আইন ও অধিকাররংপুর বিভাগ

বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুকে পার্কে ঢুকতে না দেয়ায় ব্যবস্থা চেয়ে হাইকোর্টে রিট

রংপুরে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু ইয়ানাতকে পার্কে ঢুকতে না দেয়ার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা চেয়ে হাইকোর্টের রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে।
একইসঙ্গে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুকে সব সরকারি পার্কে ফ্রি এবং বেসরকারি পার্কে ৫০ শতাংশ ছাড়ে প্রবেশের সুযোগ দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। সুপ্রিমকোর্টের দুই আইনজীবী জনস্বার্থে এ রিট করেছেন।
একটি জাতীয় দৈনিকে গত ৭ মে ‘পার্কে ঢুকতে দেওয়া হলো না বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুকে’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে জনস্বার্থে রিটটি করা হয়।
আবেদনে সমাজ কল্যাণ সচিব, নারী ও শিশু সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র, রংপুরের জেলা প্রশাসক, চিকলী ওয়াটার পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়েছে।
রিটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২০১৩ অনুসারে চিকলী ওয়াটার পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে কেনো প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে না-মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের পার্ক, বিনোদন পার্ক, শপিং কমপ্লেক্স, মার্কেট, রেস্টুরেন্ট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশাধিকার এবং বিশেষ যন্ত্রপাতি ও হুইল চেয়ার চলাচলের জন্য র‌্যাম্প রাখার নিশ্চয়তা কেন দেয়া হবে না এবং সরকারি পার্কে একজন অভিভাবকসহ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের ফ্রিতে প্রবেশের সুযোগ, রাইডের ব্যবহার এবং বেসরকারি পার্কে ৫০ শতাংশ ছাড়ে প্রবেশের সুযোগ দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ১০ বছর পার করে কেবল ১১ তে পড়েছে আল আয়মান ইয়ানাত। সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত ইয়ানাত মা-বাবার একমাত্র সন্তান, পরিবারের সঙ্গে থাকে রংপুরে। কন্যা ইয়ানাতকে নিয়ে মা রিজা রহমানের সংগ্রাম সেই ছোট্ট থেকে। সেই সংগ্রামে মা-মেয়ে কখনো ক্লান্ত হননি, কোথাও হেয় হতে হয়নি। বরং সব প্রতিকূলতাকে জয় করে পথ চলেছেন এতগুলো বছর। কিন্তু এবার একটু থমকে গেছেন তারা।
রংপুরের চিকলি ওয়াটার পার্কে গিয়ে ইয়ানাত এবং তার মা রিজা রহমানকে হতে হয়েছে অপমানিত। শত শত মানুষের সামনে পার্ক কর্তৃপক্ষ মা-মেয়েকে অপমান করেছে, হেনস্তা করেছে। আর এর প্রতিবাদ হিসেবে মা রিজা রহমান রংপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তার দাবি, দেশের আর কোনো বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুকে যেন এমন হেনস্তার মধ্যে পড়তে না হয়। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের নিয়ে যেসব বিশেষজ্ঞ কাজ করেন তারা বলছেন, এটা স্পষ্টত দেশের সংবিধান এবং আইনের পরিপন্থী। যারা এই কাজ করেছেন, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি করেছেন তারা।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩  এর ২৯ (১) ধারায় বলা হয়েছে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকারসমূহ যাহাতে তাহারা যথাযথ সহজ উপায়ে ভোগ করিতে পারে সেই লক্ষ্যে সকল সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, আপতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, জাতীয় সমন্বয় কমিটি কর্তৃক প্রণীত নীতি ও প্রদত্ত নির্দেশনা ও অন্যান্য কমিটি কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত ও প্রদত্ত নির্দেশনা এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণ ও স্বার্থ সুরক্ষায় সরকার গৃহীত কর্মসূচি বা প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close