এলপি গ্যাস, চাল, পিয়াঁজ, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং ব্যর্থ বাণিজ্যমন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সমাবেশ ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার আহবায়ক নিখিল দাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা কমিটির সদস্য সচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক সভাপতি সুলতানা আক্তার।
নিখিল দাস বলেন, নিত্যপণ্যে দাম দফায় দফায় বাড়ছে। সয়াবিন তেল লিটার প্রতি ১৬৮ টাকা, পিঁয়াজ প্রতি কেজি ৫৫ টাকা, চিনি ৮০ টাকা, ডাল ১০০ টাকায় বাজারে বিক্রি হচ্ছে। দেশে চালের সংকট নেই বলছে সরকার, অথচ মোটা চালও ৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারে এমন কোন পণ্য নেই যার দাম বাড়ছে না। এই ফেব্রুয়ারি মাসে এলপি গ্যাসের দাম ১২ কেজি সিলিন্ডারে ৬২ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, একদিকে করোনার ফলে সাধারণ মানুষের আয় কমেছে, চাকরি হারিয়েছে, আরেকদিকে উচ্চ নিত্যপণ্যের দামে মানুষ দিশেহারা। টিসিবির ট্রাক সেলের সামনে এখন নিম্নবিত্ত মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্ত মানুষরাও দাঁড়াচ্ছে। প্রতিদিন সামান্য কিছু সাশ্রয়ের আশায় ৭/৮ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ধাক্কাধাক্কি করে পণ্য ক্রয় করে নিম্ন আয়ের মানুষ। টিসিবির পণ্য কম থাকার কারণে প্রতিদিন প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ পণ্য না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। যেখানে সারাদেশে হাজার হাজার ভ্রাম্যমান ট্রাকের মাধ্যমে টিসিবি পণ্য সরবরাহ দরকার সেখানে তারা মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০টি ভ্রাম্যমান ট্রাকে পণ্য সরবরাহ করছে, তা একেবারেই অপ্রতুল। বাণিজ্যমন্ত্রী বলছেন, নিত্যপণ্যের দাম কমানো যাবে না। তাহলে বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকার দরকার কী? বাজার মনিটরিং করা এবং অসাধু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সরকারের তেমন কোন পদক্ষেপ নেই।
নিখিল দাস বলেন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। বিইআরসি বলেছে মার্চে গণশুনানি হবে। বিইআরসির এই নাটক মঞ্চায়ন বন্ধ করতে হবে। এ সময়ে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি জিনিসপত্রের দাম আরেক দফা বৃদ্ধি ঘটাবে। গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি কোনটার দাম বাড়ালে দেশের বাম ও গণতান্ত্রিক শক্তি তা প্রতিরোধ করবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। প্রতিদিন শহরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষ ছিনতাইকারীর কবলে পড়ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা নাই বললেই চলে। অথচ নিয়মিত আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং চলছে। এর কোন সুফল নারায়ণগঞ্জের জনগণ দেখছে না।
নেতৃবৃন্দ নিত্যপণ্যের দাম কমিয়ে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনা, ব্যর্থ বাণিজ্যমন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং গ্যাস, বিদ্যুৎ পানির মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধ করার দাবি করেন। নারায়ণগঞ্জ শহরে ছিনতাই বন্ধ করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার প্রশাসনের প্রতি আহŸান জানান।
