মতামতসারাদেশ

ভৈরব-আশুগঞ্জ সেতু পারাপারে মানুষের দুর্ভোগ, সিএনজির বিকল্প বাহন চালুর দাবি

রিপোর্ট, রাফি তালুকদার : যোগাযোগের অন্যতম নগরী হিসেবে পরিচিত নদীবন্দর ভৈরব প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য প্রসিদ্ধ স্থান হলেও বর্তমানে মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন সরকার বন্ধ ঘোষণা করায় বিপাকে পড়েছে ভৈরব বাজারমুখী ব্যবসায়ী, হাসপাতালে আসা রোগী, কলেজ শিক্ষার্থী ও সাধারণ পথচারীরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ ও সারইল এবং নরসিংদী জেলার রায়পুরা ও বেলাব অঞ্চলের হাজার হাজার ব্যবসায়ী, ক্রেতা, রোগী, শিক্ষার্থী ও পথচারীরা মাত্র কয়েক কিলোমিটার সড়ক সেতু পাড় হতেই পড়তে হচ্ছে নানা ভোগান্তিতে। ভৈরব আশুগঞ্জ মেঘনা নদীর উপর নির্মিত সৈয়দ নজরুল ইসলাম সড়ক সেতু ও ভৈরব-রায়পুরা ব্রহ্মপুত্র নদের উপর নির্মিত সেতুর সহজ বাহন সিএনজি চালিত অটোরিক্সা বন্ধ থাকায় পণ্য পরিবহনে চরম বিপাকে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। সেই সাথে সাধারণ পথচারীরাও হেটে সেতু পাড় হতে গিয়ে ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছে। এদিকে ভৈরব দুর্জয় মোড় থেকে আশুগঞ্জ সেতু পারাপারের জন্য বাসের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয় এবং সময় বাচাঁতে পথচারী নারী পুরুষ মোটরসাইকেলে সেতু পার হতে হয়। তবে শিশু ও বয়ষ্ক মানুষজন কোনভাবেই মোটরসাইকেল সার্ভিসে সেতু পারাপারের বিষয়টিকে নিরাপদ মনে করছেননা। তাই বাধ্য হয়েই ভৈরব-আশুগঞ্জ বিআরটিসি বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঘন্টার পর ঘন্টা। এই সমস্যা দূরীকরণের জন্য ভৈরব-আশুগঞ্জ সেতু পারাপারে বিকল্প যানবাহনের দাবি করছেন ভৈরব বাজারমূখী ব্যবসায়ী, ক্রেতা, রোগী, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ পথচারীরা। ভূক্তভোগী ব্যবসায়ী ও পথচারীরা জানান, ভৈরব আশুগঞ্জের দূরত্ব মাত্র দেড় কিলোমিটার। মেঘনা নদীর উপর নির্মিত ব্রীজটি পাড় হওয়ার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা বাসের জন্য বসে থাকতে হয়। আবার দূরত্ব কম হওয়ায় মহাসড়কে চলাচলকারী দূরপাল্লার বাসে যাত্রী উঠতে পারেনা। বাধ্য হয়েই বিআরটিসি বাস ও মোটরসাইকেলে করে সেতু পার হতে হয়। তাছাড়া মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধ মানুষজন মোটরসাইকেলেও উঠতে পারেনা। আবার মোটরসাইকেলে সেতু পার হতে গিয়ে বিভিন্ন সময় হয়রানির শিকারও হতে হচ্ছে যাত্রীদের। ভৈরব বাজারে পণ্য আনা নেয়ার ক্ষেত্রেও ভোগান্তিতে পড়তে হয় ব্যবসায়ীদের। তাই ভৈরব বাজারমুখী ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা সংখ্যা দিনদিন কমে যাচ্ছে। যার ফলে, ভৈরব বাজার ব্যবসায়ীরা ক্রেতার অভাবে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তাদের দাবি তিন চাকার সিএনজির বিকল্প হিসেবে যদি লেগুনা সার্ভিস চালু করা হয় তাহলে সাধারণ পথচারী, ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের র্দূভোগ কমে যাবে। এই লেগুনা সার্ভিস চালু হলে অতিরিক্ত অর্থ ও সময় দুটুই বাঁচবে বলে তাদের দাবি। আশুগঞ্জ মানবিক সংগঠনের সভাপতি মো: আলাউদ্দিন আহমেদ জানান, আশুগঞ্জসহ অত্র এলাকার হাজার হাজার মানুষজন প্রতিদিন প্রয়োজনীয় কাজে ভৈরব বাজার, হাসপাতাল ও কলেজে যাতায়াত করে থাকেন। ব্যবসায়ী, রোগী ও শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ভৈরবে আসা যাওয়ায় ক্ষেত্রে সহজ পরিবহন না থাকায় সেতু পারাপারে নানান ভোগান্তি পৌঁহাতে হয়। ভৈরব আশুগঞ্জে বিআরটিসি বাসে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থেকে দেড় কিলোমিটার ব্রীজ পাড় হতে হয়। এছাড়াও মোটরসাইকেল রাইডে মহিলা, শিশু ও বয়স্কদের পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। তাই সিএনজি চালিত অটোরিকশা বন্ধ থাকায় বিকল্প পরিবহন চালু হলে সেতু পারাপারে যাত্রীদের ভোগান্তি অনেকটা কমে যাবে। ভৈরব বিআরটিসি বাস সার্ভিসের দায়িত্বে থাকা আল আমিন জানান, মহাসড়কে সিএনজি বন্ধ থাকার পর থেকে ভৈরব আশুগঞ্জে বিআরটিসি বাস চালু হয়। মোটরসাইকেল সার্ভিস থাকায় বাসে যাত্রী কম হয়। যাত্রী কম হওয়ার প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে এবং বিলম্বে বাস ছাড়তে হয়। দেড় কিলোমিটার সড়ক পাড় হতে যাত্রীদের কাছ থেকে ২০টাকা অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার বিষয়ে আল আমিন বলেন, সরকারি আইনে কিলোমিটার প্রতি আড়াই টাকা ভাড়ার নিয়ম থাকলেও না পোষার কারণে অতিরিক্ত ভাড়া নিতে হয়। এ বিষয়ে ভৈরব পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব ইফতেখার হোসেন বেনু বলেন, ভৈরব বাজার একটি ব্যবসায়ীক এলাকা। গত কয়েক বছর ধরে শুধুমাত্র ছোট ও সহজ যানবাহন না থাকার কারণে ভৈরব বাজারের ব্যবসা বাণিজ্য চরমভাবে ক্ষতি হচ্ছে। সরকারের নির্দেশনায় মহাসড়কে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা বন্ধ থাকায় বিকল্প হিসেবে ছোট যানবাহন চালু করা গেলে ভৈরব বাজরের ব্যবসা আগের মতো প্রাণ ফিরে পাবে। ঠিক তেমনি সাধারণ পথচারীরাও সড়কের নানান দুর্ভোগ থেকে স্বস্তি পাবে। ভৈরব-আশুগঞ্জ ও ভৈরব-বারৈচার দুপাড়ের মানুষের র্দূভোগ কমাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা জানান তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close