আন্তর্জাতিকখেলাধুলাবিনোদন

আফ্রিকান নেশনস কাপের শিরোপা জিতলো সেনেগাল

আফ্রিকান নেশনস কাপের শিরোপা জিতলো সেনেগাল। ফাইনালে সাতবারের চ্যাম্পিয়ন মিসরকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো আফ্রিকার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করলো সেনেগাল। নির্ধারিত সময়ের খেলা গোল শূন্য সমতায় থাকায় ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেই বাজিমাত সেনেগালের।

ম্যাচের শুরুতেই পেনাল্টি মিস করে সেনেগালকে হতাশায় ডুবিয়েছিল সাদিও মানে। কিন্তু টাইব্রেকারে তার নেওয়া শটেই শিরোপা নিশ্চিত হয় সেনেগালের। ম্যাচের প্রথমার্ধে পুরোটা সময়েই দাপট দেখায় সেনেগাল কিন্তু নিখুত ফিনিশিংয়ের অভাবে গোল করতে পারেনি মানেরা। দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা আক্রমণাত্মক মনোভবে খেলে মিসর কিন্তু দুর্ভেদ্য জালের দেখা পায়নি। অতিরিক্ত সময়েও গোল করতে না পারলে টাইব্রেকারে নিষ্পত্তি হয় ম্যাচ। যেখানে সেনেগালের কাছে হেরে অষ্টম শিরোপা জেতা হলো না মিসরের। অন্যদিকে তিন বারের চেষ্টায় প্রথম শিরোপা উদযাপনের মাতোয়ারায় সেনেগাল।

ম্যাচের সপ্তম মিনিটে পেনাল্টি মিস করে এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে সাদিও মানে। বাম দিক থেকে বক্সে ঢুকে পড়েন সালিও সিস, বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তাকে ফাউল করেন মিসরের আব্দেলমনেম। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাশি বাজান রেফারি। স্পট কিক থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন সাদিও মানে। ডানদিকে ঝাপিয়ে দুর্দান্তভাবে রক্ষা করেন গোলরক্ষক আবু গাবাল। ৪৩ মিনিটে মোহাম্মদ সালাহর প্রচেষ্টা কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন সেনেগালের গোলরক্ষক এদুয়ারদো মেন্দি। সতীর্থের বাড়ানো পাস ডান নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সে ঢুকে সালাহ শট নিলে তা ঝাপিয়ে ঠেকিয়ে দেন মেন্দি। গোল শূন্য সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধ।

৫২ মিনিটে মিসরকে আবারো রক্ষা করেন গোলরক্ষক আবু গাবাল। মাঝ মাঠ থেকে গোছাল আক্রমণে উঠে সেনেগাল। ডান দিক থেকে সাদিও মানের নিচু ক্রস গোলমুখে সেনেগালের দুই ফুটবলার মিলেও আবু গাবালকে পরাস্ত করতে পারেনি। এরপর বার বার আক্রমণ শানাতে থাকে সেনেগাল কিন্তু কিছুতেই গোলের দেখা পাচ্ছিলো না। কখনো নিখুত ফিনিশিংয়ের অভাব আর কখনো দেয়াল হয়ে দাঁড়ায় আবু গাবাল। এরপর দুই দলই বেশ কয়েকবার সুযোগ তৈরি করলেও কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায়নি।

নির্ধারিত নব্বই মিনিট গোলশূন্য সমতায় থাকায় ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটে। অতিরিক্ত সময়ের শুরুর মিনিটে আরো একবার দুর্দান্ত সেইভে মিসরকে বাঁচান আবু গাবাল। অফসাইড ফাদ ভেঙ্গে মিসরের দুই ডিফেন্ডারকে পিছনে ফেলে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন আহমাদু বাম্বা, খানিকটা কোনাকুনি ভাবে তার নেওয়া শট বাঁ দিকে ঝাপিয়ে ঠেকিয়ে দেন আবু গাবাল।

১০০ মিনিটের মাথায় আবারো সেনেগালের বাঁধা সেই আবু গাবাল। আহমাদু বাম্বার লাফিয়ে উঠা হেড বা দিকে ঝাপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন তিনি। ১১৪ মিনিটে মিসরের ত্রাতা হয়ে আসেন আবু গাবাল। এবারো সেই আহমাদু বাম্বার নেওয়া বুলেট গতির শট দক্ষতার সঙ্গে প্রতিহত করে দেনে এই গোলরক্ষক। অতিরিক্ত সময়েও খেলার ফলাফল সমতায় থাকায় নিষ্পত্তি ঘটে টাইব্রেকারে। যেখানে ৪-২ গোলে জিতে শিরোপা নিশ্চিত করে সেনেগাল।

শিরোপা জিততে না পারলেও পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলে ম্যাচ সেরা হয়েছে মিসরের গোলরক্ষক আবু গাবাল (গাবাস্কি)। টুর্নামেন্টের আট গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন ক্যামেরুনের অধিনায়ক ভিনসেন্ট আবুবকর। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন সেনেগালের সাদিও মানে এবং সেরা গোলরক্ষক একই দেশের এদুয়ারদো মেন্দি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close