জাতীয়নির্বাচনী হালচালরাজনীতি

৩০০ আসনেই ইভিএমে নির্বাচন চায় আওয়ামী লীগ

কাজী হাবিবুল আউয়ালের নির্বাচন কমিশনকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পক্ষে দৃঢ় অবস্থানের কথা জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসি আয়োজিত সংলাপে অংশ নিয়ে এ অবস্থানের কথা জানায় ক্ষমতাসীনরা।

বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাখঢাক করার কিছু নেই। দিস ইজ লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার। উল্লেখযোগ্য হারে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার বাড়াতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন দলগুলোর সঙ্গে কারিগরি বিষয়ে ভোটদান নিয়ে আলোচনার আয়োজন করেছে। আমাদের আমন্ত্রণ জানানোয় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আপনাদের ধন্যবাদ।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মনে করে সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের জন্য ইসির গ্রহণযোগ্যতা, নিরপেক্ষতা ও সক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া ইসির দায়িত্বশীল নিরপেক্ষ আচরণ, সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ইভিএমে ভোটগ্রহণের পদ্ধতি বৃদ্ধি করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের বক্তব্যটি লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার। আগেও আমরা ইসিকে বলেছিলাম। এখানে রাখঢাক করার কিছু নেই। আগামী নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার বাড়াতে হবে।’

এ ছাড়া বিতর্কিত কাউকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ না দেওয়া, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের রিটার্নিং অফিসার থেকে পোলিং অফিসার নিয়োগসহ একগুচ্ছ দাবির কথা বলেন সেতুমন্ত্রী।

আজকের সংলাপের জন্য ১৩টি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণপত্র দেয় ইসি। এগুলো হলো- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল-এমএল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট।

বিকাল ৩টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ ১০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইভিএম সংক্রান্ত সংলাপে বসে ইসি।

সংলাপের শুরুতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিপক্ষেই বেশি কথা হয়েছে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

সিইসি বলেন, ‘আগে আমরা দুই দফা সংলাপ করেছি। অনেকেই ইভিএমের পক্ষে বলেছেন। অনেকে সলিউশন দিয়ে বলেছেন, আরও উন্নত প্রযুক্তির ইভিএম যদি কেনা যায়, তাহলে আরও ভালো হয়। আবার অনেকে সরাসরি বলেছেন, তারা ইভিএমে ভোটগ্রহণ হলে নির্বাচনে যাবেন না। আমরা আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেব। তবে কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন করব, সেটা আমাদেরই (ইসি) সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা যখন দায়িত্ব নিই, কিছুদিন পর থেকেই ইভিএম নিয়ে কথাবার্তা পত্রপত্রিকায় চাউর হয়েছিল। এর বিপক্ষেই বেশি কথাবার্তা হয়েছে। শুরু থেকে ইভিএম সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিল না। ব্যক্তিগত ধারণাও ছিল না। এরই মধ্যে ইভিএম নিয়ে অনেক কাজ করেছি। এখন মোটামুটি ধারণা আছে।’

তিনি বলেন, ‘আজ বড় দলের অনেকেই এসেছেন। মন্ত্রী (সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের) স্বয়ং নিজেই এসেছেন, যেটা আমি প্রত্যাশাও করিনি। আপনি এসেছেন, আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আজকের আলোচনাটা ইভিএমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। আপনারা ইভিএমের পক্ষে-বিপক্ষে বলতে পারেন। আপনাদের কথা আমরা শুনব। আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী সময়ে বস্তুনিষ্ঠ সিদ্ধান্তে উপনীত হব।’

উল্লেখ্য, এর আগে ১৯ ও ২১ জুন দুই ধাপে ২৬টি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এরমধ্যে ১৮টি দলের নেতারা ইসির সংলাপ অংশ নেন। তবে ইসির ডাকে সাড়া দেয়নি বিএনপিসহ আটটি দল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close