নারায়ণগঞ্জরাজনীতি
মানুষ শান্তিতে থাকতে চায়: শামীম ওসমান

রাস্তা-ঘাট, কালভাট, স্কুল-কলেজ হচ্ছে; এগুলো চাহিদা হতে পারে। তারচেয়েও বেশি প্রয়োজনীয় জিনিস আমি মনে করি, মানুষ দঁড়জা খুলে ঘুমাতে চায়। মানুষ শান্তিতে থাকতে চায়। ছেলে ঘর থেকে বের হলে টেনশন ফ্রি থাকতে চায়। এগুলো পুলিশের পক্ষে একা সম্ভব না, আমাদের পক্ষেও একা সম্ভব না। সকলে মিলে করলে অসম্ভবও না।
কাশিপুর ইউনিয়নে সার্বজনীন মিলন উৎসবে বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যায় কথা গুলো বলছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান।
এই মিলন উৎসবে কাশীপুরের বিশিষ্টব্যক্তিবর্গ, সর্বসাধারণ ও বিভিন্ন পর্যায়ের আমন্ত্রিত অতিথিদের অংশগ্রহণ করেন।
শামীম ওসমান তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাকে কাজে লাগান, হুকুমদেন, নির্দেশ দেন। কোথায় কি করতে হবে বলেন। আমি সব কাজ করতে পারবো কি না জানি না। তবে আপনারা সবাই পাশে থাকলে অনেক কিছুই করা সম্ভব।
প্রয়াত ভিপি আলমঙ্গীরের কথা স্মরণ করে শামীম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জ কলেজের ভিপি ছিল। সেদিনের ছেলে, আমার চোখের সামনে বড় হয়েছে। খুব ভালো বক্তব্য দিতেন। ফতুল্লায় আমাদের একটি দলীয় সভায় অংশ নিয়ে ৪০ মিনিট বক্তব্য রেখেছেন। যখন কেউ ৩০-৪০ মিনিট বক্তব্য রাখে, তার হার্ড খারাপ হওয়ার কথা না। অথচ, ফতুল্লার একটি সভা শেষে রাইফেল ক্লাবে আরও একটি সভায় অংশ গ্রহণের পর শুনেছি ‘আলমঙ্গীর আর নাই’। নিশ্বাস নিতে কষ্ট পাচ্ছি। সেই অনুষ্ঠান দ্রুত শেষ করেছি, কেন যেন মনে হচ্ছিল, আমার ডাক্তার দেখানো দরকার। যাই হোক তারপরেও আবার আপনাদের কাছে এসেছি।
শামীম ওসমান বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানটি আনন্দের, তারপরেও এখানে কষ্টের কথা বললাম। এই কারণে, আমরা কেউ চরস্থায়ী না। আমাদের সকলেই মারা যেতে হবে। আজকের এই অনুষ্ঠান তখনই সফল হবে, যখন সকলের সাথে সকলের একটি বন্ধন তৈরি হবে। মুরুবীরা নাই আজকে, কালকে আমরাও চলে যাবো। তবে, আমার যেটা মনে হয়, আজকে যারা এই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা। তারা উদ্যোগ নিয়েছেন? পনাদের ব্যাকাপ কলদিচ্ছেন, জাগো, ঘুম থেকে উঠো।
শামীম ওসমান আরও বলেন, আমি জানি না দুনিয়াতে কয়দিন আছি, কে কোন দল করেন, আমি জানি না। আমি একটি জিনিস বুঝি, ভালো কিছু করতে হলে, ভালো মানুষ দরকার। আমি পঞ্চায়েত ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থাপনাকে আমি পছন্দ করি। আমি চাই, এই পঞ্চায়েত ব্যবস্থাটা কাশিপুর থেকেই শুরু হক। যেখানে কোন সন্ত্রাস থাকবে না, মাদক থাকবে না, জমি দখল থাকবে না। ভূমিদস্যু থাকবে না। যেখানে সবাই সবাইকে সম্মান করবে। প্রতিটি সন্তান, তার বাবা মার মনের আশা পূরণ করবে। যেখানে ছেলে মেয়েরা বেড়িয়ে মুরুব্বীদের সবার আগে সালাম দেওয়ার প্রতিযোগীতা করবে, সবাই চেষ্টা করবে, আজকের দিনটা যাতে আমাদের সবচেয়ে ভালো দিন হয়। চাইলেই আমরা এমন একটা এলাকা গড়তে পারি। শুধু সকলের সহযোগীতা প্রয়োজন। আজকে এই মঞ্চে ওসি সাহেব বসে আছে। আমাদের দরকার হবে না পুলিশের। যদি আমরা সবাই মিলেমিশে থাকি, আমি আপনাদের কাছে, একটা জিনিস চাই। সেটা হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্টি, আমাদের কাছে কিন্তু আল্লাহ কিছু চায় না, চেয়েছে আমার জন্য, আমার থেকে চেয়েছে আপনার জন্য। চলুন, আমরা একে অপরের সহযোগীতা করি।
অনুষ্ঠানে খেলাধুলা, শিশু বিনোদন, তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, মিলনমেলা, ফটোগ্রাফি, গুণীজন সম্মাননা (মুক্তিযুদ্ধ, সমাজসেবা ও শিক্ষা-মানবসম্পদ উন্নয়ন), নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধি পরিচিতি, স্মৃতিচারণ, অভিজ্ঞতা বিনিময়, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজের আয়োজন করা হয়।