নারায়ণগঞ্জফতুল্লা

ফতুল্লা স্টেডিয়াম সড়কে বাতি নেই, বাড়ছে অপরাধের ঘটনা

খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম সড়কের মোড়ে রিকশা ইজিবাইকের ছড়াছড়ি, মানুষের কোলাহল। তবে সন্ধ্যার পর সড়ক ধরে একটু এগিয়ে যেতেই সড়কটি যেন নিস্তব্দ, ঘুটঘুটে অন্ধকার।

এই অন্ধকারকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেই খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম থেকে পিলকুনি সড়কে বাড়ছে অসংখ্য অপরাধ। ছিনতাই থেকে হত্যার মতো ছোট-বড় একাধিক ঘটনা ঘটলেও টনক নড়েনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম থেকে পিলকুনি সড়কটি ফতুল্লার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হতেই সড়কে সৃষ্টি হয় ভুতুরে পরিবেশের। সড়ক থেকে একটু সামনে এগুতেই স্থানীয় কবরস্থান, মাদরাসা সহ রয়েছে আইসিসি অনুমোদিত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মাঠ খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম।

শিল্পাঞ্চল হওয়ায় লক্ষ লক্ষ মানুষ এই এলাকায় বসবাস করে। তাদের অধিকাংশ মানুষ দৈনন্দিন যাতায়াতে এই সড়ক ব্যবহার করে। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই এ সড়কে নিরাপত্তা নিয়ে উঠে প্রশ্ন। রাত ঘনিয়ে এলেই সড়কটি ছিনতাইকারী ও মাদকসেবীদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠে।

সন্ধ্যার পর ফতুল্লার পাড়া মহল্লার সড়কে তো বটেই, বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোও অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। যার মধ্যে অন্যতম খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম থেকে পিলকুনি সড়কটি। সড়কের শুরু থেকে পাঁচশ মিটারের মধ্যে কোন বাতি নেই।

এরপরবর্তীতে সড়কের পাশের দোকানের আলোয়  মানুষ চলাচল করেন। রাত ৯টা-১০টার পরে দোকান বন্ধ হতেই, সড়কটিতে বিরাজ করে ভুতুড়ে পরিবেশ। সড়কের পাশ্ববর্তী বাড়িগুলোতেও চোর-ছিনতাইকারীরা প্রায়ই মানুষের ওপর চড়াও হয়। এছাড়াও তালিকায় রয়েছে নির্মম হত্যাকান্ডের মতো বিভিন্ন মর্মান্তিক ঘটনাও।

তক্কার মাঠের কাছাকাছি যেতেই দেখা যায়, চৌরাস্তার মোড়ে সড়কবাতি আছে, কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। এরপর সামনে আর কোন আলোর দেখা মিলে না। গত ১৬ জুন দিবাগত রাতে পিলকুনি এলাকায় মোল্লাবাড়ির সামনে আনোয়ার হোসেন নামক চালককে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর তার ইজিবাইক ছিনতাই করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার একজন রিকশাচালক বলেন, এই এলাকায় প্রায় সময় একাধিক চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ছিনতাইকারীরা আমার মতো রিকশাচালক আর ইজিবাইক চালকদের বেশি টার্গেট করে।

যে সড়কে লাইট থাকে না, মানুষের চলাচল কম থাকে ওইখানে ওরা বেশি ছিনতাই করে। দুই মাস আগে আমার রিকশাডাও চুরি করছে। কিছু গ্যারেজমালিকরা চোরের সরদারদের মানুষগো চিনে। রিকশা হারাইয়া আমিও যোগাযোগ করছিলাম। আমি দেড়হাজার টাকা খরচ করছি, তাও আমার রিকশাডা আনতে পারি নাই।

সড়কটি ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। সড়ক বাতির বিষয়ে এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টুর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি ফোনটি ধরেননি।

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফা জহুরার সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম থেকে পিলকুনি সড়কটি মানুষের যাতায়াতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই সড়কে যে বাতি নেই এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। মানুষের নিরাপত্তার তাগিদে সড়কে বাতি লাগানোর বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close