জাতীয়রাজনীতি

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবস্থা স্টেবল: মেডিকেল বোর্ড

দীর্ঘ ৮১ দিন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর বাসায় ফিরলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার ছাড়পত্র পাওয়ার পর হাসপাতালের নানা প্রক্রিয়া শেষ করে রাত পৌনে ৯টার দিকে গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজায়’ পৌঁছান।

এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তবে সেটি অপরিবর্তিত থাকবে কিনা- তা বলা যাচ্ছে না। করোনা সংক্রমণের কারণে হাসপাতালে স্বাস্থ্য ঝুঁকি চিন্তা করে বাসায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এভারকেয়ারে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানেই বাসায় তার চিকিৎসা চলবে। উন্নত চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড মনে করে তাকে দ্রুত বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন বলেও জানান এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

গত বছরের ১৩ নভেম্বর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের অধীনে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। তার শারীরিক সর্বশেষ অবস্থা জানাতে এভারকেয়ার হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে মেডিকেল বোর্ড। এতে অধ্যাপক ডা. ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী বলেন, আমরা অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছি, আপাতদৃষ্টিতে মেজর ব্লিডিংয়ের চান্স সম্ভবত থামানো গেছে। তারপর সিসিইউতে রেখে আমরা আরও ছয় দিন পর্যবেক্ষণ করি। তখনো দেখেছি, উনার আর ব্লিডিং হচ্ছে না। এরপর আমরা উনাকে শিফট করে কেবিনে নিয়ে আসি।

তিনি বলেন, একটা কথা স্পষ্ট বলে রাখা প্রয়োজন, উনার (খালেদা জিয়া) মূল যে অসুখ সেটার যে প্রসিডিউর হাই-প্রেসারের টোটাল সাপোর্টেশনের জন্য বাইপাস ট্রেন তৈরি করে দেওয়া, সেটা কিন্তু আমরা করতে পারিনি। আমরা যেটা করেছি, দৃশ্যমান বড় যে বেসিকগুলো ফেটে যাচ্ছিল সেগুলোকে ব্যান্ডিং করেছি, ব্লক করা হয়েছে। উনার অবস্থা স্টেবল আছে। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে আবার যে ব্লিডিং হবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

তিনি আরও বলেন, সারাদেশে করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ বেড়েছে। হাসপাতালে (এভারকেয়ার) জানুয়ারি মাসেই ৩৮০ জনের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এ অবস্থার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা চিন্তা করে এই মুহূর্তে বাসায় রেখেই (খালেদা জিয়ার) চিকিৎসা করা প্রয়োজন। এই সংক্রমণ যদি আবারও সৃষ্টি হয়, তাহলে এর ব্যবস্থাপনা জটিল ও কঠিন হয়ে যাবে। সেজন্য আমরা তাকে ডিসচার্জ করিয়েছি।

মেডিকেল বোর্ডের আরেক সদস্য ডা. একিউএম মহসীন বলেন, খালেদা জিয়ার প্রধান সমস্যা লিভার সিরোসিস। এই রোগের সর্বশেষ চিকিৎসা লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা। কিন্তু আপাতত তিনি সেই শারীরিক অবস্থায় নেই। আমি মনে করি এজন্য তার দেশের বাইরে যাওয়া উচিত।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদের সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- অধ্যাপক শামসুল আরেফিন, অধ্যাপক নুরুদ্দিন আহমেদ, ডা. জাফর ইকবাল, ডা. লুৎফর আজিজ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, ডা. শাহরিয়ার, ডা. আরমান রেজা, ডা. আল মামুম, ডা. বরকতদিদ্দন মোহাম্মদ সিদ্দিকী, ডা. আবু জাফর প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close