আন্তর্জাতিকখেলাধুলাজাতীয়বিনোদন

নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের ‘প্রথম’ সিরিজ ড্র

ইবাদত বল তুলে দিলেন আকাশে। মিডউইকেটে ল্যাথামের হাতে লোপ্পা ক্যাচ। রস টেলর নিজের টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ করলেন উইকেট নিয়ে। নিউজিল্যান্ড এক ইনিংস ও ১১৭ রানে দ্বিতীয় টেস্ট জিতে ১-১ করল সিরিজ। ক্রাইস্টচার্চে চিত্রনাট্যের শেষ দৃশ্য বিদায়ি নায়ক টেলরকে মুখ্য চরিত্র করে তোলাই ছিল ক্রিকেট-বিধাতার সুপ্ত বাসনা! মাত্র তিন বলে শূন্য রানে বাংলাদেশের শেষ ব্যাটার ইবাদতকে তুলে নিয়ে টেলর সেই চিত্রনাট্যের সমাপ্তি টানেন। কাল রাতে নিশ্চয় চমৎকার ঘুম হয়েছে তার।

 

তিনদিনে শেষ হওয়া ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের মধ্যদিয়ে ক্রিকেটের আদি সংস্করণ টেলরের বিদায়টা হলো স্মরণীয়। আট উইকেটে প্রথম টেস্ট জেতা বাংলাদেশ মঙ্গলবার হ্যাগলি ওভালে দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে যায় ২৭৮ রানে। আগেরদিন প্রথম ইনিংসে ১২৬ রানে অলআউট হয়ে ফলো-অনে পড়া বাংলাদেশ তিনশ’র কাছাকাছি যায় লিটন দাসের সেঞ্চুরির সহায়তায়। টেস্টে তার দ্বিতীয় শতরানের ইনিংস দিনের অন্যতম উল্লেখযোগ্য ঘটনা। কাইল জেমিসন চার ও নিল ওয়াগনার তিনটি উইকেট নেন।

বাংলাদেশ ১-১-এ সিরিজ অমীমাংসিত রাখার তৃপ্তি নিয়ে ফিরছে। তিন সংস্করণের ক্রিকেটেই নিউজিল্যান্ডের মাটিতে আগে কখনোই কোনো সিরিজ ড্র করতে পারেনি বাংলাদেশ। মুমিনুলরা গর্ব করতেই পারেন ‘প্রথম’-এর অংশীদার হয়ে। তবে গত সপ্তাহে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে যে বাংলাদেশকে দেখা গেছে, ক্রাইস্টচার্চে তার ছায়া হয়ে ছিল গোটা দল। স্বাগতিকদের দ্বিতীয়দফা ব্যাট করানোর জন্য যে রসদের প্রয়োজন ছিল, বাইশ গজে তা পরিলক্ষিত হয়নি মুমিনুলদের উইলোতে। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর নুরুল হাসানের ৩৬। ষষ্ঠ উইকেটে নুরুল-লিটন যুগলে ১০১ রান সেরা জুটি।

মুমিনুলরা ঈষৎ সান্ত্বনা পেতে পারেন লিটনের শতকে। প্রথম বাউন্ডারি পেতে তার লেগেছে ৪৬ বল। চা-বিরতির পর ভিন্ন মুডে দেখা যায় তাকে। ৬৪ বলে ৩৩। জেমিসনের এক ওভারে দুটি চার ও একটি ছয়ে ১৭ রান নেন লিটন। সেটি ৫৯তম ওভার। ট্রেন্ট বোল্টকে এক ওভারে চারটি বাউন্ডারি মারেন বাংলাদেশের ব্যাটার। সে সময় ১২ বলে ৩৫ রান করেন লিটন। ষষ্ঠ উইকেট জুটি ১০০ রান পার করে। শেষমেশ ১১৪ বলে ১০২ রান করে জেমিসনের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়লে লিটনের লড়াই শেষ হয়। তার আগে নুরুল হাসান (৩৬) মিচেলের শিকারে পরিণত হন।

৩৯৫ রানে পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে সতর্কতার সঙ্গে। দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও মোহাম্মদ নাঈম যত বল খেলেছেন, ছেড়েছেন তার চেয়ে বেশি। প্রথমে বিদায় নেন সাদমান (২১)। নাজমুল হোসেন তিনটি চার ও একটি ছয়ে ২৯ রান করে ওয়াগনারের শিকার হন। অভিষিক্ত নাঈম প্রায় আড়াই ঘণ্টা ক্রিজে কাটিয়ে ২৪ রান করেন। টেস্ট ক্রিকেটে টেলরের ১৬৩তম ক্যাচে মুমিনুলকে (৩৭) ফেরান ওয়াগনার। ইয়াসির আলী স্থায়ী হন মাত্র নয় বল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close