Uncategorized

ড্রেজার নষ্ট, বর্ষা ঘিরে আতঙ্কে ফতুল্লার লালপুর-বাসী

বর্ষার ভারী বর্ষণে প্রতি বছর পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেন ফতুল্লার লালপুর পৌষাপুকুর এলাকার হাজার হাজার মানুষ। পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকায় এলাকার সড়কগুলোতে যানবাহনের পরিবর্তে চলে নৌকা। তবে গত বছর ড্রেজারের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশন হওয়ায় আশার আলো দেখেন লালপুরবাসী। কিন্তু ড্রেজার নষ্টের সংবাদে আবারো পানিবন্দীর শঙ্কায় রয়েছেন লালপুরবাসী। কারণ বর্ষা মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। এখন যে কোন দিন যে কোন সময় বৃস্টিপাত হবে। আর দ্রুত বৃষ্টির পানি নিস্কাসণ না হলে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ফতুল্লার পাকিস্থান খাদ এলাকায় ড্রেজারটি রাখা হয়েছে। তবে অযতেœ ডেজারের একাধিক অংশ ভঙ্গুরে পরিণত হয়েছে। এদিকে লালপুরের পৌষারপুকুর পাড়ে মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা চলমান রয়েছে। পানি সরাতে  নতুন ড্রেন তৈরী করা হয়েছে। কিন্তু ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত করে জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে না বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

জানা যায়, সৃষ্ট জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে লালপুরে শক্তিশালী ৩টি মোটর বসানো হয়। কিন্তু দৈনিক ১৮ ঘণ্টা মোটর চালিয়েও পানি পুরোপুরি অপসারণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। একাধিক সমস্যার কারণে প্রায়ই পাম্প বন্ধ থাকত। পরবর্তীতে ২০২১ সালে জলাবদ্ধতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হলে ফতুল্লার আওয়ামীলীগ নেতারা পানির সমস্যার সমাধানে ড্রেজার চালু করেন। দীর্ঘদিনের এই সমস্যা নিরসনে প্রায় ৯ লাখ টাকা ব্যয় করে ড্রেজার দিয়ে জলাবদ্ধতার অস্থায়ী সমাধান করা হয়। প্রায় সারাদিন মটর চালিয়েও যে সমাধান হয়নি ড্রেজারের মাধ্যমে তিনদিনে পুরো এলাকার পানি সরিয়ে নেওয়া হয়।

ড্রেজারটি জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষার একমাত্র হাতিয়ার হলেও ড্রেজারের বর্তমান বেহাল দশা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসী। লালপুরের বাসিন্দা তারিক হোসেন বলেন, বর্ষাকাল মানেই তাদের জন্য পানিবন্দি হওয়া। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তা ঘাট ডুবে বাড়ি ঘরেও পানি প্রবেশ করে। কিন্তু গত বছর ড্রেজার চালু করার তিনদিনের ভিতর পানি সড়ে রাস্তা শুকনো হয়ে পড়ে। পানির সমস্যার সমাধান হয়েছে এইভেবে একটু স্বস্তি পেয়েছিলাম। কিন্তু ড্রেজার নষ্ট শুনেছি। ড্রেজার না চললে আবারো পানিতে ভাসবে লালপুর।

একই এলাকার ফার্মেসী হেলাল উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তির শিকার হলেও জনপ্রতিনিধিরা জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না। গত বছর একটা ড্রেজার দিয়ে পানি সড়াইছে। এ বছর সেটা আর চলবে কি না জানি না। ড্রেজার না চললে মোটর দিয়ে কোন কাজ হয় না। বিদ্যুৎ বিলের সমস্যাহর নানা কারণে মোটর কম চলে। এমনে চললে পানি সরব না, আমাদের পানির কষ্ট চলবেই।

এই বিষয়ে ফতুল্লার ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার কাজী মঈন উদ্দিন বলেন, লালপুর এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য গত বছর সাংসদ শামীম ওসমানের সহয়তায় ও একাধিক ডোনার থেকে টাকা সংগ্রহ করে ড্রেজার ক্রয় করা হয়। ড্রেজারটি বর্তমানে বাংলাদেশ খাদ এলাকায় পাম্প হাউজের পাশে রয়েছে। ড্রেজার চালানোর জন্য বৃহৎ আর্থিক বরাদ্দের প্রয়োজন। কারণ ড্রেজারের ব্যাটারি চুরি হয়ে গেছে। ড্রেজারের কিছু পার্টস নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো ঠিক করতে হবে। ড্রেজার রাখার জন্য একটি ঘরের প্রয়োজন। ড্রেজারের জন্য সরকারিভাবে কোন বরাদ্দ নেই। এছাড়া পাম্প হাউজের অনেক টাকার বিদ্যুৎ বিল জমে আছে। যদি বৃষ্টির পানি বেড়ে যায় এবং অর্থের ব্যবস্থা করতে পারলে ড্রেজার চালাবো। আমি ফতুল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সাথে পরামর্শ করেছিলাম। ওনি বলেছেন, যেভাবে আছে চলুক। দেখা যাক কি হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close