নারায়ণগঞ্জনির্বাচনী হালচালরাজনীতি
নাসিক ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে এগিয়ে দিনা ও মেঘলা

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : ঘনিয়ে আসছে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন।গত ৩০শে নভেম্বর বহুকাঙ্ক্ষিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়।ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে ১৬ জানুয়ারি। তফসিল ঘোষণার পরপরই নাসিক নির্বাচনের প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় পার করছে নিজ নিজ প্রচারণায়।কেউ কেউ আবার ব্যস্ত জনগণের মন যোগাতে চালাচ্ছে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড। থেমে নেই সাধারন কাউন্সিলর প্রার্থীর পাশাপাশি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। এবার আসন্ন নাসিক নির্বাচনে বেশ আলোচনায় রয়েছে নাসিক ৭,৮,৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড। জনমত জরিপে এই তিন ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনে এগিয়ে আছেন বর্তমান কাউন্সিলর বিএনপি নেত্রী আয়েশা আক্তার দিনা,এর পরপরই নাম উঠে এসেছে কাউন্সিলর প্রার্থী যুব মহিলা লীগের নেত্রী শারমিন শাকিল মেঘলার। ৩য় অবস্থানে রয়েছে কাউন্সিলর প্রার্থী তাসনুভা নওরীন ইসলাম ভুঁইয়ার নাম।সবশেষ আলোচনায় রয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর রেহেনা পারভীন। এছাড়াও আরও কিছু প্রার্থী রয়েছে যাদের ব্যপারে জনতার মতামত ‘এরা প্রতিবার দাঁড়ায় শুধু ভোট নষ্ট করার জন্য নিজের বাড়ির ভোটও ঠিকমতো পায় না’। জনমত জরিপে এই তিন ওয়ার্ড ঘুরে সাধারণ জনগণের কাছ থেকে জানা যায়, বিগত ২০১১ এর প্রথম সিটি নির্বাচনে আওয়ামিলীগ এর সমর্থিত প্রার্থী নারায়ণগঞ্জ মহানগর মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক রেহেনা পারভীন নির্বাচনে জয়ী হয়ে তেমন কোন কাজ করেনি। কাজ করেনি বললেই চলে।যে সকল কাজ করেছেন ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মরহুম আলা, ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল মোল্লা ও ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইস্রাফিল মূলত তারাই। পরবর্তীতে সাধারণ জনতা তাদের ভোটে বিএনপির প্রার্থী আয়েশা আক্তার দিনা কে ২০১৬ এর নির্বাচনে জয়ী করে।যেহেতু দিনা বিএনপি নেত্রী তাই কোন কাজ সেভাবে করতে না পারলেও মানুষের গ্রহনযোগ্যতা পেতে মানুষের কাছে কাছে থাকার চেষ্টা করছেন। এছাড়াও করোনাকালীন সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্রান ও সিটি কর্পোরেশন থেকে বরাদ্দকৃত ত্রান বিতরন করেন। অনেকে সমালোচনা করে বলেছেন উনাকে (দিনা) পাশ করিয়েছি ভোট দিয়েছি আগের দুঃখ মোচনের জন্য কিন্তু উনিও কোন কাজ করেনি শুধু প্রতিটি ওয়ার্ডে তার দলীয় বাহিনী নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন। করোনার সময়ে সরকারের ত্রান সকলের মাঝে সুষ্ঠুভাবে বন্টন না করে নিজ নেতা-কর্মীদের মাঝে বিতরন করেছেন ফটোশেসন করার জন্য। উনি মূলত ফটোশেসন কাউন্সিলর, তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ ও রয়েছে। তিনি ত্রান বিতরণের সময় ২০০ জনকে এনে ছবি তুলে ২০/৩০ জনকে ত্রান দিয়ে বিদায় করতেন।জন্ম নিবন্ধন ও বয়স্কভাতার জন্যও রয়েছে তার নিয়োজিত লোকদের বানিজ্য। বর্তমানে তিনি সকলের আলোচনায় প্রথমে রয়েছেন।
বর্তমান সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর দিনার পরেই ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডে আলোচনায় রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহবায়ক শারমিন শাকিল মেঘলা। মেঘলা এবার প্রথম সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। তিনি মূলত সমাজের নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে কাজ করে থাকেন। নারীদের সাবলম্বী করার জন্য বিভিন্ন প্রোগ্রাম আয়োজন করে থাকেন। এবার তিনি সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষনা দিয়েছেন। যদি দল থেকে সমর্থন দেয়া হয় তিনি নির্বাচন করবেন বলে জানা যায়। বর্তমানে এই প্রার্থী প্রচারণায় শীর্ষে রয়েছেন। বিগত কয়েক মাস ধরেই জনসংযোগে ব্যস্ত তিনি। তিনটি ওয়ার্ডের প্রতিটি ঘরে ঘরে তার প্রচারণা চালাচ্ছেন।করোনাকালীন সময়ে তিনি তার সংগঠন ও সাংসদ শামীম ওসমানের ত্রান এবং ব্যক্তি উদ্যোগে সাধ্যমত ত্রান বিতরন করেছেন। বিগত কাউন্সিলরদের বিভিন্ন কর্মকান্ডে অনেকেই নতুন এই মুখকে নির্বাচিত করার চিন্তাভাবনা করছেন। তবে তিনি দিনার পরে আলোচনায় শীর্ষে অবস্থান করছেন। এদিকে জরিপে ৩য় অবস্থানে আলোচনায় রয়েছেন গোদনাইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ভুইয়ার মেয়ে তাসনুভা নওরিন ইসলাম ভুঁইয়া। তিনি মূলত পারিবারিক উত্তসূরি হিসেবে বেশ কয়েকমাস আগেই নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।করোনা পরবর্তীতে ত্রান, অক্সিজেন সিলিন্ডার বিতরন করেছেন। তবে নির্বাচন কে সামনে রেখে জনসংযোগ তেমন না করলেও প্রতিটি এলাকায় তার নির্বাচনের ফেস্টুন লাগিয়ে নিজের প্রচার চালাচ্ছেন। তার নিজ বাড়িতে প্রতিটি ওয়ার্ডের মুরুব্বিদের নিয়ে বৈঠক করে নির্বাচন কাজ আগাচ্ছেন। এতে সফলতার পাশাপাশি সমালোচনার মুখেও পরেছেন নওরীন ভূঁইয়া। তার পরেও বেশ ভাল অবস্থানেও তিনি রয়েছেন। সর্বশেষ নাম উঠে এসেছে সাবেক কাউন্সিলর রেহেনা পারভিনের নাম। তাকে মাঠে খুব একটা প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে না তবে নির্বাচন করার কথা প্রকাশ করেছেন নির্বাচনের ব্যানার ফেস্টুন দিয়ে। তবে তিনি এবার কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন।এছাড়াও আরও কয়েকজন প্রার্থীর নাম উঠে এসেছে। সাধারণ জনগনের চাওয়া ”আমরা ভোট দিয়ে পুরুষ ও মহিলা কাউন্সিলর পাশ করাই, পুরুষের পাশাপাশি চাই যাতে মহিলা কাউন্সিলর ও যাতে কাজ করে ”।