নারায়ণগঞ্জ

জীবাশ্ম জ্বালানি ও অন্যান্য জলবায়ু বিধ্বংসী বিনিয়োগ বন্ধের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ ১৪ জুন ২০২৩, নারায়ণগঞ্জ:
দ্রুততম সময়ে মুজিব জলবায়ু সমদ্ধিৃ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে এবং পরিবেশ, জীবন-জীবিকা ও শ্রম-অধিকার এবং স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতার ভিত্তিতে ন্যায্য ও সমতা ভিত্তিক রূপান্তর নিশ্চিত করার দাবীতে বাংলাদেশ বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্মজোট (বিডবলুজিইডি), উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন) এনজিও ফোরাম অন এডিবি, দি আর্থ ও জাতীয় যুব প্লাটফর্ম ‘ইয়ুথ ফর কেয়ার’ এর আয়োজেন এক অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মেঘনাঘাট ৭৫০ মেগাওয়াট এলএনজি -ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এর সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে বলেন, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বৈদেশিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের গ্যাস সঙ্কট ও এলএনজি’র অনিশ্চয়তা সম্পর্কে জানার পরও এডিবি ২০১৯ সালে ভারতের রিলায়েন্স গ্রুপকে মেঘনাঘাট ৭৫০ মে গাওয়াট এলএনজি-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য ২ হাজার ১১৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা ঋণ দেয়।

১৯৭৩ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এডিবি বাংলাদেশে ৩৩.৬৬ বিলিয়ন অর্থায়ন করেছে। এরমধ্যে সবথেকে বেশী অর্থায়ন করেছে জ্বালানি খাতে যা ৬.৫০ বিলিয়ন ডলার যা ৬৮ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকার সমতূল্য। এরপর রয়েছে পরিবহণ ও যোগাযোগ খাতে (৬৮,৪৫২ কোটি) এবং বাণিজ্য খাত (৪১,৭৪৯ কোটি)। প্রথম বিনিয়োগ থেকে গত ৫০ বছরে এডিবি বাংলাদেশে প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে গ্যাস-সহ অন্যান্য জীবাশ্ম জ্বালানি অর্থায়ন করে আসছে। এছাড়া এডিবি বরাবরই জ্বালানি খাতে বেসরকারি করণের উপর গুরুত্ব দেয়ার ফলে সরকারের ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধের পরিমাণ বেড়েছে যা জাতীয় অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে ।

এলএনজি সরবরাহ করা গেলে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রায় ৫ গুণ বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে হবে। তদুপরি, বিদ্যুৎ উৎপাদিত হোক বা না হোক, এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য সরকারকে প্রতিবছর ১ হাজার ৯৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হতে পারে। এ ধরনের প্রকল্পগুলো বায়মণ্ডলে বিপলু পরিমাণে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন করছে। এছাড়া স্থানীয় পরিবেশ ও জীবন-জীবিকার ক্ষতি সাধনের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতির উপরও নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করছে । বাংলাদেশ সরকার ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে মন্ত্রী পরিষদ এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথনকশা অনমুমোদন করেছে। মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা অনুসারে সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ, ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ ও ২০৫০ সাল নাগাদ শতভাগ নবায়ন যোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করবে। এ জন্য জরুরি ভিত্তিতে যথাযথ অর্থায়ন, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও নীতিগত সহায়তা দরকার। কিন্তু এডিবি’র জ্বালানি নীতি অনুসারে ব্যাংকটি জীবাশ্ম গ্যাস-সহ অন্যান্য ভুল-সমাধান যেমন তরল হাইড্রজেন, অ্যামোনিয়া ও কার্বন-আটক ও সংরক্ষণ (CCS)-এর মতো প্রতারণামূলক প্রযুক্তি অর্থায়ন করে যাবে।
এ অবস্থায়, আমরা দাবি জানাচ্ছি যে, এডিবিকে অবশ্যই : ক) জীবাশ্ম জ্বালানি ও অন্যান্য প্রতারণামলূক বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে ; খ) দ্রুততম সময়ে মুজিব জলবায়ু সমদ্ধিৃ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করতে হবে ; এবং গ) পরিবেশ, জীবন-জীবিকা ও শ্রম-অধিকার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ভিত্তিতে ন্যায্য ও সমতা ভিত্তিক রূপান্তর নিশ্চিত করতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close