জাতীয়ঢাকাধর্মমতামতরাজনীতি

হাসিনাকে গদিসহ সাগরে নিক্ষেপ করা হবে – হেফাজত আমির মুহিব্বুল্লাহ

অতিদ্রুত আলেমদের মুক্তি দাও।জাতির কাছে ক্ষমা চাও

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, ‘সময় শেষ হয়ে এসেছে। আলেমদের আর জেলে রাখতে পারবেন না। আজকে বন্দি আলেমের মুক্তির দাবি গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। আমি সরকারকে বলব, যদি নিজেদের ভালো চান, অবিলম্বে কারাবন্দি সব আলেমকে মুক্তি দিন। হয়রানি বন্ধ করুন। না হলে অবস্থা করুণ হবে।’

শনিবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে কাজী বশির মিলনায়তনে শায়খুল হাদিস পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে হেফাজত আমির এসব কথা বলেন।

‘মাওলানা মামুনুল হকসহ কারাবন্দি সব ওলামায়ে কেরামের মুক্তি, দেশব্যাপী আলেম ওলামাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আলেমদের মধ্যে বৃহত্তর ঐক্য প্রতিষ্ঠায় করণীয় নির্ধারণে’ এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনে শায়খুল হাদীস পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও বেফাক মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক সভাপতিত্ব করেন।

হেফাজত আমির আরও বলেন, ‘এই দেশ স্বাধীন হয়েছে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ইনসাফ কায়েমের জন্য। অথচ দেশে ন্যায় ও ইনসাফ কল্পনাও করা যায় না। সবার অংশগ্রহণ ছাড়া, ভোটাধিকার ছাড়া আগামী নির্বাচন এবং রাষ্ট্রক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা দেশকে চরম ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, বলপ্রয়োগের মাধ্যমে দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দেবেন না। সমঝোতার মাধ্যমে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করুন।’

তিনি বলেন, ‘আলেমরা আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও মুক্তি পাচ্ছেন না। নতুন মামলা দিয়ে আটকিয়ে রাখা হচ্ছে। কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি ও প্রশাসনিক চাপ প্রয়োগ করে দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোকে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় রাখা হয়েছে। জুমার খুতবা এবং ওয়াজ-মাহফিল নিয়ন্ত্রণ করার বারবার চেষ্টা হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ধর্মীয় ও নাগরিক স্বাধীনতাও খর্ব করা হয়েছে।’

সমাবেশের সভাপতি ও শায়খুল হাদিস পরিষদের সভাপতি মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, ‘আজকে ওলামায়ে কেরামদের ঘর থেকে বের হওয়া কষ্টকর। বের হলেই গ্রেফতার করা হয়। গোটা দেশ আজ কারারুদ্ধ। শুধু মামুনুল হক নয়, গোটা দেশকে কারারুদ্ধ অবস্থা থেকে বের করতে হবে। আমাদের যেটুকু সামর্থ্য আছে তা নিয়ে নামতে হবে। আপনারা যদি বাঁচতে চান অতিদ্রুত কারাবন্দিদের মুক্তি দেন। সরকারকে সতর্ক করব, এখনো সময় আছে। মুক্তি দেন। অন্যথায় আপনাদের মুক্তি মিলবে না। যারা ইসলামের বিপক্ষে অবস্থান নেবেন, তাদের বিরুদ্ধে আলেমরা গর্জে উঠবে।’

এ সময় কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি বলেন, আমাদের প্রথম কর্মসূচি হলো মামুনুল হকসহ আলেমদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ২০ আগস্ট দেশব্যাপী জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা। কথা না শুনলে রাজপথে নামতে বাধ্য হবো।

হেফাজত ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান বলেন, আমার বিশ্বাস আজকে ঐক্য হয়ে গেছে। সব আলেমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কারাবন্দি ওলামাদের মুক্তি চায়। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আলেমদের মুক্তি করা যাবে না। আজকে আলেমদের হাজিরা দিতে দিতে নাজেহাল অবস্থা। আমরা চাই মামলা প্রত্যাহার করা হোক। তাদের হাজিরা থেকে মুক্ত দেওয়া হোক। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মামুনুল হককে মুক্ত করতে চাই। মুক্ত করে ছাড়ব।

আরও বক্তব্য দেন হেফাজত ইসলামের ঢাকা মহানগরের সাবেক সভাপতি ও সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জোনায়েদ আল হাবিব, শায়খুল হাদিস পরিষদের সভাপতি তাফাজ্জুল হক আজিজ, খেলাফত মজলিস বাংলাদেশের আমির মাওলানা ইসমাইল নূরপুরী, খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালউদ্দিন, সদ্য কারামুক্ত হেফাজত ইসলামের সাবেক সহ-সভাপতি মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন রাজি, হেফাজত ইসলামের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, বেফাক সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল হক, জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ আলী, হাটহাজারী মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, খেলাফত আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা মজিবুর রহমান হামিদী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মুসলীম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, সদ্য কারামুক্ত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, শায়খুল হাদিস পরিষদের সহ-সভাপতি মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন ও মাওলানা মুহাম্মাদুল্লাহ, পটিয়া মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম মাওলানা আবু তাহের নদভী, জামিয়াতুন নূর-উত্তরার প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, চট্টগ্রাম দারুল মাআরিফের নায়েবে মুহতামিম মাওলানা ফুরকানুল্লাহ খলীল, তাহাফ্ফুজে খতমে নবুওয়াত বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দীন রব্বানী, বরিশালের জামিয়া ইসলামিয়া মাহমুদিয়ার মুহতামিম মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব, যুব মজলিসের সভাপতি পরিষদ সদস্য আবুল হাসানাত জালালি, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা কেফায়েতুল্লাহ আযহারী, মানিকগঞ্জের পির হজরত মাওলানা সাঈদ নূর, ফরিদপুর জামিয়া কুরআনিয়া চরকমলপুর মাদ্রাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা হেলালুদ্দীন, বরিশাল জামিয়া ইসলামিয়া হোসাইনিয়ার শায়খুল হাদিস মাওলানা মোজাম্মেল হুসাইন, নারায়ণগঞ্জের মাওলানা আবু তাহের জিহাদী, কুমিল্লার মাওলানা মনিরুল ইসলাম, হবিগঞ্জের মাওলানা লোকমান সাদী, বি-বাড়িয়ার সদ্য কারামুক্ত মাওলানা ইয়াকুব উসমানী প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close