আইন ও অধিকারঢাকা

রাজধানীতে ছিনতাইকারী চক্রের ২৬ সদস্য গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা রাজধানীর পল্টন, মতিঝিল, শাহবাগ, মুগদা, শাহজাহানপুর, হাতিরঝিল ও খিলগাঁও এলাকা থেকে সংঘবদ্ধ মলমপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের ২৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৩। অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা হলো,মো. পাপ্পু (২৮),মো. জীবন (২২),মো. সজীব (২৬), মো. শহিদ শেখ (৩০),আলাউদ্দিন (৪২),মো. শফিক (১৮), আ. হক হৃদয় (২২), মো. রানা (১৮), মো. অন্তর (২৬), মো. মেহেদী হাসান(২০),মো. শাকিল(২৫),মো. রাব্বী আপন(২০), মো. আলমগীর(৪৫),মো. ফাইম(২২),মো. মামুন শেখ (৪২), মো. সজল (২৬),মো. ফেরদৌস (৩২),মো. রুবেল মাতবর (৩৪),মো. হানিফ ব্যাপারী (২৯),জাকির হোসেন (২৪),মো. সোহেল (১৯),মো. মাহাবুব ইসলাম রিয়ন(৪২), মো. আঃ মান্নান(১৯),মো. হাবীব মিয়া(২২),মো. হৃদয় ওরফে মুজিবর(১৯) ও মো. রিফাত উদ্দিন চৌধুরী ওরফে দুঃখু(২৪)।

 

এসময় তাদের কাছ থেকে এন্টিকাটার ০৩ টি, ব্লেড ১১ টি, বিষাক্ত মলম ১০ টি, চাকু ০১ টি, মোবাইল ফোন ০৯ টি এবং নগদ ৩,২৯০/-টাকা উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার ২৭ জুন দুপুরে র্যাব-৩ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( মিডিয়া) বীণা রানী দাস এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, রাজধানীর খিলগাঁও, পল্টন, মুগদা, শাহজাহানপুর, শাহবাগ, মতিঝিল এবং হাতিরঝিল থানাধীন এলাকায় থেকে ২৭ জুন মধ্যরাতে রাতে ২৬ জন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন এলাকায় অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা ঘোরাফেরা করতে থাকে। সহজ সরল যাত্রীদের টার্গেট করে কখনও তাদেরকে ডাব, কোমল পানীয় কিংবা পানির সাথে বিষাক্ত চেতনানাশক ঔষধ মিশিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করে। আবার কখনও যাত্রীবেশে বাস ও ট্রেনে চড়ে যাত্রীদের পাশে বসে তাদের নাকের কাছে চেতনানাশক ঔষধে ভেজানো রুমাল দিয়ে যাত্রীদের অজ্ঞান করে থাকে। উক্ত বিষাক্ত পানীয় সেবন করার বা বিষাক্ত স্প্রের ঘ্রাণ নেওয়ার পর উক্ত যাত্রী অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে তারা ভিড়ের মধ্যে মিশে যায়। এছাড়াও কখনও ভিড়ের মধ্যে যাত্রীদের চোখে-মূখে বিষাক্ত মলম বা মরিচের গুড়া বা বিষাক্ত স্প্রে করে যাত্রীদের যন্ত্রণায় কাতর করে সর্বস্ব কেড়ে নেয়। এরপর কোন সহৃদয় ব্যক্তি উক্ত অজ্ঞান বা অসুস্থ যাত্রীকে হাসপাতালে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে। চেতনানাশকের পরিমান বেশী হলে উক্ত ভুক্তভোগীর জ্ঞান ফিরতে ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত লেগে থাকে। অজ্ঞানপার্টির শিকার ব্যক্তি শারিরীকভাবে দুর্বল ও বয়স্ক হলে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। অন্যদিকে ভূক্তভোগীর চোখে-মূখে বিষাক্ত মলম লাগানোর ফলে তার দৃষ্টিশক্তি চিরতরে হারানোর সম্ভাবনা থেকে যায়। এসব অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা নির্বিঘেœ তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা রাজধানীর বিভিন্ন অলি গলিতে উৎপেতে থাকে। সুযোগ পাওয়া মাত্রই তারা পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি, অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে সর্বস্ব লুটে নেয়। সন্ধ্যা হতে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের ছিনতাইকাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের প্রাণঘাতী আঘাত করতে দ্বিধা বোধ করেনা। খিলগাঁও মালিবাগ রেইল গেইট, দৈনিক বাংলা মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালবার্ট রোড, নাসিরের টেক হাতিরঝিল, শাহবাগ, গুলবাগ, রাজউক ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং পল্টন মোড়, গোলাপ শাহর মাজার ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, আব্দুল গণি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা হতে ভোর রাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি পরিলক্ষিত হয়। এ সকল অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারীদের আইনের আওতায় আনার ফলে পথচারীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। রাজধানীবাসী এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে রাজধানীতে আগত যাত্রীরা যাতে নিরাপদে দৈনন্দিন কাজকর্ম সম্পন্ন করে নির্বিঘ্নে স্বস্তির সাথে বাড়ী ফিরে যেতে পারেন এলক্ষ্য নিয়ে সংঘবদ্ধ অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের বিরুদ্ধে র‌্যাবের সাড়াঁশি অভিযান অব্যাহত থাকবে। আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close