জাতীয়রাজনীতি

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত

উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বোর্ড

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা। সোমবার বিকালে শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করতে বৈঠকে বসে মেডিকেল বোর্ড। যত দ্রুত সম্ভব তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বোর্ড। একই সঙ্গে আজ (মঙ্গলবার) থেকে ধীরে ধীরে হাঁটার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল নয়। তার প্রেশার, কিডনিসহ অন্যান্য জটিলতা কমলে হার্টের বাকি দুটি ব্লকের চিকিৎসা শুরু করা হবে। সোমবার এভারকেয়ার হাসপাতালে মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক শেষে দুইজন চিকিৎসক জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক সুরক্ষায় আরও কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন চিকিৎসকরা। এর মধ্যে আগামী এক সপ্তাহ খালেদা জিয়াকে মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলে মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক। এতে লন্ডন ও আমেরিকা থেকে বিদেশি চিকিৎসকরা জুমে যোগ দেন। এছাড়াও খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমানও ছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক বলেন, মেডিকেল বোর্ড পরিবারের কাছে খালেদা জিয়ার সব শেষ শারীরিক অবস্থা অবহিত করেছে। সুপারিশ করেছেন যত দ্রুত সম্ভব হাই কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। যেখানে মাল্টিপুল চিকিৎসা সম্ভব। কারণ তিনি এখন যে সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তা দেশেই চিকিৎসা সম্ভব ছিল; কিন্তু এক চিকিৎসা করতে গিয়ে অন্যগুলো বেড়ে যায়। এতে ঝুঁকি থেকেই যায়। আবার বয়সেরও একটা ব্যাপার আছে। এ পর্যায়ে এসে ওনাকে ক্রিটিক্যালও বলা যাচ্ছে না, আবার ভালোও বলা যাবে না। সোমবার রাতেও খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের আরও কিছু পরীক্ষা করা হয়েছে। এভারকেয়ার ছাড়াও ল্যাবএইড হাসপাতালে পরীক্ষা করা হয়। পরে রেজাল্ট বিদেশি চিকিৎসকদের পাঠানো হয়। জানা যায়, বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী খালেদা জিয়ার জন্য বাসা থেকে রান্না করা খাবার নিয়ে আসা হয়। আপাতত স্যুপসহ তরল খাবারই দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজন ছাড়া তেমন কথা বলেন না। শরীর স্বাভাবিকভাবেই ক্লান্ত।

হঠাৎ অসুস্থ হওয়ায় গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে ভর্তি করা হয়। সেখানে অধ্যাপক ডা. শাহবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে। শনিবার খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হার্টে কয়েকটি ব্লক ধরা পড়ে। তার মধ্যে একটি ব্লক ছিল ৯৫ শতাংশ। সেটিতে রিং পরানো হয়েছে। গত বছরের এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর এ নিয়ে তাকে পাঁচ দফা হাসপাতালে ভর্তি করা হলো। এর আগে গত ৬ এপ্রিল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে একই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। খালেদা জিয়া পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ ও লিভার সিরোসিস ছাড়াও অনেক দিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close