কিশোরগঞ্জ
হাসিনার রাজনীতি ছিল বাংলাদেশকে ধ্বংস করার রাজনীতি -মামুনুল হক

এমদাদুল্লাহ্, বজ্রধ্বনি:
ফ্যাসিষ্ট হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করতে চেয়েছিল। বাংলাদেশকে অন্য একটি দেশের অঙ্গ রাজ্যে পরিণত করতে চেয়েছিল। শেখ হাসিনার রাজনীতি ছিল বাংলাদেশকে ধ্বংস করার রাজনীতি। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টায় কিশোরগঞ্জ আজিম উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা আয়োজিত গণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক উপরোক্ত কথা বলেন।
সমাবেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে মামুনুল হক বলেন, আল্লামা আতহার আলী (রহ.), আল্লামা আহমদ আলী খান (রহ.), আল্লামা আনোয়ার শাহ্ (রহ.) আল্লামা আতাউর রহমান খান (রহ.), শহীদ আরমানের এ মাটি, ইসলামের ঘাটি। শহীদি মসজিদ থেকে ইসলাম কায়েমের আযান যেভাবে উচ্চারিত হয়েছে, আগামী দিনেও বাংলাদেশের ইসলামী বিপ্লবের ক্ষেত্রে কিশোরগঞ্জের মাটি, ঘাটি হিসেবে ব্যবহৃত হবে ইনশাআল্লাহ্।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যার বিচার এবং নৈরাজ্যবাদের প্রতিবাদে ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় আয়োজিত এ গণ সমাবেশে মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ফ্যাসিষ্ট ও ধর্মবিদ্বেষী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় অধিকার ছিনতাই করেছিল। আলেম উলামাদের মাহফিলে ১৪৪ ধারা জারি করে কুরআনের আওয়াজকে বাধাগ্রস্ত করেছিল। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় জেলায় কুরআনের মাহফিলে ১৪৪ ধারা জারি করে বন্ধ করে দিয়েছিল। ২০১৩ সালে হেফাজতের আন্দোলনে শাপলাচত্বরে আলেম উলামাদের হত্যা করেছে। ২০২১ সালে মুদি বিরোধী আন্দোলন হত্যা চালিয়েছে। কুরআনের পাখি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ও ষড়যন্ত্র করে রায় দিলে জনগণের প্রতিবাদী আন্দোলনে হত্যা চালিয়েছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালে ছাত্র জনতার আন্দোলন দমন করতে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এদেশের মানুষের ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক অধিকার ছিনতাই করা হয়েছিল। বাক স্বাধীনতা, ভোটের অধিকার ছিনতাই করে এদেশে এক নায়কতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল শেখ হাসিনা। কিন্তু জুলাই এবং আগস্টের বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এই ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত হয়েছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মুসলিম জাতিসত্তা ও ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করেছে। সংবিধান থেকে আল্লহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস তুলে দিয়েছে। শেখ হাসিনা স্বাধীনতার অঙ্গীকার ভঙ্গ করে সমকামিতাসহ আইন, ধারা, উপধারা আমার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর চাপিয়ে দিয়েছিল।
খুনি হাসিনার শাসনামলে নিহত ও শাহাদাতবরণকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে সমাবেশে মামুনুল হক বলেন, এদেশে সম্পদ লুট করে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার করে দেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি শায়খুল হাদিস মাওলানা আবদুল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসনাত জালালী, সহ বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মাওলানা হেদায়াতুল্লাহ হাদী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সিনিয়র সহ সভাপতি খাইরুল ইসলাম ঠাকুর, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জুবায়ের আহমদ, খেলাফত মজলিস কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল্লাহ্, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আবদুল বারী রিয়াদি প্রমুখ।
সমাবেশ পরিচালনা করেন সংগঠনের জেলা শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক মাওলানা উসমান গনি কাগজী, মাওলানা আব্দুল কাদির আল আমিন ও মাওলানা মোহাম্মদ আলী।