নারায়ণগঞ্জরাজনীতি
নারায়ণগঞ্জে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আলোচনা

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তীতে ‘ছাত্র সমাজের আকাঙ্খা ও বাস্তবতা’ নিয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) বেলা ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ সংগঠনের জেলা কার্যালয়ে এ আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মুন্নি সরদারের সভাপতিত্ত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ও বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক নিখিল দাস, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ, কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক সুলতানা আক্তার, নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহাম্মেদ রাতুল, সহ-সভাপতি রিনা আক্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সুবর্ণজয়ন্তী আমরা পার করেছি। শাসকশ্রেনী মহাসমারোহে উন্নয়নের গালভরা গল্প শুনিয়ে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছে। কিন্তু ৫০ বছর আগে যে সমাজের স্বপ্নে এদেশের ৩০ লক্ষ মানুষ আত্মোৎসর্গ করেছিলো, সে স্বপ্ন কতটুকু পূরণ হয়েছে?
শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ মানুষের মৌলিক মানবিক অধিকারগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হয়েছে? পাকিস্তানের শাসন শোষনের পরিবর্তে এদেশের মানুষ চেয়েছিলো একটা গণতান্ত্রিক সমাজ। কিন্তু সে আকাঙ্খা আজও পূরণ হয়নি। শাসকেরা পায়ে দলে দেশকে পরিচালনা করছে।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও আমরা দেখি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার বিবর্ণ দশা। স্কুল থেকে বিশ^বিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার প্রতিটি স্তরেই বেসরকারি ধারা। শিক্ষাকে প্রতিনিয়ত বাণিজ্যিক পণ্যে পরিনত করা হয়েছে। বাড়ছে শিক্ষার্থীদের বেতন ফি, গোটা শিক্ষা ব্যবস্থার ৯৫ ভাগই বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত হচ্ছে। করোনাকালীন পরিস্থিতির কারণে প্রায় ৩ কোটি ৪২ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে।
আরো বেশি সংকটের সম্মূখীন হয়েছে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন। মানুষ আজকে দিশেহারা। অন্যদিকে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস চাল, ডাল, ভোজ্যতেলের দাম উত্তরোত্তর বেড়ে নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে। প্রত্যেকটা নিত্যপণ্যেরই দাম বাড়ছে। সিলিন্ডার গ্যাসের দামও প্রতি মাসে বাড়ানো হচ্ছে।
সরকার টিসিবির মাধ্যমে ট্রাকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ন্যায্যমূল্যে চাল, ডাল, তেল দেয়া হলেও তা পরিমাণে খুব কম যা অল্প কিছু মানুষকে দেয়া যায়। প্রতিদিন সামান্য কিছু সাশ্রয়ের আশায় ৭/৮ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ধাক্কাধাক্কি করে পণ্য ক্রয় করে নিম্ন আয়ের মানুষ।
টিসিবির পণ্য কম থাকার কারণে প্রতিদিন প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ পণ্য না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। যেখানে সারাদেশে হাজার হাজার ভ্রাম্যমান ট্রাকের মাধ্যমে টিসিবি পণ্য সরবরাহ দরকার সেখানে তারা মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০টি ভ্রাম্যমান ট্রাকে পণ্য সরবরাহ করছে। টিসিবির ট্রাক সেলের সামনে এখন নিম্নবিত্ত মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্ত মানুষরাও দাঁড়াচ্ছে। গ্রাম ও শহরের গরীব, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত সমস্ত মানুষকে রেশন প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, একথা নি:সন্দেহে বলা যায় এই শোষনমুলক আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার পরিবর্তন ছাড়া জনগনের শিক্ষা-স্বাথ্য তথা মৌলিক মানবিক আধিকার নিশ্চিত করা যাবে না। ফলে শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়া রোধে শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি মওকুফ ও শিক্ষার উপকরনের দাম কমানোর দাবি জানায়।
নেতৃবৃন্দ নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবিতে বাম জোটের ডাকে আগামী ২৮ মার্চের অর্ধবেলা হরতালকে সফল করার জন্য ছাত্র যুবকসহ দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।