নারায়ণগঞ্জরাজনীতি
স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবসে বিভিন্ন দাবিতে নারায়ণগঞ্জ শহরে ছাত্র সমাবেশ

স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে ছাত্র সমাবেশ ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার (১৪ ফেক্রুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এ ছাত্র সমাবেশ ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশের পূর্বে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবসে নিহতদের স্মরণে শহিদ মিনারে দুই সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পন করে। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি শুভ বণিকের সভাপতিত্বে ছাত্র সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মুন্নি সরদার, সহসভাপতি রিনা আক্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, ছাত্র ইউনিয়নের জেলার সহ-সাধারণ সম্পাদক সংহতি ঘোষ রমা, সাংগঠনিক সম্পাদক ইমতিয়াজ আহম্মেদ অয়ন্ত।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৯৮৩ সালে স্বৈরাচারী এরশাদ শাসনামলে মজিদ খানের শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়। এ শিক্ষানীতিতে শিক্ষার ব্যয় বৃদ্ধির ও শিক্ষাকে সাম্প্রদায়িক মোড়কে আবৃত্ত করার পরিকল্পনা করা হয়। যা ছিল বাস্তবে পাকিস্থানি আমলের এস এম শরীফ কমিশনের শিক্ষার অনুরূপ। মজিদ খানের শিক্ষানীতি বাতিলের দাবি তুলে সেদিন ছাত্র আন্দোলন গড়ে উঠে।
১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩ সালে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। কর্মসূচি পালনকালে এরশাদ সামরিক জান্তা ছাত্রদের উপর গুলি চালায়, এতে জাফর, জয়নাল, কাঞ্চন, দীপালী সাহাসহ অনেক ছাত্র মৃত্যুবরণ করে। এরপর থেকে দেশের ছাত্র সমাজ ১৪ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসাবে পালন করে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, আন্দোলনের মুখে মজিদ খানের শিক্ষানীতি বাতিল হলেও বর্তমানে অন্য মোড়কে একই ধরনের শিক্ষানীতি আমাদের দেশে চলমান। শিক্ষার ব্যয় বেড়ে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। ছাত্ররা পরীক্ষায় পাশ করে ঠিকই কিন্তু শিক্ষার মান খুবই নিম্নমুখী। সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মৌলবাদী সংগঠনের পরামর্শ মতো পাঠ্য বই থেকে রবীন্দ্র, নজরুল, শরতের মতো সাহিত্যিকদের লেখা বাদ দিয়ে পাঠ্যবইয়ে সাম্প্রদায়িক বিষয় সন্নিবেশিত করেছে।
করোনাকালে দীর্ঘ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পর চালু হলেও এখন আবার বন্ধ করা হয়েছে। সমস্তকাজ চললেও কেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ তা বোধগম্য নয়। করোনাকালে সাধারণ মানুষের আয় কমে গেছে। আর্থিক কারণে অনেক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন শেষ হয়ে গেছে।
সরকার অনেক ক্ষেত্রে প্রণোদনা দিলেও ছাত্র ও শিক্ষকদের জন্য প্রণোদনা দেয়নি। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া, করোনাকালে শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি মওকুফ করা এবং শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ও সাম্প্রদায়িকীকরণ বন্ধের দাবি জানান।