জাতীয়
‘জিনিসপত্রের দাম ইউরোপের চেয়ে কম বেড়েছে বাংলাদেশে’-তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ
দেশে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও তা ইউরোপের তুলনায় কম বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। রমজান মাস সামনে রেখে বিএনপি অসাধু ব্যবসায়ীদের পণ্যের মূল্য বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দ্রব্যমূল্য ইস্যুতে বিএনপির কর্মসূচির সমালোচনা করে ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছে। অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও পণ্যের মূল্য বেড়েছে। বাংলাদেশে শুধু কয়েকটি পণ্যের মূল্য বেড়েছে, তবে ইউরোপের চেয়ে অনেক কম বেড়েছে। কয়েকটি পণ্যের মূল্য বেড়েছে যেগুলো আমদানিনির্ভর পণ্য। সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমাদের সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে।’
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে একুশের বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএনপির ইন্ধনে ব্যবসায়ীরা পণ্যমূল্য বাড়াচ্ছে অভিযোগ করে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে খাদ্যপণ্যের কোনো সংকট নেই। যারা কৃত্রিমভাবে খাদ্যপণ্যের সংকট তৈরি করার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, একদিকে বিএনপি মাঠে কর্মসূচি দিয়েছে দ্রব্যমূল্যের বিষয়ে, আবার অসাধু ব্যবসায়ীদের বাতাস দিচ্ছে যেন পণ্যের মূল্য বাড়ায়, দেশে যেন কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যমূল্য বাড়িয়ে দেশবিরোধী কাজ করছে। একইসঙ্গে বিএনপিও দেশবিরোধী কাজ করছে। বিএনপি রমজানকে সামনে রেখে অসাধু ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দিচ্ছে পণ্যের মূল্য বাড়ানোর জন্য। আমরা নজর রাখছি। সরকার কিন্তু এই অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেবে করবে।’
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘ইউরোপ-আমেরিকাসহ উন্নত দেশগুলোতে আমরা দেখতে পাই, কোনো অনুষ্ঠান কিংবা পূজা-পার্বণের আগে পণ্যের মূল্য কমিয়ে দেওয়া হয়। আর রমজান এলে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা পণ্যমূল্য বাড়ানোর চেষ্টা করে। এটি প্রচণ্ড অসততা এবং জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। যারা এগুলো করবে, সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
বই পড়ার অভ্যাস ফিরিয়ে আনার তাগিদ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আজকের বাস্তবতায় মানুষের বই পড়ার অভ্যাস অনেক কমে গেছে। মানুষ আগের মতো বই পড়ে না। মানুষের অবসর কমে গেছে। বই পড়ার মতো সময় নেই। মানুষ শুধু ছুটছে। মানুষ অর্থের পিছনে ছুটছে, আবার অনেকে জীবনযুদ্ধে ছুটছে। আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। মানুষ যে অবসর সময়টুকু পায়, সেই অবসর সময়টুকু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম মানুষের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু বই পড়ার অভ্যাস আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। তা না হলে মানুষের মননশীলতা বিকশিত হবে না। শিশু-কিশোরদের সুকোমল বৃত্তিগুলো বিকশিত হবে না।’
নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনাসিয়াম মাঠে বই মেলার সমাপনী, একুশে স্মারক সম্মাননা পদক ও সাহিত্য পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মুমিনুর রহমান এবং বইমেলা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমদ।