। মুক্তি পাওয়ার পর সাথে সাথে তিনি দিল্লি গিয়ে আমাদের সাথে দেখা করেছেন সামসুজ্জোহা সাহেব। ১৪ আগস্ট নাসিম ওসমানের বিয়ে হয়। নাসিম ওসমানের বিয়েতে শেখ কামালও গিয়েছিল। কামাল ফিরে আসি, যেহেতু পর দিন ১৫ আগস্টের ঘটনা ঘটেছে, তখন নববধুকে রেখেই সে ওই হত্যার প্রতিবাদ জানাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিল। সেই সব কথা সব সময়ই আমি স্মরণ করি। যদিও এক সময় সে আমাদের পার্টি করতো না। কিন্তু সব সময়ই আমাদের সাথে যোগাযোগ ছিল। তাঁর আকাঙ্খা ছিল সেতুটার জন্য। যখনই আমরা সেতুর কাজের উদ্যোগ নিয়েছি, তখনই তিনি ইহজগত ছেড়ে চলে গেলেন। কাজে তাঁর নামেই আমি সেতুটা উৎসর্গ করেছি।

জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে ৯৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে মধুমতী নদীর ওপর ৬৯০ মিটার দীর্ঘ মধুমতী সেতু নির্মিত হয়েছে, যা স্থানীয়ভাবে কালনা সেতু নামে পরিচিত। এটি নড়াইল, গোপালগঞ্জ, খুলনা, মাগুরা, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর ও ঝিনাইদহ জেলাকে সংযুক্ত করেছে।

প্রকল্প কর্মকর্তাদের মতে, সেতুটি চালু হওয়ার মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষ দ্রুত সড়ক যোগাযোগ সুবিধা পাবে। এর ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত ১০টি জেলার মানুষ কম সময়ে বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করতে পারবে। এটি দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল, যশোর থেকে ঢাকা পর্যন্ত ভ্রমণের সময়ও কমিয়ে আনবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close