সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান লক্ষ্মীপূজা আজ। শারদীয় দুর্গোৎসবের পরবর্তী পূর্ণিমা তিথিতে ঘরে ঘরে ধন-সম্পদ তথা ঐশ্বর্যের দেবী হিসেবে লক্ষ্মীপূজা করে থাকেন বাঙালি হিন্দুরা। শাস্ত্র মতে, লক্ষ্মী ধন-সম্পদ, সৌভাগ্য ও সৌন্দর্যের দেবী। লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা।
বিষ্ণু রাম ও কৃষ্ণরূপে অবতার গ্রহণ করলে, লক্ষ্মী সীতা ও রাধারূপে তাদের সঙ্গিনী হন। কোজাগরী পূর্ণিমা রাতে দেবী লক্ষ্মী ধনধান্যে ভরিয়ে দিতে ভক্তগৃহে আসেন। প্রাচীনকাল থেকেই রাজা-মহারাজা, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ গৃহস্থ অবধি সবাই দেবী লক্ষ্মীর পূজা দিয়ে আসছেন।
লক্ষ্মীকে নিয়ে বাংলার জনসমাজে বিভিন্ন জনপ্রিয় গল্প প্রচলিত আছে। এই গল্পগুলো পাঁচালির আকারে লক্ষ্মীপূজার দিন পাঠ করা হয়। একে লক্ষ্মীর পাঁচালি বলা হয়। লক্ষ্মীপূজার গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ হলো সিঁদুর, ঘট, ধান, মাটি, আম্রপল্লব, ফুল, দূর্বা, তুলসীপাতা, হরীতকী, চন্দন, ধূপ, দীপ, নৈবেদ্য, আতপচাল ও জল। লক্ষ্মীপূজায় মঙ্গলঘট, ধানের ছড়ার সঙ্গে গৃহস্থের আঙিনায় শোভা পায় চালের গুঁড়ার আলপনায় লক্ষ্মীর ছাপ। এ উপলক্ষে রমণীরা উপবাস ব্রত পালন করেন।
লক্ষ্মী পূজায় রাত্রি জাগরণ করা হয়। কোজাগরী অর্থাৎ কে জাগরী বা কে জেগে আছ। শাস্ত্রমতে এই রাতে লক্ষ্মী সবার বাড়িতে যান। যে গৃহের দরজা বন্ধ থাকে ও গৃহস্থরা ঘুমিয়ে থাকেন, সেখান থেকে লক্ষ্মী ফিরে আসেন। এ কারণে এই লক্ষ্মীপূজাকে কোজাগরী বলা হয় এবং রাত্রি জাগরণের নিয়ম রয়েছে। বাঙালি হিন্দুর ঘরে ঘরেই দেবী লক্ষ্মীর পূজা হয়ে থাকে। গৃহস্থরা প্রতি বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীর পূজা করেন।