আন্তর্জাতিকখেলাধুলাবিনোদন
বিশ্বকাপে ব্রাজিল ঝড়ে লন্ডভন্ড দক্ষিণ কোরিয়া

বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ক্যামেরুনের কাছে হেরেছিল ব্রাজিল। আর তাতেই নানান আলোচনার জন্ম দেয় সেলেকাওরা। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে মাত্র তিন গোল করা ব্রাজিলের গোলের অভাবও দৃষ্টি কেড়েছিল সমালোচকদের। তবে নক আউট পর্বে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে সব সমালোচনার জবাব দিল সেলেকাওরা। আর শেষ ষোলোতেই কোরিয়া দেখলো ব্রাজিলের রুদ্রমূর্তি।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলা কিছুটা ধীর করে নেইমাররা। আক্রমণের গতি কমিয়ে রক্ষণের দিকে মনযোগ দেওয়া ব্রাজিল দ্বিতীয়ার্ধে পারেনি আর গোল করতে। উল্টো ম্যাচের ৭৬ মিনিটে সং হো পাইকের বুলেট শটে দারুণ এক গোল করে দক্ষিণ কোরিয়া। শেষ পর্যন্ত ওই ৪-১ গোলের জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট কাটে ব্রাজিল।
গোলের পর আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে ব্রাজিল। আক্রমণের ফলও আসে মিনিট ছয়েক পর। ডি বক্সের বাঁ দিকের কোণায় রিচার্লিসনকে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় ব্রাজিল। স্পটকিক থেকে ঠান্ডা মাথায় ফিনিশ টেনে ব্রাজিলকে ২-০ গোলে এগিয়ে নেন নেইমার।
তবে এখানেই শেষ নয় ব্রাজিলের আক্রমণাত্মক খেলা। ২৯তম মিনিটে আসে ছন্দময় ব্রাজিলের আরও একটি গোল। ডি বক্সের সামনে থেকে কয়েকবার বল মাথার ওপর ড্রপ করে বাঁ দিকে থাকা মার্কুইনোসকে পাস দিয়ে ডি বক্সের ভেতর ঢুকে পড়েন রিচার্লিসন। এরপর থিয়াগো সিলভা দারুণ এক থ্রু বল দেন ডি বক্সে আর সেখানে বল পেয়ে জালে জড়ান রিচার্লিসন। ব্রাজিল এগিয়ে যায় ৩-০ গোলের ব্যবধানে।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে এসে আরও দুটি সহজ সুযোগ মিস করেন ব্রাজিল। এতেই প্রথমার্ধে ওই ৪-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় সেলেকাওরা।
বিরতি থেকে ফিরেই অন্য এক দক্ষিণ কোরিয়ার দেখা মেলে। বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুর্দান্ত আক্রমণ করতে থাকে কোরিয়া। গোলের দেখা পেতে পারতো কোরিয়া। ম্যাচের ৪৮তম মিনিটে দারুণ এক লং বল পান সন হিউং মিন। এরপর বল নিয়ে ডি বক্সে ঢুকে দারুণ এক শট নেন সন। কিন্তু তার শট দারুণভাবে ফিরিয়ে দেন অ্যালিসন বেকার। এরপর পাল্টা আক্রমণ করে ব্রাজিলও।
৫৪তম মিনিটে এসে রাফিনহা দারুণ এক আক্রমণ করেন ডান দিক দিয়ে। এরপর বল বাড়ান রিচার্লিসনের দিকে। ডি বক্সে জায়গা খুঁজে না পেয়ে রিচা বল পাস করেন ভিনিসিয়াসকে। সুযোগ পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন ভিনি। ৬২তম মিনিটে নেইমার জুনিয়র দারুণ এক গোলের সুযোগ তৈরি করে ডান দিকে রাফিনহাকে পাস দেন। কিন্তু শেষ টানতে পারেননি রাফিনহা।
দ্বিতীয়ার্ধের ৭৬তম মিনিটে এসে দারুণ এক গোল করে দক্ষিণ কোরিয়া। ডি বক্সের বাইরে থেকে সং হো পাইক বুলেট গতির শট নেন। অ্যালিসন বেকার লাফিয়ে পড়েও বলের নাগাল পাননি আর তাতেই লক্ষ্যভেদ কোরিয়ার। এরপর ম্যাচের শেষ দিকে এসে ডি বক্সের ভেতর দারুণ এক বল পেয়ে শট নিলেও জালে জড়াতে পারেননি দানি আলভেজ। এতেই আর গোলের দেখা পায়নি সেলেকাওরা।
শেষ পর্যন্ত প্রথমার্ধে করা ওই চার গোল আর দ্বিতীয়ার্ধে এক গোল হজম করে ৪-১ ব্যবধানের জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট কাটে ব্রাজিল।
এর আগে শেষ ষোলোর আরেক ম্যাচে জাপানকে টাইব্রেকারে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টারের টিকিট কাটে ক্রোয়েশিয়া। ৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় ব্রাজিল-ক্রোয়েশিয়া কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হবে।