আন্তর্জাতিক
ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ প্রবল শক্তি নিয়ে উপকূলের দিকে এগোচ্ছে
আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ প্রবল শক্তি নিয়ে উপকূলের দিকে এগোচ্ছে। এর প্রভাবে সাগর উত্তাল। আগামী বৃহস্পতিবার বিকালে ভারতের গুজরাট এবং পাকিস্তানের করাচি উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে বলে আবহাওয়া পূর্বাভাসে রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে জরুরি সভা ডেকেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সময় বাড়ার সঙ্গে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’। আবহাওয়াবিদরা ধারণা করছেন, ১৫ জুন নাগাদ গুজরাটের সৌরাষ্ট্র এবং কচ্ছ জেলার উপকূলবর্তী অংশে তাণ্ডব চালিয়ে এগিয়ে যাবে পাকিস্তানের দিকে। এ অবস্থায় সতর্কতা জারি করেছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)। কচ্ছ, জামানগর, মোরবি, গির সোমনাথ, পোরবন্দর এবং দেবভূমি দ্বারকা জেলায় আজ মঙ্গলবার থেকে ১৫ জুন ভারি বৃষ্টিপাত এবং প্রবল বাতাস বয়ে যাবে। গতি হতে পারে ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার।
ঘূর্ণিঝড়ের আগে নিয়মানুযায়ী, কান্দলার বন্দর থেকে সোমবার ছয়টি জাহাজ সরে গেছে। এ ছাড়া আরও ১১টি জাহাজ সমুদ্রে চলে যাবে।
এদিকে দ্রুত দিক পাল্টানোয় ঘূর্ণিঝড়টি সরাসরি পাকিস্তানের করাচিতে আঘাত হানবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির সিন্ধুপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলী শাহ। তবে করাচিতে ক্লাউডবার্স্ট হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে সোমবার করাচিতে এক সংবাদ সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলী শাহ বলেন, ‘যেহেতু ঘূর্ণিঝড়টির দিক পরিবর্তিত হচ্ছে— এটি সরাসরি করাচিতে আঘাত হানবে না। তবে ঝড়ো বাতাস ও ভারি বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হবে। এক ঘণ্টার মধ্যে ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। ২০২২ সালে যে তীব্রতার ক্লাউডবার্স্ট দেখা গিয়েছিল সেটি ঘটবে।’
ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী পাঁচ দিন গুজরাটে ঝড়বৃষ্টি ও বজ্রপাত হবে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে তিথাল সৈকতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৈঠকে দুর্যোগ মোকাবিলায় এবং সম্ভাব্য ক্ষতি রুখতে প্রশাসনের তরফে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা সবিস্তারে প্রধানমন্ত্রীকে জানান সরকারি কর্মকর্তারা।
জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, ‘বিপর্যয়’-এর জেরে মুম্বাই ও মহারাষ্ট্রের নানা এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে মুম্বাই বিমানবন্দরের একাধিক বিমান বাতিল করে দেওয়া হয়। ‘বিপর্যয়’ মোকাবিলায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে পাকিস্তান সরকারও। সিন্ধু ও বেলুচিস্তান প্রদেশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সিন্ধু ও মাকরানের উপকূলে আজ মঙ্গলবার থেকে ঝড়বৃষ্টি হতে পারে। দুই প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরা জরুরি বৈঠক করেছেন এবং উপকূলীয় এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
সূত্র : এনডিটিভি ও ডন