জাতীয়ঢাকা বিভাগরাজনীতি

বেতন বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভে গাজীপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত রাসেলের মায়ের আর্তনাদ

বেতন বাড়ানোর দাবিতে গাজীপুরে বিভিন্ন শিল্প কারখানার শ্রমিকদের বিক্ষোভের সময় সোমবার গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান রাসেল।

বেতন বাড়ানোর দাবিতে গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভের মধ্যে গুলিতে নিহত রাসেল হাওলাদারের ঝালকাঠির বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। কোনো সান্ত্বনাতেই থামছে না সন্তানহারা মায়ের কান্না।

রাসেল হাওলাদার (২৬) ঝালকাঠির সদর উপজেলার খাঘুটিয়া গ্রামের হান্নান হাওলাদারের ছেলে। তিনি গাজীপুরের বাসন থানার এলাকার ডিজাইন এক্সপ্রেস লিমিটেডের ইলেকট্রিশিয়ান ছিলেন।

সোমবার গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হন রাসেল। বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

মঙ্গলবার রাসেলের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মা রাশেদা বেগম কোনোভাবেই মানতে পারছেন না ছেলের মৃত্যুর খবর। বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। শোকাহত স্বজনরা বাড়ির উঠোনে ভিড় করে আছেন ।

পরিবারের একমাত্র উপার্যনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে শোকে ভেঙে পড়েছেন বাবা হান্নান হাওলাদার। তিনি বলেন, “একসময় আমি কাঠের ব্যবসা করতাম। ২-৩ বছর আগে তা ছেড়ে দিয়েছি। ছেলের আয়েই সংসার চলত। এখন সব শেষ হয়ে গেছে।”

রাসেলের ভগ্নিপতি মো. শাহিন বলেন, পাঁচ বছর ধরে রাসেল গাজীপুরের ওই পোশাক কারখানায় ইলেকট্রিশিয়ান পদে চাকরি করতেন। তিন ভাই বোনের মধ্যে রাসেল ছিলেন সবার বড়। এক বোনের বিয়ে হয়েছে। ছোট ভাই নাইম স্থানীয় একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়েন।

গাজীপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত রাসেল

ঢাকায় ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়িতে মরদেহ পৌঁছাতে পারে। তাকে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন হবে বলে জানান শাহিন।

ওই দিন সকাল থেকে রাস্তায় নামেন শ্রমিকরা। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মহানগরীর ভোগড়া এলাকার কলম্বিয়া গার্মেন্টসের সামনে পুলিশের গাড়িতে আগুন দেয়।

তাদের অবরোধে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। পরে শ্রমিকরা বিভিন্ন পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতেও ঢিল ছুড়ে ভাঙচুর করেন।

শ্রমিকদের একটি দল গাজীপুরের ভোগড়া এলাকায় অবস্থান নিয়ে যানবাহন কারখানায় ভাঙচুর করতে গেলে শিল্প পুলিশ ও থানা পুলিশ টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।

মঙ্গলবারও গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় শ্রকিদের বিক্ষোভ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ চলছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close