অপরাধসিদ্ধিরগঞ্জ

সিদ্ধিরগঞ্জে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ফরহাদ গ্রেপ্তার হলেও সহযোগিরা ধরা-ছোয়ার বাইরে

সিদ্ধিরগঞ্জের একাধিক মামলার আসামি ও শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ফরহাদ হেরোইনসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার হলেও তার সহযোগী মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তারের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এর আগে গত ১৭ এপ্রিল রাতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় থেকে ফরহাদসহ ৫জন মাদক ব্যবসায়ীকে ৯৬ বোতল ফেনসিডিল ও ১৮কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার করে র‌্যাব-৩’র সদস্যরা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জের প্রতিটি ওয়ার্ডের অলি-গলিতে অসংখ্য মাদক স্পট রয়েছে তাদের। এদিকে মাদক ব্যবসায়ী ফরহাদ গত ১৮ আগস্ট রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের হাতে ৫০০ পুরিয়া হিরোইনসহ গ্রেপ্তার হলেও তার সিন্ডিকেটের মাদকের অন্যতম হোতা সিদ্ধিরগঞ্জের পেশাধার ছিনতাইকারী, একাধিক মামলার আসামি ও শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী জসিম, রানা ওরফে ইয়াবা রানা, সোহেল, মাসুদসহ আরো অনেকেই রয়েছে ধরা-ছোয়ার বাইরে। এলাকাবাসী বিভিন্ন অপরোধ সাম্রাজ্যের সহযোগীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

সিদ্ধিরগঞ্জে হাত বাড়ালেই মেলে মাদকদ্রব্য। এসব মাদকের মধ্যে রয়েছে ইয়াবা, গাঁজা, হেরোইন, ফেনসিডিল ও চোলাই মদ। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ১০নং ওয়ার্ড রয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জের মধ্যে। প্রতিটি ওয়ার্ডের অলি-গলিতে রয়েছে মাদক ক্রেতা-বিক্রেতাদের অবাধ বিচরণ।

তবে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মাদক মামলার বেশিরভাগই র‌্যাব ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের দায়ের করা। থানা পুলিশের কোনো উল্লেখযোগ্য মাদক উদ্ধার নেই। নামমাত্র মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করা হলেও কোনো রাঘববোয়াল ব্যবসায়ীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

জানা গেছে, দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে এলাকার একটি প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়- প্রশ্রয়ে ফরহাদ সহ তার বাহিনী মাদক সাম্রাজ্য পরিচালনা করে আসছে।

অবশেষে গত শুক্রবার (১৮ আগস্ট) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি টিসি রোডস্থ পূর্বপাড়া এলাকা থেকে ৫০০ পুরিয়া হেরোইন উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পাগলাবাড়ী এলাকার সায়েদ মিয়ার ছেলে জসিম মিয়া। এর আগেও বিদেশী একটি চাকু (সুইচ গিয়ার) ও ছিনতাইকৃত দুটি মোবাইল ফোনসহ জসিমকে গ্রেপ্তার করেছিলো থানা পুলিশ। মাদক বাহিনীর অন্যান্যরা হলো- বেলায়েত, সাব্বির, আকাশ ও মাদক মামলার অন্যতম আসামি শহিদুলসহ নামে বেনামে আরো অনেকেই।

এছাড়াও সিআই খোলা এলাকার মাদক ব্যবসায়ী ইকবাল, রতন ওরফে কাইল্লা (রতন), মিজমিজি পূর্বপাড়া এলাকার মো. আরিফ ওরয়ে গাঁজা আরিফ, মোশারফ হোসেন, হৃদয়, ওমর, অয়ন ও সোলায়মান মাদকের অন্যতম হোতা। এরা মাদক স্পট ছাড়াও সরবরাহের কাজে নিয়োজিত রয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন অচিরেই এসব মাদক স্পট ও মাদকের ছড়াছড়ি প্রতিরোধ না করলে স্বাভাবিক জীবণযাত্রা ব্যাহত হবে। এমনকি মাদকাসক্তরা সমাজের জন্য বোঝা হয়ে দাবি। এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবেনা। তাদের দাবি র‌্যাব, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তদারিকে মাদকের মূলহোতাদের অপরাধ ও মাদক সাম্রাজ্যের সহযোগীদের গ্রেপ্তার করলে সুন্দর সমাজ ও স্বাভাবিক জীবনের নিশ্চয়তা ফিরে আসবে।

স্থানীয়রা আরও জানান, এসব মাদকের ভয়াল ছোবলে ধ্বংস হচ্ছে সমাজ ব্যবস্থা। বাড়ছে নানা মাত্রার অপরাধ। মাদকের কারণেই সমাজের উচ্চ ও নিম্নবিত্ত পরিবারের যুবক-যুবতী থেকে শুরু করে কিশোর-কিশোরীরাও মাদকাসক্ত হয়ে ভয়ঙ্কর অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। মাদকের অর্থ সংগ্রহ করতে গিয়ে ভয়ঙ্কর অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কিশোর অপরাধীরা। আগে মাদক সেবীরা টাকার জন্য নিজ পরিবারের সদস্যদের সাথে বিবাদে জড়িত হলেও এখন তারা চুরি, ছিনতাই, অস্ত্র ব্যবসাসহ নানা অপরাধ করে বেড়াচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close