নারায়ণগঞ্জরাজনীতি

নারায়ণগঞ্জের ৯০ শতাংশ কাজ আমাদের হাত দিয়ে হয়েছে-শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, চারিদিকে গন্ধ পাচ্ছি। আগের থেকেই আমি গন্ধ পাই এবং যা বলি তা হয়। জানি গতকাল গাজীপুরে কোথায় মিটিং হয়েছে। জানি নারায়ণগঞ্জে কোথায় মিটিং হয়েছে। এই নারায়ণগঞ্জে খান সাহেব ওসমান আলীর বাড়িতে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল। আপনারা যদি খেলতে চান। আসেন খেলি, আমরাও খেলতে চাই।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ৪৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শায়েস্তা খান সড়কে সরকারি গণগ্রন্থাগারে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

শামীম ওসমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে একান্তে কিছু জিনিস চেয়েছিলাম। তিনি বললেন তুমি কি চাও। আমি বললাম ডিএনডি, লিংক রোড সহ যতোগুলো বড় প্রজেক্ট চেয়েছি, তিনি দিয়েছেন। তখন তিনি বললেন এটুকুই তোমার চাওয়া। এতে তোমার লাভ কি। তখন বললাম মৃত্যুর পরে যেন মানুষ আমার জন্য কাঁদে।

শামীম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জে একটা নিষিদ্ধ পল্লী ছিল। সেখানে ইজ্জত বিক্রি হত। নারায়ণগঞ্জে পুলিশ তখন পেত ৪৫ লাখ টাকা। ৫০টা মদের দোকান ছিল। ১৪ থেকে ১৫ হাজার নারী ছিল। আমি কাবা শরীফ ছুয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, আমি আপাকে (প্রধাণমন্ত্রী) বললাম আমি এই শপথ করেছি। তিনি বললেন, তুমি করো। আমি বললাম বাধা আসবে, তিনি বললেন বাধা আসবেই। তিনি সাড়ে তিন কোটি টাকা দিলেন। আমার বড় ভাই সেলিম ওসমান দিলেন তুলে দিলেন দেড় কোটি টাকা। সেই টাকা দিয়ে তাদের পুনর্বাসিত করেছি। পতিতালয় উচ্ছেদ করা, গোলাম আজমকে নারায়ণগঞ্জে নিষিদ্ধ করা এবং যে রাতে ক্যু হবার কথা ছিল সেটি রুখতে সেদিন নির্দেশিত হয়ে লং মার্চ ঠেকানো এই তিনটি কারণে আমি টার্গেট হয়েছি। তারা নেই কিন্তু তাদের তাবেদাররা এখনও আমাকে টার্গেট করছে।

তিনি আরও বলেন, মুর্সালিন ও মুত্তাকিম দুই ভাই যারা বর্তমানে ভারতের তিহার জেলে গ্রেফতার রয়েছে, তারা আরডিএক্সসহ ভর্তি করা একটি ব্যাগ আমার টেবিলের সামনে রাখলো। আমি উঠে দাড়ালাম। এর মধ্যে আমি চন্দনকে ফোন করে বললাম আমি আর পারতাছি না একটু আসবা। কারন দৈনিক ৪-৫ হাজার মানুষ তাদের সমস্যা নিয়ে আসে। চন্দন আমার রুমে আসার পর বললো আমি দেখতেছি। সেদিন আমাদের মশিউর, বাচ্চুসহ অনেকে যারা সাংস্কৃতিক সেক্টরে অনেক ভালো করছিলো। তারা ওইদিন এসেছিলো তাদের একটি অনুষ্ঠানে আমাকে দাওয়াত দিতে। চন্দন যখনে এসেছিলো তখন আমি উঠে দুই, তিনপা এগুতেই বোমটা ব্লাস্ট হলো।

আমার আশে পাশে ২০ জন মানুষ মাংশের টুকরা হয়ে গেলো। ছাদ উড়ে গেলো। চন্দনের দুটো পা ছাদের উপর দিয়ে অন্যস্থানে গিয়ে পড়লো। তখন যানতামও না যে বেঁচে আছি নাকি মরে গেছি। যখন একটু জ্ঞান ফিরলো তখন আমার মুখ দিয়ে একটি কথাই বের হলো শেখ হাসিনাকে বাঁচান। আমি রক্তে পুরো ভাসছিলাম। রক্ত যে কত গরম হয় আল্লাহর কসম ওইদিন আমি বুঝতে পারি।

জেলা প্রশাসককে উদ্দেশ্য করে শামীম ওসমান বলেন, জেলা প্রশাসক সাহেব, আপনারা মনে করবেন এটা আপনাদের এলাকা। এমনভাবে কাজ করবেন যেন আপনি চলে গেলে চোখে পানি আসে। ইচ্ছে করলে কাগজে সই করে দায়িত্ব পালন করে চলে যেতে পারেন। আবার ঘুরে ঘুরে কাজ করে মানুষের মনে জায়গা করে নিতে পারেন। আমাকেও কাজে লাগাতে পারেন। আপনি এখানে কাজের জন্য এসেছেন। আপনার টিমটাও খুব ভাল। এক দুইমাস পরে হয়ত আমাকে পাবেন না। আমি রাস্তায় থাকব। আমরা রাস্তায় থাকার লোক।

তিনি আরও বলেন, আমার ছোট বাচ্চারা যারা আছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই। একটা মানুষ কাজ করলেই প্রশান্তি হয় না। এখানে জেলা প্রশাসন আছেন। তাদের ছাড়া আমি পারব না। সত্য লেখা দায়িত্ব সাংবাদিকদের। জনগনের ভোটে পাশ করেছি তাই কাজ করা আমাদের দায়িত্ব। নারায়ণগঞ্জের ৯৫ শতাংশ কাজ আমাদের হাত দিয়ে এসেছে। তোলারাম কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলাম। ডিএনডির জন্য সংসদে মন্ত্রীকে বলেছিলাম আমি পদত্যগ করব না হয় আপনি পদত্যাগ করবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close