রূপগঞ্জে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও, টেকদাসেরদিয়া, তিনওলোপ, কালনী, বড়আমদিয়া, বৈলদা, হিরনাল মৌজার প্রায় চার শতাধিক তিন ফসলি কৃষি জমিতে অবৈধভাবে বালি ভরাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাইকোর্টের আদেশকে অমান্য করে মেরিন সিটি নামক আবাসন প্রকল্প কৃষকদের জমিতে জোড় পূর্বক বালি ভরাট করছে।
কৃষি জমি, সরকারী খাল, অর্পিত ও খাস জমি এবং গ্রামীন রাস্তাঘাট আবাসন প্রকল্পটি বালি ফেলে ভরাট করে ফেলছে। আবাসন প্রকল্পের বালি ভরাটের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা। প্রতিবাদ করলেই হামলা মামলাসহ নানা রকমভাবে কৃষকদের হয়রানী করা হচ্ছে। কৃষকরা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন নিবেদন করেও কোন সুফল পাচ্ছেনা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, রূপগঞ্জের দাউদপুর ইউনিয়নের ওই এলাকার বেশিরভাগ তিন ফসলি কৃষি জমি। কোন জমিতে শাক সবজি চাষ করা হয়েছে কোন জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে আাবার কোন জমিতে লাউও সিমের মাচা। ফলনও হয়েছে বেশ।
এরই মধ্যে আবাসন প্রকল্পের বালু ভরাট কাজ চলছে। কৃষকরা জানিয়েছে, জমির নামমাত্র ওয়ারিশ ক্রয় করে কিংবা কিছু অংশ জমি ক্রয় করে আশপাশের জমি রাতের আধারে অবৈধভাবে দিনে রাতে বালি ভরাট কাজ চলছে। প্রতিবাদ করার কারো সাহস নেই নিরবে নির্বৃত্তে কৃষকরা কাঁদছে।
এ ব্যাপারে কৃষকরা উপায়ন্ত না পেয়ে ২০২২ সালে ১২ জন কৃষক হাইকোর্টে রিট পিটিশন মাললা দায়ের করে। মামলা নং ৯৫৭৯/২০২২ইং। হাইকোর্ট ২০২৩ সালের ১২ই মার্চ মেরিন সিটির সকল কার্যক্রম স্থিতি অবস্থায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু মেরিন সিটি হাইকোর্টের দেয়া এই আদেশকে অমান্য করে কৃষকদের তিন ফসলি জমি জোড়পূর্বক ভরাট করছে।
দাউদপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক তমিজউদ্দিন রাজ বলেন, জমি না কিনেই কৃষকদের জমি ভরাট করা হচ্ছে। মেরিন সিটি স্থানীয় প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে। এখানে কৃষকরা দিনদিন অসহায় হয়ে পড়ছে।
কালনী এলাকার কৃষক সামসুদ্দিন ওরফে সূরুজ মিয়া বলেন, হিরনাল মৌজার তার ২৮ শতাংশ কৃষি জমি মেরিন সিটি অবৈধভাবে দখলে নিয়ে বালি ভরাট করছে। বালির সঙ্গে আসা পানিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
টেকদাসেরদিয়া গ্রামের কৃষক ইদ্রিস আলী ও লোকমান হোসেন বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রভাবশালী ও মেরিন সিটির নিয়োজিত সন্ত্রাসীরা আবাসন প্রকল্পের পক্ষ নিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
মেরিন সিটির প্রকল্প পরিচালক জহিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের কেনা জমিতেই বালি ভরাট করছি। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা আদেশের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেনা বলে ফোন কেটে দেন।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল হক বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের কিছু করার নেই। নির্দেশনা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।