জাতীয়নারায়ণগঞ্জনির্বাচনী হালচালরাজনীতি

নির্বাচন কমিশন শুরু থেকেই আমাকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেয়নি : তৈমূর

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী (হাতি প্রতীক) অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রী নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক সাহেব বলেছেন, ঘুঘু দেখেছেন ঘুঘুর ফাঁদ দেখেননি, ২৪ ঘন্টার পর টের পাবেন। তার এই বক্তব্যের পর ২৪ ঘন্টা না যেতেই আপনারা আমাকে ফাঁদ দেখানো শুরু করেছেন।

মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) সকালে ১২নং ওয়ার্ডের মিশনপাড়ায় তার প্রধান নির্বাচনী ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, তারা সর্বক্ষণ বলে থাকে বিএনপি নির্বাচনে আসে না, ভয় পায়। এখন আপনারা দেখেন রাজনৈতিক দলগুলো কেন নির্বাচন বয়কট করে। কেন তারা আসতে চায় না এর জলজ্যান্ত প্রতিচ্ছবি আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। জনগণের রায়ই চূড়ান্ত রায়।

তিনি বলেন, তারা যে ঘুঘু দেখানোর কথা বলেছে সে ঘুঘু যদি দেখানো হয় তাহলে আমি মনে করি এখানে সবচেয়ে বেশি ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। হয়ত তিনি বিষয়টা জানেন না বা তার নজরের বাইরে গিয়ে অতি উৎসাহীদের প্ররোচনায় এ ধরনের জুলুম অত্যাচার করা হচ্ছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি অবশ্যই আপনি নারায়ণগঞ্জের জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবেন।

তৈমূর আরো বলেন, এই নির্বাচনে যদি আপনি পুলিশ দিয়ে এভাবে হয়রানি করেন তাহলে আপনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আমি মনে করি। সরকারের অনেক বড় বড় কর্মকর্তাদের বিলেত যাওয়ার ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এতে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আপনার নিজের ভাবমূর্তির প্রশ্নের বিষয়টা বিবেচনায় রাখবেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে তৈমূর বলেন, একজন সম্মানিত মেহমান বলেছেন তৈমূরকে মাঠে নামতে দেয়া হবে না। আরেকজন সম্মানিত নেতা অতি দায়িত্বশীল। তিনি বলেছেন, তৈমূর ঘুঘু দেখেছে ফাঁদ দেখেনি। তিনি ২৪ ঘণ্টায় আমাকে রেজাল্ট দেখানোর কথা বলেছেন। আপনারা কী চান না নারায়ণগঞ্জে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হোক?

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন শুরু থেকেই আমাকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেয়নি। ১৬ ডিসেম্বর ২০ হাজার নেতাকর্মীর একটা বিজয় র‌্যালিতে আমার সভাপতিত্ব করার কথা ছিল। নির্বাচন কমিশনের অনুরোধে আমি সে সমাবেশে যাইনি। কিন্তু নির্বাচন কমিশনে বার বার অভিযোগের পরও সরকারি দল এমপি ও বড় বড় নেতাদের এনে উসকানিমূলক ও ভয়ভীতি ছড়ানোর মত কথাবার্তা বলছে।

তৈমূর বলেন, আমি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি আমার ওয়ার্ড বিএনপির নেতা মোশাররফ হোসেন জানিয়েছে তার বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি করেছে। মাজহারুল ইসলাম জোসেফের বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে, তাকে গ্রেফতারের আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। তিনি যুবদলের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছেন। জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি আমার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক। তার হাতে দায়িত্ব ছিল এজেন্ট ও নির্বাচন সংক্রান্ত কাজ পরিচালনা ও সহযোগিতা করা। কালকে যখন আমি জানতে পারলাম রবিকে গ্রেফতার করা হয়েছে তৎক্ষণাৎ এসপি অফিসে যাই। তিনি অফিসে নেই। টেলিফোনে বললাম রবিকে গ্রেফতার করা হয়েছে কেন, তারা বললেন তার নামে ওয়ারেন্ট আছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার পর থেকে রবি প্রকাশ্যে আমার সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারনায় রয়েছেন। ওয়ান্টে থাকলে তো তখনই তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারতো। এখন কেন করলো?

স্বতন্ত্র এই প্রার্থী বলেন, বন্দর থেকে ধামগড় ইউনিয়নের কামাল হোসেন চেয়ারম্যান আমাকে সমর্থন করায় তার বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে। তার কেয়ারটেকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এভাবেই আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে। থানায় যখন আমরা খোঁজ নিই তারা বলে আমরা কিছু জানি না। এসপি সাহেবকে বলতে চাই আপনি যদি এর ব্যবস্থা না নেন তাহলে আপনার অফিসের সামনে বসে পড়া ছাড়া আমার অন্য কোন উপায় থাকবে না। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন. শত শত লোকজন নিয়ে এসপির অফিসের সামনে বসে পড়বো। এবং সেখানে বসেই নির্বাচন পরিচালনা করবো। সংবাদ সম্মেলন শেষে তৈমূর আলম ১২ নং ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close