জাতীয়লেখা-পড়া

দু’বেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাওয়া সেই আলমগীর এখন কেমন আছেন?

বগুড়ায় টিউশনি করে ভালোই চলছিল আলমগীর কবিরের। তবে করোনা মহামারি তার টিউশনির আয়ে বড় ধাক্কা দেয়। এখন একটি টিউশনি আছে। কিন্তু তাতে চলে না। চাকরির পরীক্ষা দিতে প্রায়ই ঢাকায় আসতে হয়। এতে যে খরচ লাগে তা নিজেরই জোগাড় করতে হয়। এমতাবস্থায় তিনি আরও টিউশনির জন্য সম্প্রতি একটি বিজ্ঞাপন দেয়ালে দেয়ালে টাঙান। যাতে লেখা আছে, ‌‘শুধু দু’বেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই (সকাল ও দুপুর)।’

এই বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর তিনি কি টিউশনি পেয়েছেন?  আজ রবিবার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে আলমগীর কবির বলছিলেন, ‘না, আমি এখনো নতুন টিউশনি পাইনি। আশা করছি, পেয়ে যাব।’

তার চাকরির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারি চাকরির জন্য চেষ্টা করছি। কয়েকটার ভাইভা দিয়েছি। একটা সময় হয়ে যাবে।’

বগুড়ার জহুরুলনগরের বাসিন্দা আলমগীর কবিরের বাবার নাম মো. কফিল উদ্দিন ও মায়ের নাম আম্বিয়া বেগম। তার বৃদ্ধ বাবা এখন অনেকটাই দুর্বল। এখন কোনো কিছু করেন না।

তারা ৫ ভাই-বোন। তিন বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। তার বড় ভাইয়ের নাম রুহুল আমিন। তিনি শারীরক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট কবির।

আলমগীর কবির জানান, বগুড়া শহরের জহুরুল নগর এলাকায় ওই বিজ্ঞাপন টাঙিয়ে তিনি এখন বিব্রত। কারণ, বিজ্ঞাপনটি ভাইরাল হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে বিরূপ মন্তব্য করছেন। তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞাপনটি আমি পজিটিভলি দিয়েছি। সরকারকে ছোট করার জন্য নয়।’

৩২ বছর বয়সী আলমগীর কবির বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন। তিনি এখন বগুড়া শহরের জহুরুলগর একতলা মসজিদ এলাকার পাশের একটি বাড়িতে থাকেন। এখানে বিনামূল্যেই থাকেন তিনি।

একটি টিউশনিতে পান ১৫শ’ টাকা। এতে সবকিছু মিলিয়ে নিজের জন্য দিনে তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা করতে কষ্ট হচ্ছিল তার। তাই বাসার আশপাশে ভাতের বিনিময়ে পড়ানোর জন্য ওই বিজ্ঞাপন দেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close