নারায়ণগঞ্জরাজনীতি

হরতাল সফল করতে নারায়ণগঞ্জ শহরে বাম গণতান্ত্রিক জোটের মশাল মিছিল

চাল, ডাল, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানো, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধ, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন উচ্ছেদ ও গণতন্ত্র-ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে সোমবার (২৮ মার্চ) বাম জোটের ৬ টা থেকে ১২টা অর্ধদিবস সর্বাত্মক হরতাল সফল করার আহ্বান জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরে মশাল মিছিল করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা।

 

রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এ উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ ও পরে শহরে মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

বাম জোটের সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক ও বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক নিখিল দাস। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা মন্টু ঘোষ, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্য সচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব,বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান টিপু, সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য রাশিদা আক্তার, গণসংহতি আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন,নারায়ণগঞ্জ জেলার নির্বাহী সমন্বয়ক অঞ্জন দাস।

নেতৃবৃন্দ বলেন, খাদ্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বি, সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে। সিলিন্ডার গ্যাসের দামও প্রতি মাসে বাড়ানো হচ্ছে। সরকার কয়েকটি পণ্যের শুল্ক প্রত্যাহার করেছে। এর সুফল খুব সামান্যই সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে। ৩০% কর কমলেও ভোজ্যতেলের দাম লিটারপ্রতি মাত্র ৮ টাকা কমে ১৬০ টাকা হয়েছে। যা এখনও মানুষ বাজারে পাচ্ছে না।

নেতৃবৃন্দ বলেন, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে পণ্য দেয়ার কেন্দ্রগুলোতে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হলেও কার্ডধারীরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে যে পণ্য পাচ্ছে তাতে মাত্র ১৫০ টাকার মত সাশ্রয় হয়েছে। কার্ড পেতেও অনেককে টাকা দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

 

সরকারের এত হাঁক ডাক দেয়ার পর, দীর্ঘ সময় ভোগান্তি পোহায়ে সামান্য প্রাপ্তিতে নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যের সময়ে দরিদ্র পীড়িত মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। নিত্যপণ্যের দাম কেন বাড়ছে তার কোন সদুত্তোর সরকার দিতে পারছে না। মন্ত্রী বলছেন মুক্তবাজার অর্থনীতিতে তাদের দাম বৃদ্ধি নিয়ে কিছু করার নেই। অথচ আমাদের সংবিধানে আছে পরিকল্পিত অর্থনীতি।

 

বাস্তবে সরকার পরিকল্পিত অর্থনীতি না করে মুক্তবাজার চালু করে সংবিধান লঙ্ঘন করছে। মিডিয়ায় এসেছে বাস্তবে বিভিন্ন পণ্যের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার কারণেই দাম বাড়ছে। এরসাথে সরকার দলীয় মন্ত্রী এমপিরা যুক্ত। তাই সরকার দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। মূল্যবৃদ্ধির মহাসংকট থেকে মানুষের জীবন বাঁচাতে গ্রাম ও শহরের গরীব, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত সমস্ত মানুষকে আর্মি রেটে রেশন প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি বলেন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা চলছে। গ্যাস কোম্পানিগুলোর দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে বিইআরসি গণশুনানি করেছে। দাম বৃদ্ধির গণশুনানির নাটক শেষে বিইআরসি ২০% গ্যাসের দাম এবং ১০৫ টাকা গ্যাসের চুলার দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন দুর্নীতি অনিয়ম বন্ধ করলে গ্যাসের দাম বাড়ানোতো লাগবেইনা বরং কমানো সম্ভব। নিত্যপণ্যের দাম কমানো ও গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির মূল্য বাড়ানোর অপতৎপরতা বন্ধ এবং ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন উচ্ছেদ, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষায় ২৮ মার্চ সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী হরতাল আহ্বান করা হয়েছে। নেতৃবৃন্দ সর্বস্তরের মানুষকে এই হরতাল সফল করতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close