নারায়ণগঞ্জরাজনীতিসোনারগাঁও

সোনারগাঁয়ে নিত্যপণ্যের দাম কমানো দাবিতে বাসদের সমাবেশ ও মিছিল

প্রেস বিজ্ঞপ্তি: চাল, ডাল, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানো, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধ, গ্রাম ও শহরের সমস্ত গরীব মানুষকে রেশন প্রদানসহ নানা দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ সোনারগাঁ উপজেলা শাখার সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (২১ মার্চ) সকাল ১১ টায় মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় সমাবেশ ও এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

বাসদ সোনারগাঁ উপজেলা শাখার সমন্বয়ক বেলায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক সুলতানা আক্তার, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সোহেল, কাঁচপুর শিল্পাঞ্চল শাখার সহ-সভাপতি আনোয়ার খাঁন, বাসদ বন্দর শাখার সংগঠক আনিসুর রহমান।

নেতৃবৃন্দ বলেন, মানুষের খাবারের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় চাল, ডাল, ভোজ্যতেলের দাম উত্তরোত্তর বেড়ে নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে। প্রত্যেকটা নিত্যপণ্যেরই দাম বাড়ছে। সিলিন্ডার গ্যাসের দামও প্রতি মাসে বাড়ানো হচ্ছে। সরকার কয়েকটি পণ্যের শুল্ক প্রত্যাহার করেছে। এর সুফল খুব সামান্যই সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাবে। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে ন্যায্য মূল্যে নিত্যপণ্য দেয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু মানুষের আশায়
গুড়েবালি। বিভিন্ন পয়েণ্টে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হলেও কার্ডধারীরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে ৪৬০ টাকা দিয়ে দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি ডাল ও দুই কেজি চিনি পেয়েছে। যা বাজারমূল্যের বিবেচনায় মাত্র ১৫০ টাকার মত সাশ্রয় হয়েছে। সরকারের এত হাঁক ডাক দেয়ার পর, দীর্ঘ সময় ভোগান্তি পোহায়ে এই সামান্য প্রাপ্তিতে নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যের সময়ে দরিদ্র পীড়িত মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। মূল্য বৃদ্ধির মহাসংকট থেকে মানুষের জীবন বাঁচাতে গ্রাম ও শহরের গরীব, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত সমস্ত মানুষকে আর্মি রেটে রেশন প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, নিত্যপণ্যের দাম কেন বাড়ছে তার কোন সদুত্তোর সরকার দিতে পারছে না। মন্ত্রীরা মিডিয়ায় জনগণকে হেয় করে আবোল-তাবোল কথা বলছেন। করোনার ফলে সাধারণ মানুষের আয় কমেছে, চাকরি হারিয়েছে। এক মন্ত্রী বলছেন শ্রমিকরা নাকি প্রতিদিন ২০ কেজি চালের সমান মজুরি পায়। মিডিয়ায় এসেছে বাস্তবে বিভিন্ন পণ্যের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার কারণেই দাম বাড়ছে। এরসাথে সরকার দলীয় মন্ত্রী এমপিরা যুক্ত। তাই সরকার দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

নেতৃবৃন্দ বলেন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা চলছে। গ্যাস কোম্পানীগুলো ডাবল চুলা ২১০০ টাকা ও সিঙ্গেল চুলা ২০০০ টাকা করার প্রস্তাব সরকারের কাছে করেছে। গ্যাস কোম্পানিগুলোর দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে বিইআরসি গণশুনানি আহ্বান করেছে। বাস্তবে এ গণশুনানী মূল্য বৃদ্ধি করার সরকারের নাটক মঞ্চায়ন। আমাদের দেশের চাহিদা ৯০০ ঘনফুট গ্যাস। এর ১৫০ ঘনফুট এলএনজি হিসাবে বিদেশ থেকে উচ্চ মূল্যে আমদানি হচ্ছে। এখানেও ব্যবসায়ীদের মুনাফা করার ব্যবস্থা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ মতে আমাদের গ্যাস ক্ষেত্রগুলো থেকেই এগ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব। গ্যাসের মূল্য এ সময়ে বৃদ্ধি জিনিসপত্রের দাম আরেক দফা বৃদ্ধি ঘটাবে।

নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন উচ্ছেদ, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষায় আগামী ২৮ মার্চ সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী হরতাল আহ্বান করা হয়েছে। নেতৃবৃন্দ সর্বস্তরের মানুষকে এই হরতাল সফল করতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close