
রূপগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও এলাকাবাসীর ওপর হামলা এবং গুলিবর্ষণের ঘটনার মূলহোতা শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া ওরফে মোশা (৪৭) ও তার এক সহযোগী দেলোয়ার হোসেন (৫২) কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
পরে তাদের দেওয়া তথ্যে বৃহস্পতিবার (১ জুন) ভোরে রূপগঞ্জের নাওড়া এলাকা থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ম্যাগজিন ও গুলি উদ্ধার করা হয়। এরআগে বুধবার রাতে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে মঈন বলেন, মোশারফ স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। তার কোনো রাজনৈতিক দল নেই। তার পরিচয় তিনি সন্ত্রাসী।
জানাগেছে, গত ২৫ মে (বৃহস্পতিবার) বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকার চিনখলা গ্রামে মোশা বাহিনীর সঙ্গে গ্রামবাসীর দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।
এ সময় গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে যাওয়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপরও চড়াও হয় মোশা বাহিনী।
একপর্যায়ে পুলিশ মোশাকে গ্রেপ্তার করার পর তার সহযোগীরা হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ ও গ্রামবাসীসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর আক্রমণের অভিযোগে মোশারফ হোসেন মোশা ও তার বাহিনীর ২৪ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ৭০-৮০ জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় মামলা করেন থানার এসআই আমিনুর রহমান।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- আবু মিয়া, জায়েদা খাতুন, মারুফা খাতুন, আলো, আনোয়ার হোসেন ধলকু, বদিউজ্জামান বদি, সাখাওয়াত উল্লাহ, নীরব, স্বাধীন, নাজমুল, ওয়াসিম, রিফাত, রায়হান, দেলোয়ার, তাজেল, রুবেল, লিটন, আমির হামজা, জয়নাল, শাহাজালাল, নুর জাহান, সালেহা, আলী আজগর ও এমারত।
মামলার বাদী জানান, মোশারফ হোসেন মোশার হুকুমে ও নেতৃত্বে উল্লিখিত আসামিসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৭০-৮০ জন অস্ত্রসহ পুলিশের সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর অতর্কিত আক্রমণ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
বাদীর অভিযোগ, পিস্তল, ককটেল, লোহার রড, চাপাতি, রামদা নিয়ে গ্রামবাসীকে ঘেরাও করে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে মোশা বাহিনীর সদস্যরা। চাঁদার টাকা না পেয়ে গ্রামবাসীর ওপর তারা হামলা করে।
এই মামলার আসামিরা হলেন- আনোয়ার হোসেন ধলকু, আলী আজগর ভূঁইয়া, বদিউজ্জামান বদি, সাখাওয়াত উল্লাহ, নীরব, স্বাধীন, নাজমুল, আব্বাস, ওয়াসীম, রিফাত, রায়হান, দেলোয়ার, অনিক, সূজন, তাজেল, রুবেল, লিটন, আমির হামজা ওরফে ভূট্টু, জয়নাল, কবির, শাহাজাদা, শিহাব, আরমান, কামাল, আলী, সোবহান, নূর ইসলাম, নিলু, এমারত, আমির মিয়া, তৃপ্তি, নাসরিন, আলম তারা, নূর জাহান ও চুমকী।
এবিষয়ে রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান জানান, মোশারফ হোসেন মোশা ও তার সহযোগী দেলোয়ার হোসেনকে র্যাব সদস্যরা চার রাউন্ড গুলি ভর্তি ম্যাগজিন ও একটি পিস্তলসহ রূপগঞ্জ থানা পুলিশে সোপর্দ করেছেন। এই ঘটনায় র্যাবের পক্ষ থেকে একটি মামলা দেওয়া হয়েছে।
আসামী মোশারফ হোসেন মোশা ও তার সহযোগী দেলোয়ার হোসেনকে সবগুলো মামলার রেফারেন্স উল্লেখ করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে পাঠানো হয়েছে।