চট্টগ্রামচট্টগ্রাম বিভাগ
চট্টগ্রামে প্লাস্টিক দূষণ সচেতনতায় টেট্রা সি এর ক্যাম্পেইন

বৈশ্বিক সংকটের বর্তমান আলোচনা এখন পরিবেশকে নিয়ে৷ পরিবেশ দূষণ নিয়ে চিন্তা করতে গেলে
প্লাস্টিক থেকে উৎপাদিত বর্জ্যের বিষয়টি শীর্ষেই থাকবে৷ বন্দরনগরী চট্টগ্রামে প্লাস্টিক দূষণ সম্পর্কে
নগরবাসীকে সচেতন করতে ইপসা ব্রিটিশ কাউন্সিল লিড বাংলাদেশ এর সোশ্যাল একশন প্রজেক্ট টেট্রা-সি (কানেক্টিং কমিউনিটি ফর ক্লাইমেট ক্রাইসিস) গত শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) নগরের প্রাণকেন্দ্র বিপ্লব
উদ্যানে আয়োজনটি সম্পন্ন করে৷
পৃথিবীতে প্লাস্টিক তথা অপচনশীল বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা নিয়ে নানা উদ্যোগ ও কৌশল আছে তবে বর্জ্য
ব্যবস্থাপনায় জনসাধারণের সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে সাধারণ
মানুষকে সচেতন করতে টেট্রা সি এর মধ্যে
নগরের ৮ নং ওয়ার্ডের মানুষদের নজর কেড়েছে তাদের কর্মকাণ্ড দিয়ে গত শুক্রবারের ক্যাম্পেইনে তারা
নগরের ব্যস্ততম ষোলোশহর ও বিপ্লব উদ্যানে উপস্থিত মানুষের মধ্যে প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে সচেতনতার
বার্তা পৌঁছে দিয়েছে। ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে প্রায়
৫০০ মানুষের কাছে ‘প্লাস্টিক দূষণ: আমাদের দায় ও করণীয়’ শিরোনামে একটি প্রচারপত্র পৌঁছে দিয়েছে
পরিবেশবাদী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি৷ শুক্রবার
বিকেল ৩টা থেকে শুরু হওয়া উক্ত আয়োজনটি সন্ধ্যা ৬টায় সম্পন্ন হয়। ক্যাম্পেইনে টেট্রা সি এর স্বেচ্ছাসেবক রিংকি , তৃষ্ণা, দিপা রুদ্র, সোহানা, নিপা, মিনহাজ, হৃদয়, প্রণব সহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর জনাব মোঃ মোরশেদ আলম এই সচেতনতা ক্যাম্পেইন এর সাথে একাত্মতা
পোষণ করে বলেন, ‘প্রতিদিন আমরা নগরীতে যে
পরিমাণ প্লাস্টিক ব্যবহার করি,
আমরা সচেতন নাগরিক হিসেবে
নিজেরা চাইলেই সেসব প্লাস্টিকের ব্যবহার অনেকাংশ কমিয়ে আনতে পারি এবং একটি সুস্থ সুন্দর
পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ে তুলতে পারি।
টেট্রা সি এর উদ্যোগকে সাধুবাদ
জানিয়ে স্কুল শিক্ষক ঝলক কুমার লোভন বলেন,
“এই ধরনের সচেতনতামূলক
ক্যাম্পেইনই পারে সকলের মধ্যে
সুস্থ সুন্দর জীবন পরিচালনার
অভ্যাস গড়ে তুলতে ও পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে ।“
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং টেট্রা সি-এর সদস্য সৃজন পাল
বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি নগরীতে প্রতিদিন প্রায় ২৫৮ মেট্রিক টন
অপচনশীল বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এসব বর্জ্যের উৎপাদনস্থল
আমাদের বাসাবাড়ি, রেস্ট্রুরেন্ট
কিংবা কোনও পাবলিক প্লেস। নগরীতে
প্লাস্টিকজাত বর্জ্যের টেকসই
ব্যবস্থাপনা নেই। প্লাস্টিক বর্জ্যের একটা বড় অংশ
রাস্তার ধারে নালা-নর্দমায় জমে
থাকে এবং বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। জলাবদ্ধতা ছাড়াও প্লাস্টিক-
পলিথিন পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করে বিরূপ অবস্থার সৃষ্টি করে। প্লাস্টিক দূষণ কমাতে নগরের
মানুষদের সচেতনতার বিকল্প নেই।’
সাধারণ মানুষের পাশাপাশি
আয়োজনটিতে বিপ্লব উদ্যানের কিছু ব্যবসায়ী এবং উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও দূষণের ব্যাপরে
সচেতন করা হয়। তারা উক্ত ক্যাম্পেইনের ভূয়সী
প্রশংসা করেন৷
ক্যাম্পেইনে নেতৃত্ব দেয়া ওশান
ইউনিভার্সিটি অফ চায়না এর
শিক্ষার্থী ও টেট্রা সি-এর দলনেতা সেতার রুদ্র বলেন, ‘কোভিড পরবর্তী সময়ে ব্রিটিশ
কাউন্সিল ও এনজিও সংস্থা ইপসার তত্ত্বাবধানে গতবছর থেকে আমরা
কাজ শুরু করি। সৃষ্টিকর্তার প্রদত্ত সুন্দর পৃথিবীতে আমরা বসবাস করছি, এখানকার
পরিবেশকে নির্মল
রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব। তরুণদের ক্ষেত্রে এই দায়িত্বটা আরও বেশি, এই তাগিদ থেকে আমরা
সংগঠনটি শুরু করি। এখানকার সদস্যরা সবাই শিক্ষার্থী এবং পরিবেশ সচেতন। আমরা সবাইকে নিয়ে
দূষণমুক্ত এবং সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখি।’