‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের আর কোনো প্রেম নেই। আমাদের সঙ্গে প্রেম করে আওয়ামী লীগ তিনবার রাষ্ট্রক্ষমতায় গেছে। এখন আমাদের ওপর নির্যাতন করছে,’ কথাগুলো বলেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক।
আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাপার ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বর্ধিত সভায় মুজিবুল হক এ কথা বলেন। চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের ওপর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা করছেন, প্রার্থীদের নির্বাচনের মাঠ থেকে উঠিয়ে দিতে চাচ্ছেন।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, আর কোনো জোট নয়, জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করবে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের প্রশ্ন তোলেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলেও এখন তেলের দাম কমানো হচ্ছে না কেন? তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েছে এ অজুহাতে দাম বাড়ানো হয়েছে। এখন তো তেলের দাম কমেছে, তাহলে তেলের দাম কমানো হচ্ছে না কেন?
জি এম কাদের বলেন, এর আগে তেলের দাম বিশ্ববাজারে খুবই কম ছিল, তখনো তেলের দাম কমানো হয়নি। প্রয়োজন ছাড়াই তেলের দাম বাড়ানোয় মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। কোনো ঘোষণা ছাড়াই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ নিজের অজান্তেই বিদ্যুতের অতিরিক্ত বিল দিচ্ছে।
জাপার চেয়ারম্যান বলেন, বলা হয় জ্বালানি তেলের চোরাচালান রোধে তেলের দাম বাড়ানো হয়। আসলে কখনোই জ্বালানি তেল চোরাচালান করা সম্ভব নয়। তিনি জাপার প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের শাসনামলের উল্লেখ করে বলেন, তিনি ভর্তুকি দিয়ে ডিজেলের দাম লিটার ৭ টাকা রেখেছিলেন। এখন সেই ডিজেলের লিটার ৮০ টাকা।
সরকারের সমালোচনা করে জি এম কাদের বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ালে প্রতিটি পণ্য ও সেবার দামও বেড়ে যায়। এতে সাধারণ মানুষের কষ্ট বেড়ে যায়।
বর্তমানে বাজার নিয়ন্ত্রণহীন। কৃষক যে পণ্য ৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করেন, তা হাত ঘুরে রাজধানীতে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। কৃষক পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। করোনায় অপরিকল্পিত লকডাউনের কারণে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। বেকারত্বের সংখ্যা আরও বেড়েছে। তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেনের সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া, মীর আবদুস সবুর, সাইফুদ্দিন আহমেদ, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার, লিয়াকত হোসেন, জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।