খেলাধুলা

অবশেষে জয়ের দেখা পেল অস্ট্রেলিয়া

হ্যাটট্রিক হারের পর অবশেষে জয়ের দেখা পেলো অস্ট্রেলিয়া। পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের চতুর্থটিতে ১৮ ওভার ৬ বলে ৩ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁঁছে যায় অজিরা। যদিও অস্ট্রেলিয়ার এই সান্ত্বনার জয়ের লড়াইয়ে সাকিবের একটি ওভার ছাড়া পুরো ম্যাচে নিয়ন্ত্রণই ছিল টাইগারদের হাতে।

রপুর শেরে বাংলায় রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে অজি অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েডকে (২) এলবিডাব্লিউ করেন মেহেদি হাসান। চতুর্থ ওভারেই রূদ্ররূপে দেখা দেন ড্যান ক্রিশ্চিয়ান। সাকিবের এক ওভারে পাঁচ ছক্কা মারেন। প্রথম তিন বলে টানা তিন ছয়ের পর চতুর্থ বল ডট। পঞ্চম ও ৬ষ্ট বলে আরও দুটি ছক্কা হজম করেন সাকিব। এর আগে মিরপুরেই ২০১৯ সালে রায়ান বার্ল সাকিবের এক ওভারে ৩০ রান নিয়েছিলেন। তবে সেবার অবশ্য তিন ছক্কার সঙ্গে সাকিব তিনটি চার হজম করেন। ক্যারিয়ারে এই প্রথমবার তিনি এক ওভারে ৫টি ছক্কা খেলেন। পরের ওভারেই অপর ওপেনার বেন ম্যাকডারমটকে এলবিডাব্লিউ করেন নাসুম আহমেদ। ভাঙে ৪৪ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি। ৬ষ্ঠ ওভারে পাঁচ ছক্কা মারা ক্রিশ্চিয়ানকে থামান মুস্তাফিজ। তিনি ১৫ বলে ১ চার ৫ ছক্কায় ৩৯ রানের ঝড় তুলে শামীম হোসেনের তালুবন্দি হয়ে ফিরেন।

৮ম ওভারে সাকিব বোলিংয়ে ফিরে শেষ বলে মোইজেস হেনরিক্সকে (৪) রান-আউট করেন। দশম ওভারে আবারও বোলিংয়ে এসে শিকার ধরেন দ্য ফিজ। ৬ বলে ১ রান করে ফিরেন অ্যালেক্স ক্যারি। লেগ বিফোরের বিপক্ষে রিভিউ নিয়ে লাভ হয়নি। ৬৩ রানে অজিদের ইনিংস অর্ধেক শেষ হয়। অজিদের ইনিংসের ৬ষ্ঠ আঘাত হানেন মেহেদি। ভালো ফর্মে থাকা মিচেল মার্শকে (১১) তিনি বোল্ড করে দেন। ৬৫ রানে অজিদের ৬ উইকেট নেই হয়ে যায়। জমে ওঠে ম্যাচ। শেষ ৭ ওভারে প্রয়োজন হয় ২৪ রানের। ১৪তম ওভারে নাসুমকে ছক্কা মেরে স্কোর এগিয়ে নেন অ্যাস্টন আগার। ১৬তম ওভারে এসেই আগারের কাছে বাউন্ডারি হজম করেন সাকিব। শরীফুলের করা ১৮তম ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি মেরে দলকে জয়ের আরও কাছে নিয়ে যান আগার। পরের বলেই ২৭ বলে ২ চার ১ ছক্কায় ২৭ রান করা আগারের ক্যাচ অসাধারণভাবে তালুবন্দি করেন শামীম। মুস্তাফিজের করা ১৯তম ওভারের শেষ বলে ৩ উইকেটে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। আজও ৪ ওভারে ৯ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ। তবে সাকিব ৪ ওভারে ৫০ রান দিয়ে উইকেট শূন্য থাকেন। তার এক ওভারে ৫ ছক্কা হাঁকান ডেন ক্রিস্টিয়ান।

এর আগে, সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিপর্যয়ে মুখে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৪ রান করে স্বাগতিক বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে মোহাম্মদ নাঈম ও সৌম্য সরকার মিলে ৩.৩ ওভারে ২৪ রান তুলে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেন। তবে হ্যাজেলউডের শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ৮ রান করে আউট হয় সৌম্য সরকার।

৪ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। দলীয় ৪৮ রানে সাকিব আল হাসান হ্যাজেলউডের বলে উইকেটরক্ষক ম্যাথিউ ওয়েডকে ক্যাচ দেন। ২৬ বলে ১৫ রান করেন তিনি। আর ১১তম ওভারের শেষ দুই বলে দলীয় ৫১ রানের মাথায় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও নুরুল হাসান সোহানকে হারায় বাংলাদেশ। দুজনকেই শূন্য রানে এলবি করে পরের হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান স্পিনার মিচেল সোয়েপসন। তবে নিজের পরের ওভারে প্রথম বলে কোনো উইকেট না পাওয়ায় তা আর হয়নি।

পর পর দুই ওভারে নাঈম ও আফিফ হোসেনকে হারিয়ে আরও বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ১৫তম ওভারে সোয়েপসনের তৃতীয় শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর করা নাঈম। ৩৬ বলে ২টি চারে ২৮ করেন তিনি। আর পরের ওভারে ১৭ বলে ২০ রান করা আফিফ অ্যাশটন অ্যাগারকে উইকেট দিয়ে আসেন। তরুণ প্রতিভাবান শামীম হোসেনও কিছু করতে পারেননি। ব্যক্তিগত ৩ রানে অ্যান্ড্রু টাইয়ের বলে অ্যালেক্স ক্যারিকে ক্যাচ দেন।

তবে শেষদিকে এসে টাইগারদের ১০০ রানের কোটা পূরণ করতে সাহায্য করেন মেহেদী হাসান। তিনি ১৬ বলে একটি চার ও একটি ছক্কায় ২৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে টাইয়ের শিকার হন তিনি। ইনিংসের শেষ বলে টাইয়ের তৃতীয় শিকার হন শরিফুল ইসলাম।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close