জাতীয়নারায়ণগঞ্জনারায়ণগঞ্জ সদররাজনীতি
না.গঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আ’লীগের মনোয়নপত্র জমা দিলেন আব্দুল মতিন মাষ্টার
না.গঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আ'লীগের মনোয়নপত্র জমা দিলেন জাতীয় শ্রমিকলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মতিন মাষ্টার

সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জাতীয় শ্রমিকলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মতিন মাষ্টার নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ৮ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিকেলে রাজধানী ধানমন্ডি আওয়ামীলীগের সভানেত্রীর কার্যালয় এ মনোয়ন ফরম জমা দেন। সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মতিন মাষ্টার দক্ষতা ও সততার সঙ্গে দলের জন্য অনেক কাজ করেছেন। পুলিশের মারও খেয়েছেন। বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে শ্রমিক লীগের সভাপতি হিসেবে সফল নেতৃত্বও দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর কোন সুযোগ সুবিধা দাবিও করেননি। সেই তুখোড় রাজনীতিবিদ নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ৮ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) মনোনয়ন পত্র জমা দেন। এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর (বুধবার) বিকেলে রাজধানী ধানমন্ডি আওয়ামীলীগের সভানেত্রীর কার্যালয় থেকে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোয়ন ফরম সংগ্রহ করেন তিনি। আব্দুল মতিন মাষ্টারের ঘনিষ্ঠসূত্র জানায়, আব্দুল মতিন মাষ্টার একজন সফল সংগঠক। এক সময়ের তুখোড় শ্রমিক লীগ নেতা। ৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার প্রতিবাদ হিসেবে স্কুলের চাকরি ছেড়ে দিয়ে শ্রমিকলীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত হয়ে পড়েন। ৬৯ থেকে অদ্যবধি শ্রমিক লীগের সাথে আছেন। ৭৯ সালে তিনি শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। এরপর পাট শিল্প শ্রমিক কর্মচারি লীগ নামে জুট মিল সংক্রান্ত একটি কমিটি হলে সে কমিটিতে তাকে ট্রেজারার করা হয়। আদমজী জুট মিল মাঠে শ্রমিক লীগের সম্মেলনে তাকে সহ-সাধারণ সম্পাদক করা হয়। পরে নেত্রী (শেখ হাসিনা) ৮১ সালের ১৭ এপ্রিল দেশে ফিরার পরে শ্রমিক লীগের কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হয়। তখন ২৬ জনের সাংগঠনিক কমিটি করা হলে সেখানে তিনি ছিলেন ৯ নম্বার সদস্য। ৮৩ সালে সম্মেলন হলে তাকে আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক করা হয়। ৮৭ সালে সম্মেলনে তাকে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ৯২ এর সম্মেলনে তিনি শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৯৫ সালের সম্মেলনে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৩ সালের ৩ জুলাই মহানগর নাট্য মঞ্চে কেন্দ্রীয় সম্মেলনে তাকে করা হয় শ্রমিক লীগের সভাপতি। ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি এ দলের সভাপতি ছিলেন। সততা ও দক্ষতার সাথে পুরো বাংলাদেশের শ্রমিকদের এবং শ্রমিকলীগের নেতা-কর্মীদের সাথে যোগাযোগ রেখে সংগঠন পরিচালনা করেছিলেন। প্রবীণ এ রাজনীতিবিদ আব্দুল মতিন মাষ্টার বলেন, শ্রমিকলীগের সাবেক সভাপতি আহসান উল্লাহ মাষ্টারকে হত্যা করা হলে আন্দোলন সংগ্রাম করতে বাধ্য হই। ওয়ান ইলেভেনের পর নেত্রী গ্রেফতার হলে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। বাংলাদেশের যেখানে শ্রমিকলীগের কমিটি ছিল না সেখানে গিয়ে কমিটি করেছিলাম। নিজের টাকা খরচ করে সারা দেশে ভ্রমণ করে শ্রমিক লীগের সংগঠনকে দাঁড় করেছিলাম। দলের জন্য আমার পৈতৃক সম্পত্তিও বিক্রি করতে হয়েছে। প্রবীণ এ রাজনীতিবিদ বলেন, আন্দোলন সংগ্রাম করার সময় একাধিকবার পুলিশ আমার উপর হামলা চালিয়েছে। আমার মাথায় আঘাত করা হয়েছে। রক্তাক্ত করে গুরুতর আহত করা হয়েছে। হাসপাতালেও চিকিৎসার জন্য থাকতে হয়েছে। তবুও আমি রাজনীতি থেকে পিছপা হইনি। থানায় নিয়ে আটকিয়ে রাখা হয়েছিল, জেলও খেটেছি। পুলিশ কোমড়ে দড়ি বেধে মারধরও করেছে। সব মিলে আমি নির্যাতনের শিকার হয়েছি বার বার। দলীয় নেত্রীর উপর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আব্দুল মতিন মাষ্টার বলেন, আমি অসুস্থ হয়ে বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। তখন নেত্রী তৎকালীন শ্রমপ্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ানকে দিয়ে খোঁজ খবর রাখতেন । তিনি বলেন, জনগণের কাছে যারা ভালো সে লোকদের দিয়ে দল গঠন করলে দলটা ভাল চলে, ভাল চলবে। নেত্রী যদি আমাকে দিয়ে কোন কাজ করাতে চান আমি প্রস্তুত আছি। আমার বিশ্বাস নেত্রীর দোয়া যদি আমার উপর থাকে তবে যে দায়িত্বই দেয়া হোক না কেন? আমি সততার সঙ্গে পালন করতে পারব ইনশাল্লাহ। উল্লেখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এরপর ১০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভায় ৬১ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।