নির্বাচনী হালচালমতামত
ইউপি নির্বাচনঃ সৎ ও যোগ্যদের নির্বাচিত করা প্রয়োজন

লেখকঃ ওলীউর রহমান
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হলো সৎ ও যোগ্য লোকদের নির্বাচিত করার মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে আদর্শ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার একটা সুযোগ। সমাজকে তৃণমূল পর্যায় থেকে নেতৃত্ব দেয়ার ও পরিচালনা করার জন্য বিশ্বস্ত নেতা নির্বাচনের মাধ্যম হলো ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। ইউনিয়ন পরিষদ হলো স্থানীয় সরকারেরর সর্বনিম্ন স্তর। প্রতি পাঁচ বছর পরপর দেশে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য এবং মহিলা সদস্যরা নির্বাচিত হন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং মেম্বাররা হলেন তৃণমূল জনপ্রতিনিধি। নির্বাচন যদি সুষ্ট ও স্বচ্ছ হয় তাহলে এর দ্বারা গণমানুষের চিন্তার প্রতিফলন ঘটে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সমাজের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়-দায়িত্ব পালন করেন। এ কারণে আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইউনিয়ন পরিষদের একজন চেয়ারম্যান বা মেম্বারের হাতে সমাজের অনেক দায়িত্ব থাকে। এক কথায় বলা যায় যে, ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বশীলরা যেভাবে অনেক ভাল কাজ করেন অনুরূপভাবে চাইলে তারা অনেক অন্যায় কাজও করতে পারেন। তাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং মেম্বার হিসাবে একজন আদর্শবান ব্যক্তিকেই নির্বাচিত করা প্রয়োজন।
আমাদের সমাজের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, মেম্বার এবং মহিলা সদস্যরা সাধারণত যে কাজগুলো করে থাকেন সে কাজগুলোর জন্য একজন সৎ ও যোগ্য মানুষের কতটুকু প্রয়োজন রয়েছে তা সংক্ষেপে আমরা তুলে ধরার চেস্টা করব।
১. আর্থ-মানবতার সেবা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ত্রাণ সহযোগিতা, রাস্তা ঘাট নির্মাণও মেরামতসহ সমাজের সামগ্রীক উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ্য থেকে যে বরাদ্দ আসে এবং ইউনিয়নের ভিতর থেকে বিভিন্ন প্রকার কর, রেট এবং ফি আদায় করা এবং এসব অর্থ ও বরাদ্দকে যথাযথভাবে ব্যয় করার জন্য অবশ্য একজন বিশ্বস্ত ও আমানতদার মানুষের দরকার। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রদত্ত সেবাগুলো মূলত সমাজের তৃণমূল পর্যায়ের লোকেরাই গ্রহণ করে থাকেন।এখন যদি চেয়ারম্যানের আসনে একজন সৎ ব্যক্তি না হন তাহলে শুধু ইউনিয়নের জনগণই ক্ষতিগ্রস্ত হবেননা বরং ক্ষতিগ্রস্ত হবে রাষ্ট্র। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এই জায়গাটি আজ অধিকাংশ অসৎ ও দুর্নীতিবাজ মানুষেরই দখলে।
২.ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং মেম্বাররা গ্রাম্য আদালত তথা শালিসের মাধ্যমে অনেক বিচার-আচার করে থাকেন, অনেক ঝগড়া-বিবাদ মীমাংশা করেন। এমনকি আমাদের সমাজের অধিকাংশ বিচার-আচার শালিসের মাধ্যমেই সমাধান হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রেও যদি চেয়ারম্যান মেম্বারগণ বিশ্বস্ত এবং আন্তরিক না হন তাহলে জনগণকে পদে পদে ভূগান্তির সম্মুখীন হতে হয়। বাস্তব অবস্থা হলো আমাদের সমাজের সামাজিক বিচার-আচারগুলোও দূর্নীতিবাজদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে এবং একারণে সাধারণ মানুষেরা জুলুমের শিকার হচ্ছে। এ কারণে দল, মতাদর্শ ও গোষ্ঠীগত চিন্তা না করে, একজন সৎ, যোগ্য ও জনদরদী ব্যক্তিকে নির্বাচিত করা সময়ের অপরিহার্য দাবি।