Uncategorized

শ্রীলংকায় নিঃশেষের পথে জ্বালানি তেল, দেশজুড়ে হাহাকার

একদিন চলার মতো মাত্র জ্বালানি আছে। শ্রীলংকার জ্বালানি মন্ত্রী রোববার এমন কথা জানান। এর মাধ্যমে তিনি জানিয়ে দেন, শ্রীলংকায় সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে গাড়ির চাকাও। শ্রীলংকার জ্বালানি মন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসেকেরা বলেন, আমাদের হাতে আর মাত্র ৪ হাজার টন ফুয়েল আছে। শ্রীলংকায় একদিনে এরচেয়ে বেশি ফুয়েল প্রয়োজন হয়।

শ্রীলংকার স্মরণকালের ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট এখন অব্যাহত চাপের মুখে আছেন। এই দ্বীপ-রাষ্ট্রের জ্বালানি প্রায় ফুরিয়ে যাওয়ার পথে, কারণ তাদের আর জ্বালানি আমদানি করার মতো সামর্থ্য নেই।নগদ অর্থের অভাবে জ্বালানি তেল আমদানি করতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটি। এ সপ্তাহে দেশটির স্কুলগুলোতে ছুটি দিয়ে দেয়া হয়েছে এবং অতি জরুরী সেবা ছাড়া আর সবকিছুর জন্য জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।ফলে তেলের জন্য এখন হাহাকার অবস্থা।১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে কখনও এতোটা দুরাবস্থায় পড়েনি দেশটি। বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র সংকট বেসামাল করে তুলেছে দেশটির অর্থনীতিকে।

ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলংকায় জ্বালানি তেলের দাম বেড়েই চলেছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই দেশটিতে আরেকবার সবশেষ শনিবার দেশটির তৃতীয় বৃহত্তম জ্বালানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান লংকা আইওসি জানায়, প্রতি লিটার পেট্রলের দাম ২৫৪ রুপি থেকে বাড়িয়ে ৩০৩ রুপি করা হয়েছে।রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সিলন পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন অবশ্য এখনও তেলের দাম বাড়ায়নি।

দুই সপ্তাহ আগেও এই কোম্পানি পেট্রলের দাম ২৫ শতাংশ বাড়িয়েছিল। দাম বাড়ার পেছনে কোম্পানিটির বক্তব্য, ডলারের বিপরীতে রুপির মূল্য ৩০ শতাংশ কমে গেছে। এর ফলেই তেলের দাম বেড়েছে।

বৈদেশিক ঋণের ভারে জর্জরিত শ্রীংলকা। পরিস্থিতি এমন অবস্থায় ঠেকেছে যে তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারছে না। জিনিসপত্রের দাম এখন আকাশছোঁয়া। কাগজের অভাবে দেশটির স্কুল পর্যায়ের পরীক্ষা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। কারণ কাগজ আমদানি করার মতো বৈদেশিক মুদ্রা নেই।

জ্বালানী তেলের তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে দেশটিতে। তেল সংগ্রহের জন্য হাজার-হাজার মানুষ লাইনে ভিড় করছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের পেট্রোল পাম্পগুলোতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে সরকার। কারণ জ্বালানী তেল আমদানি করার জন্য বৈদেশিক মুদ্রা নেই শ্রীলংকার কাছে।

ইরানের কাছ থেকে জ্বালানী তেল আমদানি বাবদ ২৫ কোটি ডলার পরিশোধ করতে পারেনি শ্রীলংকা। এর বিনিময়ে প্রতিমাসে ৫০ লাখ ডলারের চা ইরানে রপ্তানি করবে শ্রীলংকা। এভাবে ধীরে ধীরে সে টাকা পরিশোধ করা হবে।

প্রেসিডেন্ট রাজাপাকশা এখন রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় জ্বালানি তেল কেনার জন্য প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে চিঠি লিখেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close