আইন ও অধিকারনারায়ণগঞ্জনারায়ণগঞ্জ সদরলেখা-পড়া
তোলারাম কলেজে মাদক, ইভটিজিং, সন্ত্রাস ও জঙ্গী বিরোধী সভা অনুষ্ঠিত
শনিবার (৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টায় সরকারি তোলারাম কলেজের পদ্মা মিলনায়তন ভবনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সরকারি তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ বেলা রাণী সিংহ। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মোহাম্মদ নাজমুল হাসান।
মতবিনিময় সভায় সরকারি তোলারাম কলেজের দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জীবন কৃষ্ণ মোদকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সরকারি তোলারাম কলেজের উপাধ্যক্ষ শাহ্ মো. আমিনুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনিচুর রহমান মোল্লাসহ সরকারি তোলারাম কলেজের শিক্ষকবৃন্দ।
এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মোহাম্মদ নাজমুল হাসান শিক্ষার্থীদের দিকনির্দেশনা ও অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য প্রদান করেন। পুলিশের এই কর্মকর্তার বিভিন্ন জ্ঞান মূলক প্রশ্নের জবাব দেয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহ দেয়ার জন্য ও তাদের ভবিষ্যতে এগিয়ে যাওয়ার জন্য, সব সময় পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ সময় উপস্থিত ২জন ছাত্রী ও ১জন ছাত্রকে জ্ঞানমূলক প্রশ্নের জবাব দেয়া তাদের পুরস্কিত করেছেন এডিশনাল এসপি মোহাম্মদ নাজমুল হাসান।
মোহাম্মদ নাজমুল হাসান বলেন, আজকের এই প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়েছে শুধু একমাত্র তাদের জন্য, যারা আগামীতে বাংলাদেশে বিভিন্ন সেক্টরে নেতৃত্ব দেবে।আগামী দিনে এই তরুনদের সচেতন করা, তারা যাতে বিপদগামী না হয়, তাদের দেশ প্রেম যাতে আমরা পজিটিভলি কাজে লাগাতে পারি, সেই জন্য আপনাদের কাছে আসা। বাংলাদেশে পুলিশ হলো বাংলাদেশের প্রধান আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। অতএব আমাদের সব সময় জনগণের পাশে থেকে কাজ করতে হয়। অনেকে পুলিশকে আতঙ্ক মনে করেন কিন্তু আসলে আমরা কেমন সেটা আপনাদের পাশে থেকে বুঝাতে চাই। যাতে করে পুলিশের জন্য মানুষের অহেতুক ভীতি কমে যায়।
তিনি আরও বলেন, তরুনরা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ভাবে অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের এই অপরাধের কারণে ধ্বংস হচ্ছে তাদের পরিবার। মেচুরিটির অভাবে তারা বিভিন্ন অপরাধের সাথে যুক্ত হচ্ছে, ধর্ষণের মতো অপরাধের সাথেও জড়িয়ে পড়ছে। যার ফলে, একসাথে ২টি পরিবার শেষ হয়ে যায় নিমিষেই। এছাড়া ভালো মেধাবী শিক্ষার্থীরা মাদকের সাথে জরিয়ে পড়ছে, ভালো কলেজ-ইউনিভার্টিতে চান্স পেয়েও তাদের কাছে এগুলো ভালো লাগে না। সেই ছেলে আছে বিপদগামীদের মধ্যে, সে সমাজের সম্পদ না হয়ে সে এখন সমাজের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটা সময় সে মাদককে খায় এবং মাদক তাকে খায়। তারা চাইলেও ভালো কিছু ভাব পারে না। মাদকে আশক্ত হয়ে বাবাকে খুন করে, মাকে খুন করে। মাদকের টাকা না পেয়ে, ওরা তাদের মাকে বোনকে বিক্রি করতে দ্বিধাবোধ করে না।
এছাড়া তিনি বলেন, মাদকের কারণে মনুষত্ব হারিয়ে ফেলছে, মোটরসাইকের জোরে চালানো, কানে দুল পরে হিরোইজম দেখাতে চায়, কেউ কেউ খারাপ ভাষা ইইজ করে স্টার্টনেস এর পরিচয় দিতে চায়। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি, আমার লক্ষ্য ছিলো আজকের অবস্থানে আসা। বিসিএস পরিক্ষায় আমার প্রথম চয়েজ ছিলো পুলিশ। তাই আজ আমি এই অবস্থানে আসতে পেরেছি। আমি কখনো মাদক সেবন করি নাই। আমি সিগারেট পান করি না। আমি কখনো অনিয়ম বা ক্ষমতার অপব্যবহার করি নাই। আর আমি মনে করি এটাই আসল হিরোইজম। কারণ আমার মা-বাব আত্মীয় স্বজন আমাকে নিয়ে গর্ব করতে পারে। আলোচিত হলি আর্টিজেনে যারা নিহত হয়েছিলো, তারা এই হিরোইজমে ভুগে ছিলো স্টুডেন্ট লাইফে। তারা কোন ধর্মের মধ্যে ছিলো না। কারণ কখনো কোন ধর্ম জঙ্গিবাদের কথা বলে না। তোমাদের কাছে একটাই প্রত্যাশা থাকবে ‘নিজে ভালো থাকো এবং পরিবারকে ভালো রাখো, দেশকে ভালোবাসো।
এ সময় সরকারি তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ বেলা রাণী সিংহ বলেন, আমি তোলারাম কলেজের ২৬ হাজার শিক্ষার্থীর যেমন অভিবাবক তেমনি আমি এই ২৬ হাজার শিক্ষার্থীর মা। আজ যে উপদেশ গুলো তোমরা পেয়েছো সেগুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করবে। পুলিশ তোমাদের বন্ধু তারা তোমাদের শত্রু নয়। এটাই রাখবে মাথায় সব সময়। তোমাদের কাছে প্রত্যাশা থাকবে তোমরা মোহে মোহগ্রস্থ হবে না।