জাতীয়নারায়ণগঞ্জফতুল্লা
ফতুল্লায় ট্রলার ডুবির ঘটনায় লঞ্চের মাস্টারসহ ৩ জনের রিমান্ড আবেদন

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার ধর্মগঞ্জ চতলার মাঠ এলাকায় লঞ্চের ধাক্কায় নদীতে ট্রলার ডুবির ঘটনায় -নিরাপত্তা বিভাগ (বিআইডব্লিউটিএ)’র উপ-পরিচালক কম্পিউটার (ভারপ্রাপ্ত) বাবু লাল বৈদ্য বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
বি,আই,ডব্লিউটি’র কর্মকর্তাদের সহায়তায় বক্তাবলী ফাড়ির নৌপুলিশ রাতেই অভিযুক্ত এম,ডি, ফারহান-৬ নামক লঞ্চের মাস্টার কামরুল হাসান (৪০), ইনচার্জ ড্রাইভার মোঃ জসিম উদ্দিন ভুইয়া (৪০) ও সুকানি মোঃ জসিম মোল্লা (৩০) কে গ্রেফতার করে ফতুল্লা মডেল থানায় সোপর্দ করে।
গ্রেফতারকৃতদের ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বক্তাবলীর নৌ ফাড়ির উপপরিদর্শক আঃমতিন।
এদিকে ঘটনার ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ কাউকে এখনো উদ্ধার করতে পারেনি। তবে উদ্ধার অভিযান এখনো অব্যাহত রয়ছে।নিখোঁজের স্বজনেরা তাদের স্বজনদের সন্ধান পেতে নদীর তীরে অপেক্ষায় রয়েছে।
মামলায় উল্লেখ্য করা হয়েছে যে, বুধবার সকাল সাড়ে ৮ আটটার দিকে ফতুল্লা ধর্মগঞ্জ খেয়াঘাটের ৫০০ গজ পশ্চিমে ধলেশ্বরী নদীতে ঘন কুয়াশার মধ্যে ৪০/৫০ জন যাত্রীসহ খেয়া পাড়াপারের একটি ট্রলার ধর্মগঞ্জ খেয়াঘাটের পশ্চিম তীর হইতে ধর্মগঞ্জ ঘাটে আসার সময় ভোলা জেলার বেতুয়া (চরফ্যাশন) হইতে ছেড়ে আসা ঢাকা অভিমুখী এম.ভি ফারহান-৬ নামীয় একটি লঞ্চ অত্যন্ত দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে আসিয়া স্বজোরে ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে যাত্রীসহ ট্রলারটি ডুবিয়া যায়। ইহাতে ট্রলারে থাকা যাত্রী মারাত্মক ও সাধারণ জখম প্রাপ্ত হয়। উক্ত দূর্ঘটনার সংবাদ পাইয়া বক্তাবলী নৌ-পুলিশ টিম, ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড, নৌ বাহীনি ও বিআইডব্লিউটিএ একত্রে যৌথভাবে উদ্ধার কাজে অংশগ্রহণ করিয়া যাত্রীদের উদ্ধার করে এবং আহত যাত্রীদেরকে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। তবে ৮ জন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে । নিখোঁজ যাত্রী ও ট্রলার উদ্ধার কাজ অব্যাহত আছে। প্ ঘন কুয়াশার সময় যাত্রীবাহী নৌ-যান চলাচল করার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও নৌ যানটি চলাচল করার কারণে যাত্রীবাহি ট্রলারটি দূর্ঘটনা কবলিত হয়। লঞ্চের মাস্টার, ড্রাইভার এবং সুকানীর খামখেয়ালীপনা ও দায়িত্ব অবহেলার কারনেই এই দূঘর্টনা ঘটে বলে মামলায় উল্লেখ্য করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী মতিন জানান,বি,আই ডব্লিউটির কর্মকর্তা বাবু লাল বৈদ্য বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। তাদের সহায়তায় অভিযুক্ত
এম,ডি, ফারহান-৬ নামক লঞ্চের মাস্টার কামরুল হাসান, ইনচার্জ ড্রাইভার মোঃ জসিম উদ্দিন ভুইয়া ও সুকানি মোঃ জসিম মোল্লা (৩০) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এখনো পর্যন্ত নিখোঁজ কাউকে উদ্ধার করতে পারেনি। এমনকি ডুবে যাওয়া ট্রলারটির ও সন্ধান পাওয়া যায়নি।গ্রেফতারকৃতদের ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
যাত্রীবাহী লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া ট্রলারের যাত্রীদের মধ্যে এখনো পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন বক্তাবলী, এলাকার কলেজ শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন, নেয়ামতপুর এলাকার আব্দুল্লাহ, চর মধ্য নগরের জিয়াসমিন আক্তার ও তার মেয়ে তাসমিন আক্তার, ছেলে তামিম এবং দুই বছরের ছোট্ট শিশু তাসফিয়া। তাছাড়াও এ দূর্ঘটনায় উত্তর গোপাল নগর এলাকার মোতালেব মিয়া ও একই এলাকার মসজিদের মোয়াজ্জিন আব্দুল্লাহ ও ৬৫ বছর বয়সী হকার শামসুদ্দিন নিখোঁজ রয়েছেন।
উল্লেখ্য যেফতুল্লার ধর্মগঞ্জস্থ চতলার মাঠ গুদারাঘাট এলাকায় নদী পারাপারের সময় এম,ডি, ফারহান-৬ নামক লঞ্চের ধাক্কায় অন্তত ৪০ জন যাত্রী নিয়ে একটি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এঘটনায় একই পরিবারের ৪জনসহ অন্তত ৯জন নিখোঁজ রয়েছে। অন্যরা সাতরিয়ে তীরে উঠেছে। বুধবার সকাল ৮ টায় ফতুল্লার ধর্মগঞ্জ ঘাটের কাছে মাঝ নদীতে এঘটনা ঘটে।
নিখোঁজরা হলেন-মাদ্রাসা ছাত্র আব্দুল্লাহ (২২), মোতালেব (৪২), কলেজ ছাত্র সাব্বির (১৮), চরমধ্যনগর এলাকার একই পরিবারের সোহেল মিয়ার স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৩০) এবং তার দুই মেয়ে তাসমিন আক্তার(২০), দেড় বছরের তাসফিয়া আক্তার ও এক ছেলে মাদ্রাসা ছাত্র তামিম(৮), উত্তর গোপাল নগর মসজিদের মুয়াজ্জিন আবদুল্লাহ ও আওলাদ হোসেন(৩২)।